somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার BEST FRIEND !!!

১৮ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সবাইকে একটা গল্প শোনাবো। বাইরে ঠান্ডা ঠান্ডা বৃষ্টি ! গল্প শোনার জন্য অসাধারণ আবহাওয়া! তো শোনো সবাই দিয়ে মন...

এক দেশে ছিলাম এক "আমি"। বেশ কয়েকমাস আগে দুপুরে ঘুমানোর আয়োজন করছি ( আমি সবসময়-ই ঘুমাতে খুব-ই পছন্দ করি) ...এমন সময় আমার সেলফোনে একটা অজানা নং থেকে ফোন আসলো। আমি বিরক্ত হলাম বেশ ! কেন যে ঘুমের সময় এই ঝামেলা ! আর প্র্যাঙ্ক কলার্‌স এত বেড়ে গিয়েছে যে অজানা নং দেখলেই এখন মেজাজটা খারাপ হয়ে যায়! তো ঘুম-ঘুম গলায় "হ্যালো" বলতে-ই ওপাশ থেকে বেশ মায়াময় একদম-ই ৪-৫ বছরের একটা ছেলে বল্লো...
- তুমি কে ?
আমি - আগে বলো তুমি কে ?
- না! আগে আমি তোমাকে বলেছি !
আমি - তুমি জানো না তুমি কাকে ফোন করেছো ?
- না! আমিতো তোমার নম্বরটা বাবা-র phonebook থেকে পেয়েছি!
আমি - তাই! বাবার নাম কি তোমার ?
তারপর সে নাম বললো। কিন্তু আমি সে নামের কাউকেই চিনি না। আমি বললাম...
- মা কোথায় তোমার ?
- মাম্মা অফিসের কাজ করে । ও স্টাডিরুম এ।
-তুমি কোথায় পড় ?
-সানিডেলস্! তুমি ?
এর মধ্য তার মা এসে অবাক হয়ে বল্‌লো; "বাবা! তুমি কার সাথে কথা বলছো ?
তার উত্তর..." মাম্মা! আমি আমার friend-এর সাথে কথা বলি"
আমি বেশ মজা পেলাম !
ওর মা আমার থেকে সব শুনে বেশ অপরাধী গলায় বল্‌লো ... " আমি খুব স্যরি! আমার ছেলে phonebook থেকে কয়েকটা নম্বর দেখে মিলিয়ে আপনাকে ফোন দিয়েছে। বিরক্ত করলে আমি আবারো স্যরি।"
আমি বল্লাম ." নাহ ! আমি খুব মজা পেয়েছি ! "
তারপর পিচ্চি-র নাম জানলাম। ওর মা-বাবা দু'জন-ই বেশ নামকরা দু'টা মাল্টিন্যাশনাল -এ আছেন। ছেলেটা খুব একা। আমার খুব-ই মায়া লাগলো! এর মধ্য পিচ্চি (আদ্রিয়ান) চিৎকার শুরু করে দিয়েছে... " মাম্মা ও তো আমার friend ! দাও আমি কথা বলবো !" আমি ওর মা-কে বল্লাম আমার নম্বরটা রেখে দিতে, আমি ওর সাথে কথা বলবো। তারপর আমার পরিচয়-ও দিলাম কিছুটা।

এরপর থেকে প্রায়- ই কথা হতো ওর সাথে। সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ বার ! কবে কি হলো, স্কুলে কবে ফেস্টিভল্‌, ওর বন্ধু-বান্ধব কে কে, ওর কাকে পছন্দ, কি পছন্দ, কেন পছন্দ সব-ই জানা হয়ে গেলো ! আমার নামটাকেও খুব মজা করে ছোট করে নিয়েছে সে এর-ই মধ্য। খুব মজা পেতাম !
একদিন সে বল্লো ...মিস্‌ আমাকে বলেছে..."who is your best friend?"...আমি কিন্তু তোমার নাম বলেছি ..তোমার মিস্ কখনো জিজ্ঞেস করলে তুমি-ও বল্‌বে।"... আমার যে কি মায়া লাগলো ওর কথা শুনে ! সৃষ্টিকর্তা বাচ্চাদের কেন যে এত্তো মায়াময় করে বানিয়েছেন!

তারপর এই দু'মাস আগে ওর বাবা-র পোস্টিং হঠাৎ করেই চট্টগ্রাম -এ হয়ে গেল ! আদ্রিয়ান প্রচন্ড মন খারাপ করল এই ব্যপারটায়। এখন-তো তাকে ওখানে যেতে হবে ! আমি তাকে অনেক বুঝালাম যে আমি আগের মত-ই তাকে ফোন করবো ! কিন্তু ওর কথা হলো ...ও যদি না করতে পারে ফোন! ওর মা বল্লো ..."মামনি! তুমি আমরা চলে যাওয়ার আগে একদিন আমাদের সাথে দেখা করো। চলো আমরা লাঞ্চ করি একসাথে।" আমি না করতে পারলাম না। তারপর তার সাথে দেখা হলো বনানি-১১-র একটা খাবার দোকানে। কি যে লজ্জ্বা পেলো ছেলেটা আমাকে দেখে ! কে বলবে এই ছেলে আমার সাথে রাজ্যের গল্প বলে ! খাওয়া-দাওয়া হলো। আমি ওকে ওর পছন্দের পিৎজা খাওয়ালাম। সে অনেক খুশি যে আমি মনে রেখেছি ওর পিৎজা পছন্দ। তারপর একটা সময়-এর পর অস্বস্তিটা কেটে যেতে-ই সে শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরলো ! আমি ওকে শক্ত করে ধরে বল্লাম...আমার best friend আমাকে ভুলে যাবেনা তো কখনো ? সে কিচ্ছু না বলে আমাকে আরো শক্ত করে ধরে থাকলো ! তারপর ওরা চলে গেল...ও গাড়ির ব্যাক গ্লাস দিয়ে যতদূর দেখা যায় তাকিয়ে ছিল ! আমার মনটা-ই খারাপ হয়ে গেল !

এখন-ও কথা হয় ওর সাথে তবে আগের চে কম। আমার best friend যেখানে-ই যেমন থাকুক যেন খুব খুব ভাল থাকে ! You will find me right there for you...in the time of your pain...in the time of your ecstasy !

মাঝে মাঝে অবাক লাগে ! না চাইতে-ই কতো অসাধারণ ব্যপার ঘটে যায় ! এতো-ই অসাধারণ যে আশে-পাশের কষ্ট-দুর্দশার পর-ও বাঁচতে ইচ্ছা করে...জীবনকে ভালবাসতে ইচ্ছা করে...
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:০২
৫৬টি মন্তব্য ২১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×