somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আধ হালি গল্প-১২

০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। একজন পুলিশ

ম্যাচের বাক্সে ঘুমুচ্ছে একজন পুলিশ। পুলিশটাকে কেউ চেনে না। কিন্তু পুলিশটা ঘুমানোর আগে একটা ফতোয়া রেখে গেছেন আমাদের উদ্দেশ্যে।
-ঘুম থেকে ওঠে যদি শুনি আমাকে কেউ চেনেনা, তাহলে সব কটাকে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো।

*
মাঝ রাতের মধ্যে আমরা শহরের সমস্ত কুকুর কুড়িয়ে রেঁধে খেয়ে ফেললাম, যাতে করে কুকুরগুলো আমাদের খেতে না পারে।

*
সকালবেলা পুলিশটার ঘুম ভাঙ্গলে আমাদের প্রশ্ন করলেন,
-আমাকে কে কে চেনে না?
আমাদের মধ্য থেকে একজন উত্তর দিল,
-স্যার আমরা কেউ আপনাকে চিনি না।
-তাহলে এবার তোদের কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো।
-স্যার শহরে আর একটা কুকুরও অবশিষ্ট নেই!
আমরা সমস্বরে চেঁচিয়ে জানালাম।

পুলিশটা আমাদের দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে রইলেন। তারপর নিজেই একটা কুকুর হয়ে গেলেন।


২। আধজোড়া জুতা ও আসন্নতম দুর্যোগ

সমস্ত কবিদের উপর একবার ভালো করে চোখ বুলিয়ে নিলাম। তারপর শুরু করলাম,
-আপনাদের বেশিক্ষণ বসিয়ে রাখবো না। আমি এখনি ঘোষণা করবো, কে বা কারা হলেন আজকের প্রতিযোগিতায় সৌভাগ্যবান বিজয়ী। আপনারা নিশ্চয় অবগত রয়েছেন, প্রথম পুরষ্কার-একটি গলাকাটা শূকর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে একটি দুধেল গরু এবং একটি নেংটি ইঁদুর। আপনারা প্রস্তুত?

দেখলাম কবিদের চোখ মুখ হঠাৎ বিষন্ন হয়ে উঠলো। যেন তারা কখনো শূকর খায়না, গরু স্তনে হাত রাখেনা কখনো কিংবা কখনো ইঁদুরের নেংটি খোলেনা। কেউ একজন চিৎকার বলে উঠলেন,
-বাঞ্চোত! ডেকে এনে এরকম ফাইযলামির কি মানে?
একে একে সবাই বিষন্নতা কাটিয়ে পায়ের জুতা হাতে তুলে নিলেন। আমি বলতে চাইলাম,
-ভাইসব। আপনারা জুতা নিজ হাতে তুলে নেবেন না। পরিচারিকাদের জন্য অপেক্ষা করুন।
কিন্তু আমার কন্ঠ রোধ হয়ে এলো জুতার স্তুপের নিচে। আমি গলা উচিয়ে দেখলাম, কবিদের ক্রোধ তখনো কমেনি। তারা বিল্ডিংটাকে ধরে ফেলে দেবার চেষ্টা করছেন কয়েকজন মিলে। আমি আবারো বলতে চাইলাম,
-এটা বিপদজনক। নিজেরাও মরবেন।
এইবার কাজ হলো। তারা চলে যেতে লাগলেন। যাবার আগে গালি দিতে ভুললেন না, শালা নিখাদ শুয়োরের বাচ্চা একটা!

একজন কবি তখনো বসে ছিলেন। যার পায়ে অবশিষ্ট ছিল একমাত্র ছিদ্রযুক্ত আধজোড়া জুতা। আমাকে দেখে জুতাটা খুলে হাতে নিয়ে তার ছিদ্রপথে চোখ রেখে বললেন,
-একবার ছুঁড়বো ভেবেছিলাম কিন্তু মায়া হলো। তাছাড়া এই একটাই জুতা আমার যার ছিদ্রপথে তাকালে পৃথিবীর আসন্নতম দুর্যোগ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
-কই দেখি, দেখি!
আমি বিড়ালের মত লেজ নাড়িয়ে জুতাটার ছিদ্রপথে ঠেলে দিলাম দুটি চোখ।

দেখলাম, একজন কবি একটি জুতার একমাত্র ছিদ্রপথে চোখ রেখে আমাকে দেখছেন। যেন আমিই পৃথিবীর সেই আসন্নতম দূর্যোগ।


ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১১
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×