somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশে উচ্চশিক্ষাঃ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়...

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা অনেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে আগ্রহী। কিন্তু আগ্রহের পাশাপাশি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরী। সেসব বিষয় নিয়েই আমাদের এ আয়োজন। আশা করি অনেকের কাজে আসবে।

আপডেটেট থাকুনঃ একসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সচ্ছলতাই মূখ্য বিষয় ছিল। কেবল উচ্চবিত্তের সন্তানেরাই এ নিয়ে ভাবতো। কিন্তু এখন কেবল অর্থ থাকলেই সঠিক লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব নয়। বিভিন্ন দেশের শিক্ষার মান, সুযোগ সুবিধা, চাহিদা, ভবিষ্যৎ প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয় প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই আপডেটেট থাকা জরুরী। উদাহরনস্বরূপ বলা যায়, আপনি হয়ত কোন বিশ্ববিদ্যালেয় গতবছরের চাহিদা অনুযায়ী একটা আবেদন করলেন, কিন্তু এবছর তা পরিবর্তিত হয়ে গেল। আপনি সুযোগ হারাতে পারেন। কিংবা গতবছর আপনার কাঙ্খিত বিষয়ে স্কলারশীপ ছিল না, যা এবছর আছে। না জানার কারণে আপনি সুযোগ হারাতে পারেন। তাই নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন অনলাইনে, চোখ রাখুন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।

নিজেকে প্রস্তুত করুনঃ বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নির্ধারিত চাহিদা আছে। তবে তুলনামূলক ভাবে কিছু মৌলিক চাহিদা থাকে। যেমন, ইংরেজি ভাষাজ্ঞান, জিমেট, স্যাট, জিআরই ইত্যাদি। আপনি যদি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছাতে চান, তবে এসব কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোর্স করে রাখুন। কাজে আসবে। মনে রাখবেন, যা আপনি অর্জন করবেন তা কখনো বৃথা যাবে না। অনেকে মনে করে, বাইরে না গেলে IELTS বা TOEFL করে লাভ কি? কিন্তু এসব জ্ঞান কিন্তু আপনার দেশেও চাকুরী বা ব্যক্তিগত জীবনে উপকারে আসবে। তাই নিজেকে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুত রাখুন। আরেকটা বিষয় হলো, কোন বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনার অর্জিত কোন কোর্স না চেয়েও থাকে; তথাপি আপনি CV-তে উল্লেখ করলে প্রতিযোগীতায় প্রায়োরিটি পাবেন।

স্পেসিফিক হোনঃ একটা বিষয় আমরা প্রায়ই খেয়াল করি, অনেকেই বলেন আমি বিদেশ আসতে চাই বা ইউরোপ আসতে চাই। তারা কোন দেশে আসবেন এটাও কনফার্ম না, বিষয় তো দূরের কথা। এটা হলো অনেকটা আমাদের ছোটবেলার বায়নার মত। ওর আছে আমারো লাগবে। ও গেছে আমিও যাব। কিন্তু বিদেশে উচ্চশিক্ষা কোন বায়না নয়, এটা মেধা দিয়ে আপনাকে অর্জন করে নিতে হবে। তাই প্রথমেই লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আপনার বয়স, উদ্দেশ্য বা লাভ এসব বিষয় বিবেচনা করুন। উদাহরণস্বরূপ, মেধা বা অর্থ থাকার পরেও আপনার পারিবারিক অবস্থানের কারণে আপনার বাইরে আসা হয়তো যুক্তিসঙ্গত নাও হতে পারে। তাই সব বিবেচনা করে কোমর বেঁধে নামুন। সফলতা আসবেই।

সময়জ্ঞানঃ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি ও স্কলারশীপের সময়সীমা নির্দিষ্ট যা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবসময় কিছু জিনিষ প্রস্তুত রাখুন। CV, Motivation Letter, Recommendation Letter ইত্যাদি। অনেক সময় আবেদন করতে করতেই সময় ফুরিয়ে যায়। আর তাছাড়া পোষ্টে কাগজপত্র পাঠাতেও সময় ও অর্থের প্রয়োজন। তাই সময়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন।

বাজেট/অর্থনৈতিক বিষয়ঃ আপনি যদি সত্যিকার আগ্রহী হোন তবে বাজেট করুন। আপনার পক্ষে কতটুকু ব্যয় করা সম্ভব তা জেনে নিন। সে অনুযায়ী আবেদন করুন। কারণ, এসব বিষয় না ভেবে আবেদন করলে পরে আর্থিক সমস্যার কারণে তা ভেস্তে যায় এবং আবেদন বা অন্যান্য খরচগুলো অপচয়ে পরিনত হয়। আবার অনেকে দেখা যায়, বড় বড় বাজেট করেন কিন্তু আবেদন করতে পোষ্ট খরচ দেখে ঘাবড়ে যান। তাই বলি, বাজেট করুন এবং সে অনুযায়ী সামনে আগান। এলোমেলো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে-বলাই বাহুল্য।

পড়ুন, পড়ার অভ্যেস করুনঃ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। অনেকে কেবল প্রশ্ন করেন, ভাই, বিদেশে কিভাবে যাব? কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব? সুযোগ সুবিধা কেমন? ভবিষ্যত কেমন? ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তাদের যখন কোন তথ্য দেয়া হয় তারা পড়েন না। আমরা পেজে অনেক লিংক পেষ্ট করি যাতে সব তথ্যই পাওয়া যায়। কিন্তু একই প্রশ্ন বারবার করা হয়- লিংকগুলো অনেকে দেখেনই না। তাই পড়ার অভ্যেস করুন। যতটুকু সময় অনলাইনে থাকেন, তার কিছু সময় বিভিন্ন দেশের শিক্ষাসাইট গুলো ভিজিট করুন। আমাদের পেজের বিভিন্ন সময় পোষ্টকৃত লিংকগুলো পড়ুন। এতে আপনি তো জ্ঞাত হবেনই, আবার অন্যকেও পরামর্শ দিতে পারবেন।

বিভ্রান্ত হবেন নাঃ আপনি যদি কনফিডেন্ট হোন, কেউ আপনাকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। তাই কনফিডেন্স খুবই জরুরী। একটা বিষয় মনে রাখবেন, টাকা দিয়ে কখনো ভিসা কেনা যায় না। আপনার যোগ্যতা থাকলেই কেবল আপনি এডমিশন এবং ভিসা পাবেন। তাই প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হবেন না। অনেকে এডমিশন হওয়ার পরেও আত্ববিশ্বাসের অভাবে ভিসা পেতে ব্যার্থ হন। একটা সাধারন জ্ঞান হলো, একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি আপনাকে ছাত্র হিসাবে গ্রহন করে, তবে এমবেসী ভিসা দিতে বাধ্য; যদি না কোন মেজর ত্রুটি থাকে। তাই আত্ববিশ্বাসের সাথে অগ্রসর হোন।

সর্বোপরি, চেষ্টা করুন, সফলতা আসবে। মনে রাখবেন, এটা আপনার জীবন এবং এর লক্ষ্য আপনাকেই নির্ধারন করতে হবে। আপনাদের সবারই সফলতা কামনা করছি।
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×