somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফয়সাল হাওড়ী
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জন্ম। কাঁচ-পাকা চুল, দাঁড়িসমেত ইঁচড়ে পাকা যুবক।পেশাদার ট্র্যাভেল ব্লগার।ঘুরে বেড়াই ও লিখি।শখের বশে সাহিত্য চর্চা করি।সদালাপী,অলস ও স্বপ্নবাজ। জীবনের উদ্যেশ্য খুজে পাই নি।মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত।যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণ সুবাহানাল্লাহ

মূর্তি আপসারণ ও আমাদের নব্য ইসলামী প্রধানমন্ত্রী !

২৭ শে মে, ২০১৭ রাত ৩:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রীক দেবীর থেমিস এর মূর্তি আপসারণ করায় হেফাজত ইসলাম ও আরো কিছু ইসলামী রাজনৈতিক দল মহান আল্লাহ্‌’র প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে তাঁরা দেশের নব্য ইসলামী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং বাঙ্গালী তৌহিদী জনতার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।এবং সেই সাথে তাঁরা দেশের সকল মূর্তি আপসারণ করার জোড় দাবী করেছেন।

এই নিয়ে চায়ের দোকান হতে টিভির টক শো , শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস হতে সোশ্যাল মিডিয়া গরম।পক্ষে বিপক্ষে অকাট্য যুক্তি প্রদর্শন ও গোজামিলে খন্ডন জোরসে চলছে। এখনো মূর্তি আপসারণ নিয়ে দাঙ্গা ফ্যাসাদ ও হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি।

মূর্তি আপসারণ বনাম ভাস্কর্য আপসারণ

কেতাবী সংজ্ঞা বলেন আর সরল সংজ্ঞা বলেন এই নিয়ে মাথাব্যাথা থাকবে পূজারী আর ভাস্করের।ভাস্কর কখনো বলে না হে পূজারী তুমি আমার এই মহৎ কর্মকে পুজা করো তেমনি পূজারী তাঁর পূজার প্রতিমা গড়তে ভাস্করের কাছে যায় না।তাঁর জন্য আলাদা সম্প্রদায় আছে , যেখানে নেয়ায়েত দুর্লভ সেখানে সে নিজেই তৈরি করে নেয়।এই দুই দলকে কখনো দেখিনি একই স্থাপনাকে নিয়ে মূর্তি না ভাস্কর্য এই বিতর্কে জড়াতে।কিন্তু এই বাঙ্গালী তৌহিদী জনতার চোখে ঘুম হারাম।

কেননা ইহা একটি রাজনৈতিক ইসু।

অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধু বনাম ইসলামী শেখ হাসিনা

মুসলমান পিতার ঔরসে জন্মলাভ করেই যে দেশে অধিকাংশ মানুষ মুসলমান সে দেশে একজন বঙ্গবন্ধু সংবিধানে ইসলাম ব্যতীত দেশে অন্যান্য ধর্মের অস্তিত্তের দায় মেটাতে “ধর্ম নিরপেক্ষ” শব্দটি শুধু ব্যবহার করেই নিন্দিত।আবার শাড়ী পরা গ্রীক দেবী থেমিসের বাঙ্গালী ভার্সন কদাকার এক ভাস্কর্য সড়িয়ে শেখ হাসিনা ইসলামী প্রধানমন্ত্রী।

উভয়ক্ষেত্রেই ভোটের কোন সম্পর্ক নেই।

এরাবিয়ান হর্স বনাম বাংলার বলাকা


জেদ্দা শহরে The Hungry Horses Sculpture নামে এরাবিয়ান হর্স এর মূর্তি চলবে কিন্তু ঢাকা শহরে বলাকা নামে বাংলার বকের ভাস্কর্য চলবে না।দাদা বিষয়টা এমন না, মানুষের অবয়ব তৈরিতে ইসলামে নিষেধ আছে।

যারা বলাকা ভাঙতে গেছিলো তাঁরা প্রকৃত ইসলাম বুঝে না।

মুষ্টিবদ্ধ হাত বনাম নারী শরীর


শক্তি ও প্রতিরক্ষার প্রতীক হিসেবে জেদ্দার রাজপথে The Fist নামক মানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাতের মূর্তি থাকতে পারবে কিন্তু ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রীম কোর্টের সামনে নাম বিহীন পুরো শরীর থকতে পারবে না।তবে কি সেখানে মানুষের হাত দ্বারা আল্লাহ্‌র আইন এবং এখানে পুরো শরীর দ্বারা নারী ক্ষমতায়নের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ?অথবা সৌদি হলেই কী ইসলামী হয়ে গেলো ? ইসলামী আইন কানুন কি তাঁরা সঠিকভাবে ফলো করে ?

এসকল প্রশ্নের সাথে আমাদের রাজনৈতিক ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।

সুশীল সমাজ বনাম বাঙ্গালী তৌহিদী জনতা

ভাস্কর্য অপসারণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই একজন দেশবরেণ্য প্রবীণ নারী অভিনেত্রী কিছু প্রাক-ইসলামিক আরব্য মূর্তি ও কিছু ভিনদেশী ভাস্কর্যের ছবি দিয়ে হেফাজত ইসলামের জন্য সৌদি ফ্লাইট বুকিং এর অফার দিলেন। সাথে সাথে দেশ শুদ্ধ সুশীল সমাজ কমেন্টে শীবের গীত গাইতে শুরু করলো।তেতুল বান্ধব সরকারের গুণগানে তাঁরা মুগ্ধ।অন্যদিকে বাঙ্গালী তৌহিদী জনতা একই কৃত কর্মের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্তের ইসলামী ব্রান্ডিং ক্রেডিট শেখ হাসিনাকে দিয়ে বসলো।সদ্য ওমরাও পালন করে এসেই নিজের ওয়াদা রক্ষা করছে ,আবার পবিত্র রমজানের আগে মূর্তি অপসারণ করছে। যৌবনে যাই থাকুক শেষ বয়সে এসে তো প্রধানমন্ত্রী দ্বীনের পথে আসছেন। বাহ বাহ ।

আমাদের দেশের এই উভয় প্রজাতীর সরীসৃপ বেশি পাওয়া যায় ।

“ মূর্তি অপসারণ ” করতে পেরে হেফাজতে ইসলাম খুশি।রাজনীতির চালে ঘোড়ার চাল চেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুশি।কদাকার ও জগাখিচুড়ি চেতনার ভাস্কর্য অপসারিত হওয়ায় ভাস্কর সমাজ খুশি।লাফালাফি করতে পেরে অতি উৎসাহী জনতার খুশি।

যা যাচ্ছে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ও ইসলামী চেতনার । কেননা প্রকৃত ইসলাম আমরা ছাড়া কেউ জানে না।এর সৌদি,ওরা শিয়া।আমরাই প্রকৃত মোমিন।এমন কী আমাদের বাপ দাদরাও না। এই সময়ের ইসলামী চেতনার ব্রান্ডিং সমাজই প্রকৃত মোমিন । তাই সৌদিতে ভাস্কর্য থাকলেও আমাদের এখানে চলবে না।মূর্তি আপসারণ ও ভাঙা ভাঙ্গি বহুত হইছে। এবার দাবী একটাই। দেশে আর কোন ভাস্কর্য থাকা চলবে না। সে অপরাজেয় বাংলা হোক আর স্বোপার্জিত স্বাধীনতা হোক। কিসের মুক্তি যুদ্ধের চেতনা ?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৭ ভোর ৪:২৪
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×