আমি যেই ফ্যাক্টরিতে কাজ করি, সেখানকার এক ছেলের কথাই বলতে যাচ্ছি।
আমার ডিপার্টমেন্টের হেল্পার হিসেবে কাজ করে সে। বেতন হবে আট হাজারের মত। খুব ভালো, খুব কথা শুনে। কোন কাজই তাকে বললে হয়নি এমন কখনও হয়নি।সবার পছন্দের ছেলেটি। এক মাসের মত হল জানলাম তার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। সভাবতই সবার সহানুভুতি তার উপর এরপর থেকে। আমিতো তাকে আলাদা পেলেই তার ঘরের সম্পূর্ণ খবর নি। তার এক বড় ভাই আছে যে দেশের বাইরে কাজ করে। তার বাবা গ্রামের বাড়িতে একটা ছোট দোকান চালায়। সে হেল্পার হিসেবে আমদের ফ্যাক্টরিতে চাকরি পাওয়ার পরে তাদের ঘরের অবস্থা অনেকটা পালটে যায়। ঘরের তিন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। স্বাভাবিক সুখের বাতাস বয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ দমকা হাওয়া ক্যান্সার ঢুঁকে পড়লো সেই ঘরে।
জিজ্ঞাস করি তাকে চিকিৎসা খরচের ব্যপারে। তার ঘরে কিছু সঞ্চয় বলে ১ লাখের মত টাকা সম্পূর্ণই দুই বৃহত্তর বিভাগে চিকিৎসা করতে চলে যায়। বাবার আয় বন্ধ। তার নিজের বেতনের কিছু টাকা আর ভাইয়ের পাঠানো টাকা এখন ভরসা। তার ভাই বাইরে থেকে বিশ হাজারের মত মাসে পাঠাতে পারে। ডাক্তার বলেছে এখন শুধু কেমথেরাপি ভরসা। এক কেমথেরাপি খরচ শুনলাম পঁচিশ হাজার। জানিনা সে ছেলেটি কিভাবে কি করছে। আমি কিছু টাকা তাকে সাহায্য করার জন্য আমার পরিচিত বন্ধু আর কাছের মানুষদের থেকে সংগ্রহ করতে শুরু করলাম। কিন্তু গতকাল কর্মস্থলে গিয়ে শুনলাম তার বাবা নেই। আমই কিছু সময়ের জন্য স্থির হয়ে গিয়েছিলাম, বাবা শুন্য হওয়াটা ... আমার একটা ব্যপার তখন মনে ভেসে আসলো, একবার ছেলেটিসহ আরও কিছু আমার ওয়ার্কার নিয়ে কাজ করতেছিলাম হঠাৎ তার বাসা থেকে খারাপ একটা সংবাদ আসে, তার বাবা ক্যান্সার হওয়ার পড়েই তাকে দেখলাম কান্না করে দিতে কথা বলতে পারছিলো না ফোনে। আমি তার কান্না থামাতে পারতেছিলাম না। সেদিন আমি তখনি তাকে ছুটি দিয়ে দিলাম। এখন ভাবি সেই ছেলেটা তার বাবার ছুটিতে কি একইভাবে কান্না করছে ?
অসহায় মুহূর্ত যখন কিছু করার থাকেনা আর...