আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ভোর ছয়টা থেকে বারোটা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম একজন বিক্ষোভকারী হিসেবে। এরকম পুলিশি আক্রমণের শিকার খুব কমই হয়েছি । পুলিশ , সরকার ও উপরমহলের নির্দেশে হিংস্রভাবে অবস্থান নেয় হরতাল পালনকারীদের বিরূদ্ধে ।
সকাল থেকে যা যা ঘটলো সেগুলো এরকম -
সকাল ৬:৫০ থেকে ৭:০০টার দিকে শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড পাশ কাটানোর সময় পুলিশের বর্বরোচিত লাঠিচার্জ শুরু হয় অহেতুক । অনেকেই আহত হন এসময় ।
আন্দোলনরত বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ( ফ্রন্ট , ফেডারেশন , ইউনিয়ন ) ১৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ । থানার ভেতর তাদের অমানুষিকভাবে লাঠিপেটা করা হয় ।
এরপর বিক্ষোভকারীরা গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি নিয়ে কার্জন হলের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে সেখানেও পুলিশি ব্যারিকেডের বাধার সম্মুখীন হয় । সেখানে মিছিল এগুতে না দিলে বাদানুবাদের একপর্যায়ে আবারো পুলিশি লাঠিচার্জ । দৌড়ে পালানোর সময় পুলিশের লাঠিচার্জে নারী কর্মীসহ অনেকেই আহত হন । এদের মধ্যে কয়েকজনকে মেডিকেলে নিতে হয়েছে ।
হরতালে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভংগ করে দিতে পুলিশ দ্বিমুখী আক্রমণ শুরু করে । এই কাপুরুষোচিত হামলায় কার্জন হলের একদিক থেকে , এবং বিপরীত দিক থেকে টি এস সি হতে অগ্রসর হতে থাকে সরকারের পা চাটা পুলিশবাহিনী । এসময় অনেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে আশ্রয় নেন ।
পররবর্তীতে সাড়ে নয়টার দিকে সব হরতালপালনকারীরা টি এস সি চত্বরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জমায়েত হন । এসময় আহত নেতা কর্মীদের অনেকেই বক্তব্য রাখেন । আরেকটি মিছিল বের করে নীলক্ষেতের দিকে রওনা হলে ছাত্রলীগের আগ্রাসী মিছিল বের হয় । সংঘর্ষ এড়াতে বিক্ষোভকারীরা আবারো রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন ।
কিন্তু এই বর্বর পুলিশ , সরকারের দাস আবারো ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় ১০ টা ৫০ এর দিকে । এবং বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করে আবারো ! প্রতিবাদকারীরা টি এস সি এর ভেতরে ঢুকেও রক্ষা পায় না ওদের হাত থেকে । লাঠির আঘাত করতে করতে দুইতলার ফিল্ম সোসাইটি এবং টি এস সি এর ভেতরের গেমস রূমের পাশ থেকেও অনেককে এরেস্ট করা হয় !!!!
এমনকি এরশাদ আমলের ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ টি এস সি এর মধ্যে ঢুকে এরকম জানোয়ারসুলভ আচরণ করে নাই । এই সরকার শ খানেক তরূণ তরূণীদের দেশপ্রেমের বিরূদ্ধে এরকম নৃশংস মারমুখী আচরণ দেখিয়ে প্রমাণ করে দিলো তাদের অন্তসারশূন্যতা , দেশপ্রেমহীনতা ।
রাজা , তুই ন্যাংটা !!!!!!
সরকারের উদোম আগ্রাসন এবং প্রকাশ্য নোংরামো আমাদের শেখায় -
এই লড়াই বাঁচার লড়াই
এই লড়াইয়ে জিততে হবে !
রক্ত গরম করা মিছিল , উন্মাতাল শ্লোগান আর পুলিশের তাড়া , রক্ত , তবুও দৃঢ়চেতা কিছু মুখ - এই সব কিছুর ভিড়ে যা কিছু মনে ছিলো সেটাই জানালাম । সবাই জানুক এই বর্বরতা ! আমাদের সমর্থনে সত্যিকার অর্থেই দেশের মানুষ রাজপথে নামুক।
এই লড়াই আমাদের সবার ! সবাই জানুক , আরেকবার ভাবুক এবং বুঝতে শিখুক আগুনে সত্য !
সংযুক্তি -
এই পোস্টে ব্লগার নাহুয়াল মিথের ২৭২ নং মন্তব্য -
হরতালের প্রথম প্রহরেই পুলিশের বাধা ।
ভোর থেকে পুলিশ সিপিবির প্রধান কার্যলয় ঘিরে রেখেছে। চলছে গ্রেফতার - তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির মোট ২০ জন গ্রেফতার।
সিপিবি অফিসের সামনে থেকে গ্রেফতার হয়েছেন- ছাত্রনেতা এম আর খান জিতু, রাজিব কর্মকার, জাহিদ, জয়, তুষার, জয়দীপ।
ভোরে ৭ টার দিকে পল্টন মোড় হতে গ্রেফতার তেল গ্যাস কমিটি নেতা আনু মুহামম্দ ও নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স ।
পরে আনু স্যারকে ছেড়ে দেয়া হয় ।
গনসং হতির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিকেও সকালেই এরেস্ট করে পুলিশ ।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জি.এস. সাইফুল হক সহ 12গ্রেফতার ১২ জন
টিএসসি থেকে গ্রেফতার হয়েছে- ছাত্র ইউনিয়নের কিং, জিন্নাহ সহ ৫ জন গেফতার।
এছাড়া প্রখ্যাত ব্লগার দিনমজুর ( অনুপম সৈকত শান্ত ) সকালে এরেস্ট হন , এর কিছু পরে দশটার দিকে গ্রেফতার করা হয় আরেক সংগঠক ফিরোজ আহমেদকে ।
সবশেষে -
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আন্দোলনকারীর মুক্তি চাই
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আন্দোলনকারীর মুক্তি চাই
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আন্দোলনকারীর মুক্তি চাই
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আন্দোলনকারীর মুক্তি চাই
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আন্দোলনকারীর মুক্তি চাই
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১১ দুপুর ২:১৬