প্রথমেই বলে নেই এই পোস্টের মাধ্যমে কোন কোম্পানী বা ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে নিচু বা হেয় করানোর কোন প্রচেস্টা নেওয়া হয়নি । এই অভিজ্ঞতা একান্তই আমার , হয়তো বা কার জীবনের সাথে হুবহু মিলে যেতে পারে । কারন ঈদের টিকিট নিয়ে এই ধরনের ঝুক্কি ঝামেলায় আমরা কম বেশী সবাই পরি । তো বন্ধুরা আজ আমি শেয়ার করবো এই ঈদ উল আযহার অগ্রীম বাসের টিকিট নিয়ে আমার নিপীড়নের কাহিনী । ২৬ শে আগস্ট শুক্রবার , সকাল বেলা ১০ টার সময় রুম মেটের কাছে জানতে পারলাম বাসের অগ্রীম টিকিট আজ থেকে ছাড়া শুরু করেছে অমনি তাড়াতাড়ি নাস্তা সেড়ে বেড়িয়ে পরলাম কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে । যেহেতু শুক্রবার যথারীতি প্রচুর জ্যাম , যাই হোক স্ট্যান্ডে পৌছালাম ১২ঃ২০ নাগাত । প্রথমেই ঢুকলাম হানিফ কাউন্টারে , একটা ব্যাপার আমি অনেক আগে থেকে লক্ষ্য করেছি তা হল ঈদের সময় এলে কাউন্টারের লোকজন প্রেশারে কারো সাথে কথা বলতে চায় না নাকি ভাব বেড়ে যায় তা বলা মুশকিল , ৩-৪ বার চিক্কার করে বলার পর যে আগামী ৮ই সেপ্টেম্বরের কোন অগ্রীম টিকিট আছে কিনা উত্তর এলো ভাই আমরা ৫ তারিখ পর্যন্ত অগ্রীম টিকিট ছেড়েছি ৮ তারিখের কথা বলতে পারবো না । আপনি অন্য কোথাও দেখেন । ঢুকলাম শ্যামলীতে বললো আমরা এখানে কোন অগ্রীম টিকিট দেই না , এখানে শুধু কারেন্ট বাসের টিকিট দেওয়া হয় , আপনি আমাদের টেকনিক্যাল বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করুন । ডিপজলে ঢুকলাম যে লোকটা আছে সে বললো ভাই আমি কারেন্ট বাসের টিকিট দেই যে লোক অগ্রীম টিকিট দেয় সে একটু বাইরে গেছে , ভাল হয় আপনি নামাজ পরে আসেন তখন হয়তো পাবেন । যাই হোক নামাজ পর দেখলাম তখনো সে আসে নি । সময় নষ্ট না করে ভাবলাম টি আর কাউন্টারে যাই । টি আর কাউন্টারে দেখলাম যে বসে আছে তার মন খুব ভার । বললাম ভাই অগ্রীম টিকিট আছে ? বললো , আরে ভাই অগ্রীম টিকিট ছাড়েই নি আপনি আবার !!! বুঝলাম ফাপর মারছে , কারন সব কোম্পানীই কম বেশী অগ্রীম টিকিট ছেড়েছে , ঝামেলা এড়ানোর জন্য এবং বড় কই মাছ ( বেশী টাকা ওয়ালা ) ধরার তালে আছে । এস আর কাউন্টারে এসে দেখি কাগজ ঝুলানো ৭,৮,৯,১০ তারিখের কোন অগ্রীম টিকিট নেই । ৩ জন লোক এসে দেখি কয়েকটা টিকিট নিয়ে গেল , বললাম কিরে ভাই টিকিট নাকি নেই কিন্তু তারা যে নিয়ে গেল , দাত কেলিয়ে হেসে বললো তারা আগেই বুকিং দিয়েছিল । আমি বললাম , তো আমি যে গত ঈদে ফোন করেছিলাম অগ্রীম বুকিং দেওয়ার জন্য আপনাদেরই একজন বলেছিল এভাবে বুকিং হয় না , পারলে এসে টিকিট নিয়ে যান । হেসে বলে , সবার ব্যাপার তো আর এক না তাই না ? হুম .................... লোকটা ঠিকই বলেছে সবার ব্যাপার এক হলে আমাদের দেশ তো আর এই রকম থাকতো না । এখানে তেল ওয়ালারে আরো তেল দেওয়া হয় । বড় চোরের ট্যাক্স ফাকি দেওয়ার জন্য আরেক চোরকে ভাড়া করা হয় । ফাইল পত্রের চোরামী ঠেকানোর জন্য ডিজিটাল করন করতে সফট ওয়্যার ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া হলেও আজও অনেক জায়গায় তা অগ্রাহ্য করা হয় । সরকারী বেসরকারী অনেক প্রতিষ্ঠানের আজও পাবলিক কোন এপি আই ( Application Programming Interface ) নাই যেখান থেকে সাধারন পাবলিক তথ্য পেতে পারে সহজেই । এদেশে যেখানে ধনী আরো ধনী , গরীব আরও গরীব ঠেকানোর কোন প্লান নেওয়া হয়না সেখানে একটা টিকিট এই কাউন্টারে বসা গ্যামলারদের থেকে কিভাবে ঝামেলা ছাড়া , পরিচিতি ছাড়া , বিশেষ ব্যক্তিত্ব ছাড়া পাওয়া যাবে তা আশা করাটা মনে হয় লটারি পাওয়ার চেয়ে কোন অংশেই কম নয় । তাই বাসের আশা ছেড়ে এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ট্রেনে যাব , সময় একটু বেশি লাগবে তাতে কি টিকিট তো পাবো !!!! বাস টিকিট সিস্টেম টা অনলাইন হলে এসব ঝামেলা আর থাকতো না । আপনি হয়তো বলবেন অনলাইনে তো shohoz.com , busbd.com.bd সাইটেই তো কাটা যায় , কিন্তু এরা তো ওদের থেকে টিকিট কিনে সার্ভিস চার্জ ভরে আপনাকে দিচ্ছে তাই নয় কি ? তাছাড়া সামান্য কিছু টিকিট পাচ্ছেন এর মাধ্যমে সব তো নয় !! এই সেক্টর টাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের , নয়তো দিন কে দিন গ্যামলিং আরও বাড়বে , জন জীবন হবে আরো ভয়াবহ ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:০১