somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবির চেনার সহজ উপায়: আসলেই কি সহজ

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুল লেখা পড়ুন এইখানে

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বিব্রত ছিল যেই কারনে সে আর কেউ নয় ছাত্রশিবির। ক্ষমতার মসনদে বসেছেন এক বছরের উপরে, অথচ এখনো শিবিরকে রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করতে পারেন নাই। তাদের সোনার ছেলেরা প্রতিদিনই আব্দার করে যে শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। দেশ রত্ন হয়ে এতটুকু আব্দার তিনি রাখবেন না! কিন্তু কি করবেন কোন বৈধ পথ তো খুজে পাচ্ছেন না। তার সোনার ছেলেরা ভার্সিটির কোমলমতি মেয়েদের সাথে নষ্টামী করতে পারছেনা, মদের বোতলে বসে স্বপ্ন দেখতে পারছেনা, শিক্ষককে পেটাতে পারছেনা। কিন্তু এভাবে কি হয় ? তাই নেত্রী একটা সহজ সমাধান খুজছিলেন। তার সেই চিরাচরিত লাশের রাজনীতি। এবারও তিনি বেছে নিলেন মেধাবী এক ছাত্রকে।নিজের পালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে খুন করালেন মেধাবী চাত্রকে আর নির্দেশ দিলেন দেশ থেকে শিবির নির্মুলের। কেন না এই বর্বর কাজ শিবির ছাড়া আর কে করবে? (!!! তাহলে কি প্রধানমন্ত্রী ও শিবির!!!) দেশের বিভিন্ন মেস থেকে অসহায় সহজ সরল কিছু ছেলেকে ধরে নিয়ে গেল পুলিশ। দুষ্ট লোকেরা বলে সেখানে নাকি পুলিশ মানবাধিকার লংঘন করে এই সব ছাত্রদের হাত পা ভেংগে দিচ্ছে। যাই হোক। মেয়ে জামাই হারা নুর মুহাম্মাদ তার বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে যেখানে শিবির সেখানেই গ্রেফতার। কিন্তি সমস্যা হল কে শিবির সেটা বুঝবেন কিভাবে? একটা গল্প বলি।

বহুদিন আগের কথা। কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম পন্থি এক নেতার কথা বলছি। তিনি তার রুমে নতুন বছরের তিনটি ছেলেকে তুললেন । উদ্দেশ্য তাদের তার অনুসারী করে তোলা। সব ঠিকই ছিল। কিন্তু ঘাপলা বাধল অন্য জায়গায়। তিনি আশ্চর্য হয়ে দেখলেন রুমের তিনজন মঝে মধ্যে মসজিদে যাওয়া শুরু করেছেন। থমকে দাড়ালেন কমরেড। এভাবে তো হয় না।তিনি তার সহকারী কমরেডদের সাথে এই ব্যাপারে আলোচনা করলেন। তারা বলল, নিশ্চিত এদের মধ্যে একটা শিবির আছে। কিন্তু কে শিবির? সরাসরি জিগ্গাসাও করতে পারছেন না।তাই তিনি কৌশলের আশ্রয় নিলেন। তিনি জানতেন শিবিরের দুর্বলতা কোথায়। সবকিছু প্লান করে নিলেন আগে থেকেই(রাজশাহীর ঘটনার মত)। তারপর সকালে তার তিন রুমমেট নিয়ে বের হলেন ঘুরতে। কমরেডের ব্যবহার খুবই ভাল ছিল। তাই সবাই তাকে খুব সম্মান করত। ক্যাম্পাসের সামনে যেয়েই সিগারেটের প‌্যাকেট খুললেন। তিনটা নিয়ে দিলেন তিন রুমমেট কে আর একটা নিলেন নিজের মুখে। ওহ ছেলে তিনটার নাসই তো বলা হয়নি। আচ্ছা ধরে নিলাম কামাল, জামাল আর মনির। যাই হোক কমরেডের সিগারেট ধরিয়ে দিয়ে বাকী দুজনেরটা ধরিয়ে দিল মনির। নিজেরটা রাখল হাতে , আর গল্প জুড়িয়ে দিল। কমরেড বলল কিরে মনির সিগারেট খাবিনা? মনির হেসে বলল: জি ভাই খাব, তার আগে একটু ফ্রেস হাওয়া খেয়ে নেই। কমরেডে দৃষ্টি আটকে গেল মনিরের উপর। সে তো আগে খেয়ালই করেনি যে মনির যা বলে বাকী দুজনে তাতে হ্যা হ্যা করে। স্মীত হেসে মনির বলল ভাই ভাবতেছি সিগারেট খেয়ে কি হবে? খামাখা বাপের টাকা নষ্ট করা। বাকী দুজনে মনিরের কথায় সায় দিল। মনির সিগারেট ধরাল। কিন্তু কমরেড মনিরকে নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে গেলেন যে বাকি দুজন সিগারেট খাচ্ছে কিনা খেয়ালই করলেন না।

হাসলেন কমরেড। কারন তিনি প্রথম পরিক্ষায় সঠিকভাবে মনিরকে শিবির হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তার ধারনা নিজেকে লুকানোর জন্যই মনির পরে সিগারেট ধরাল। এবার তার দ্বিতীয় পরিক্ষা শিবির নিশ্চতকরন।

কমরেড তিনজনকে নিয়ে বসে আছেন। হটাত সুন্দর করে একটা মেয়ে পাশ দিয়ে হেটে গেল। মনির খেয়াল করল সামনে থেকে আর একটা ছেলে আসছে। সে এসে মেয়েটার সাথে গল্প করার চেষ্টা করল। এটা দেখে হটাৎ বিরক্ত হয়ে মেয়েটা দিল চড়। ছেলটা বোকার মত তাকিয়ে থাকল। কিন্তি সে বোঝেই নি। তার জণ্য আরও কি অপেক্ষা করছে। ছেলেটা ১ম বর্ষে নতুন সরকারী দলের কর্মী। সাথে সাথে আশ পাশ থেকে আট দশজন ছেলে ছুটে এসে ছেলটাকে মেয়েকে বিরক্ত করার অপরাধে মার দেয়া শুরু করল। তাদের ধাক্কা ধাক্কিতে মেয়েটা পড়ে গেল মাঠের উপর। এই বার সম্বতি ফিরল কমরেডের , ইশারা করলেন তার অনুচরদের। বললেন মেয়েটাকে ধরে নিয়ে আয়তো। বেচারী অনেক ব্যাথা পেয়েছে। সাথে সাথে হাত লাগাল তার রুমমেটরা। আর কমরেড গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন শুরু করলেন আবার। দেখলেন তাদের কার্যকলাপ। মনির সেই আগের মতই নিরুত্তাপ, জামাল সোজা যে মেয়েটাকে ধরল। মনির মেয়েটার এক হাত কোন রকম ধরল। যেন সে খুবই বিব্রত হচ্ছে। ব্যাপারটা দৃষ্টি এড়ালো না কমরেডের। তিনি মুটামুটি এই বার নিশ্চিত। খুব খুশি লাগছে তার। তিনি সফল হয়েছেন। এদিকে কামালের ব্যাপারটা খুবই বিরক্ত লাগল। সে খেয়াল করল ছেলেটার কোন দোষ নাই। তাই সে মেয়েটার পাশ দিয়ে যে ছেলেটাকে বাচানোর চেষ্টা করল। ছেলেটাকে উঠিয়ে নিয়ে পাশে বারান্দায় বসিয়ে দিয়ে চলে এল কমরেডের কাছে। কমরেড মনিরকে নিয়ে এতই ব্যস্ত ছিলেন যে এই ব্যাপার গুলো তার খেয়ালই পড়ল না।
তিনজনকে নিয়ে রুমে ফিরে গেলেন কমরেড। রাত হল, সবাই ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুম থেকে উঠে সবাই দেখল হলের সামনে পুড়ছে মনিরের লেপ তোষক। ভেঙগে ফেলা হয়েছে তার টেবিল চেয়ার। কেউ কেউ দেখে হাসল, শিবিরের পরিনতি দেখে আর কেউ বিরক্ত হল। এই সময় সিনিয়র এক ভাই মনিরের হাত ধরে তার রুমে নিয়ে গেলেন। কদিন পরেই দেখা গেল মনিরকে সরকারী দলের বিভিন্ন মিছিলে। মনিরের ঘটনা এই পর্যন্তই।

কিছুদিন পরে এক সন্ধায় অগ্গাত সন্ত্রাসীরা কমরেডের পা কেটে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। অসহায় কমরেড হয়ে যান খোড়া। খোড়া হওয়ার কারনে তার দলে গুরুত্ব কমে যায়। একবারেই একা হয়ে যান কমরেড। কিন্তু তাকে এই অসহায় অবস্থায় ফেলে যায় না কামাল। অনেক সেবা করে সে কমরেডকে। এই কমরেড যে তাকে এক সময় বড় ভাই এর মত ভালবেসেছিলেন। এখন তাকে ফেলে রেখে যায় কি করে?

তারপর এই ঘটনার আর কোন অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। তবে শোন যায় যে পরবর্তীতে নাকি কমরেড পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। তাকে নাকি কেউ কেউ কোরআন ও পড়তে দেখেছে। তার এই পরিবর্তন কিভাবে হল তা সবার কাছেই একটা প্রশ্ন । তবে তার বিপ্লবের কর্মীরা বলে এই সব নাকি অপপ্রচার। কমরেড নাকি এ্কই রকম আছেন। তবে এদেরই কেউ কেউ বলে বিপ্লবের সাথে না থেকে ঘরে ঘুমালে পথভ্রষ্ঠ তো হবেই। ও তো শেষ হয়ে গেছে সেই কবে।

এখ বলুন তো শিবির কিভাবে চনবেন?? এর সমাধান তো আছে নিউজ কাস্টার ভাইয়ের লেখা শিবির বনাম ছাত্রলীগ । এটা পড়ুন, আর শিবির ধরুন। জানেনই তো শিবির না ধরলে নেত্রীর সকাল বিকালের নাস্তায় পরিতৃপ্তি আসে না।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:২৫
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×