-আমরা যেদিন মৃত্যু রহস্যটা জেনে যাবো সেদিন ইশ্বর তার আবেদন হারাবে।
আর্থার হোপে এই পর্যায়ে আমার দিকে তাঁকালো। হয়তো আমার মনোভাব বোঝার চেষ্টা করলেন তিনি।
-কিন্তু একজন মৃত ব্যক্তিকে এটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আপনি কি বোঝাতে চাইলেন?
-আমি প্রমাণ করার চেষ্টা করছি মানুষ মরে গেলেই সে মৃত হয়ে যায়না!
-তারমানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, আমি এখনো মৃত হয়ে উঠতে পারিনি!
-হ্যাঁ। তোমার আরো সাধনা প্রয়োজন! না হলে মৃত্যু রহস্য তোমার কাছে অধরাই থেকে যাবে।
-আপনি কি নিজেকে মৃত মনে করছেন না মিঃ হোপে?
-অবশ্যই না। তুমি তিন শতক ধরে দুনিয়া ত্যাগ করেছো। একবারও কি ইশ্বরের দেখা পেয়েছো? অথবা তোমার পূর্বের স্মৃতিকে মুছে ফেলতে পেরেছো?
-না। তবে আমি আশাবাদী। একদিন সব ভুলে যাবো। ইশ্বর ধরা দেবেন।
-বোকা তুমি সান্তেস পাল।
-আপনি বোকা নন?
-তুমি কি অবাক হবে? যদি জানতে পারো মৃত্যু রহস্যটা জেনে গিয়েছি আমি?
-কিছুটা। তবে সে আপনি পারবেন না! প্রকৃতি আপনাকে জানতে দেবে না। দিলেও স্থায়ী হতে দেবে না আপনার মস্তিষ্কে।
-কি আহাম্মক!! তুমি কি বুঝতে পারছো না তুমি নিজেই ইশ্বর?
-'তাহলে আপনি কে?
-আমি তো তুমি!
-আমার সন্তান? প্রতিবেশী? শত্রু? যদু? মদু? আমার স্ত্রী?
-সেও তুমি!
-কি ভয়ংকর! তাহলে তো আমি প্রতি রাতে আমার সাথেই সঙ্গমে লিপ্ত হচ্ছি! আমার বুকে আমিই ছুরি ও চাবুক চালাচ্ছি উলঙ্গভাবে! আমি নিজেকে হত্যা করছি নির্বিচারে! এর শেষ কোথায় হপে?'
-শেষ নেই!
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন আর্থার হোপে।
আমি তার চোখের দিকে তাঁকালাম। তার চোখে তখন আমাজনের বিষন্নতা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আরেক চোখে বিলুপ্ত ডাইনোসরের দল উদোম নৃত্য করছিল। আমি বললাম,
-আর্থার চলো পালাই!
প্রতিউত্তরে সে মুচকি হাসলো। যার অর্থ হতে পারে,
-পালানো সম্ভব নয়!
আবার এর ভিন্নার্থও হতে পারে।
-আমরা আসলে পালিয়েই এসেছি এখানে!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:০১