somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইনজীবী ও জাজদের কালো কোট এবং স্বাধীন বাংলাদেশ।

০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা সকলেই জানি যে আইনজীবীদের আদালতে সবসময় কালো কোট ও কালো গাউন (gown) পরে মামলা পরিচালনা করতে হয়। কারন এগুলো হল আইনজীবীদের পোশাক যা আইনজীবীদের অন্যান্য পেশার লোকদের থেকে আলাদা করে। কিন্তু আমাদের দেশের প্ররিপ্রেক্ষিতে অর্থাৎ যেদেশে গরমকালে সাধারন তাপমাত্রা থাকে ৩০ – ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস সেখানে গরমকালে কালো কোট ও গাউনের মত গরম পোশাক পরা কতটুকু যুক্তিসংগত?

এই প্রশ্নর উত্তর জানতে গেলে আমাদের জানতে হবে কেন আমরা আদালতে কাল কোট পরি? England এর কোর্টে Dress code (নির্দিষ্ট পোশাক) এর প্রচলন শুরু হয় অনেক আগে, ১৭ তম শতাব্দিতে। তখন আইনজীবী, জাজরা কোর্টে কালো কোট, বিভিন্ন রঙের গাউন, ব্যান্ড ও পরচুলা পড়তো, যার অনেককিছু এখনও UK কোর্টে প্রচলিত আছে। কিন্তু ১৬৯৪ সালে তখনকার England এর রানি Mary II এর funeral এ তখনকার England এর জাজরা রানিকে সম্মান দেখানোর জন্য সবাই কালো গাউন পরে। এরপর ১৭১৪ সালে রানি Anne এর funeral এ same procedure follow করে। এবং পর থেকে England এ জাজরা কোর্টে কালো কোট, কালো গাউন পরা শুরু করে এবং এটা তাদের tradition এ পরিনত হয়।

পরবর্তীতে UK পৃথিবীর যেসব দেশ শাসন করেছে সেসব অনেক দেশের কোর্টে এখনও আইনজীবী ও জাজদের same dress code চালু আছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

এখন প্রশ্ন হল still now আমরা কেনো কোর্টে এই পোশাক পরি? আসলে আমরা এখনও ব্রিটিশ শাষন থেকে মুক্ত হতে পারি নাই। একথা বললাম কারন শারীরিকভাবে ব্রিটিশ শাষন থেকে মুক্ত হয়েছি ঠিকই কিন্তু মানসিকভাবে আমরা ব্রিটিশ শাষন থেকে মুক্ত হতে পারি নাই। ব্রিটিশরা আমাদের উপর যা চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছিল এখনও পর্যন্ত আমরা সেটাই অন্ধের মত follow করে যাচ্ছি। যার একটা জলজ্যান্ত উদাহরন হলো কোর্টে কালো কোট ও গাউন পরা। আরো অনেক উদাহরন আছে সেগুলা নিয়ে অন্য কোনো দিন আলাপ করা যাবে।

যা বলছিলাম কেনো এখনও আমরা কোর্টে গরমকালে কোট ও গাউন পরি? অন্য ভাবে বলতে গেলে কেনো এখনও আমরা ব্রিটিশ mentality ত্যাগ করতে পারি নাই? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে আমরা খুবই আরাম প্রিয় জাতি, আমরা কষ্ট করে কিছু পেতে চাই না। তাই যখন ৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয় তখন তখনকার lawmakers রা বা সংশ্লিষ্ট authority রা কোনো কষ্ট করে ব্রিটিশ আমল থেকে যা প্রচলিত ছিল সেটাই adopt করে। এবং তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের তথাকথিত আইনজ্ঞ, আইন প্রণেতা, বুদ্ধিজীবীরা কোনো কিছু চিন্তা ভাবনা না করে অন্ধের মতো ব্রিটিশদের সেই চাপিয়ে দেয়া mentality কে follow করে চলেছে।

এখন আসি প্রথম প্রশ্নে, আমাদের দেশের কোর্টে কোট ও গাউন পরা, specially গরম কালে, কতটুকু যুক্তি সংগত? যেখানে আমাদের দেশে গরম কালে শরীরে shirt কিংবা T- shirt রাখাই খুব কষ্ঠসাধ্য বিষয় সেখানে কোট, গাউন পরে ব্রিটিশদের ঐতিহ্য বজায় রাখার কোনো যুক্তি সংগত কারন খুজে পাওয়া মুশকিল। অনেকে আবার বলতে পারেন হাইকোর্টে তো AC আছে তো কোট, গাউন পরলে ক্ষতি কি? কিন্তু আমাদের মতো একটা গরীব দেশে ব্রিটিশ ঐতিহ্য রাখার জন্য এতো বিদ্যুৎ অপচয় করার কোনো মানে দেখি না!!!

তো আমাদের কোর্টে কি পরা উচিত? আজ থাক এ প্রশ্নের উত্তর অন্য কোনোদিন খোজা যাবে। তবে আপনারা ভেবে দেখতে পারেন গরম কালে কোর্টে কোট, গাউনের পরিবর্তে অন্য কোনো dress হলে ভালো হতো কিনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×