somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের প্রতিনিয়তকার যোগাযোগের কিছু পার্টেন....

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথমত প্রশ্ন হলো আমরা কি....?
উত্তর একটাই আসবে আমরা মানুষ, আর মানুষ মানেই সামাজিক জীব। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের প্রতিনিয়ত বাস করতে হয় একেকটি সমাজে, আর সমাজে চলার জন্য আমাদের সবচেয়ে মুখ্যবিষয় হলো যোগাযোগ রক্ষা করা, শেয়ার করা নিজের অনুভূতিগুলো, জেনে নেওয়া একে অন্যের অনুভূতি, আর এতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি আমরা।

সমাজে বাস করতে হলে আমাদের কে সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হয়, আর আমাদের প্রতিনিয়তকার যোগাযোগের পার্টেনগুলো বিভিন্ন টাইপের হয়ে থাকে...... কখনো ভার্বাল তথা শব্দের ব্যাবহার করে, কখনো ননভার্বাল তথা শব্দের ব্যাবহার না করে, কখনো আত্মকেন্দ্রিক, কখনো দুজন, কখনো দুইয়ের অধিক তথা গ্রুপ কমিউনিকেশন, কখনো পাবলিক কমিউশন, কখনো ম্যাস কমিউনিকেশন আমরা প্রতিদিন'ই করে থাকি।

একজন সামাজিক জীব হিসেবে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমার একটি অতিবাহিত দিবসের কথা শেয়ার করি ....
প্রত্যুষে নিদ্রাহানির পর থেকে শুরু করে আবার বিনিদ্র রজনীতে যখন একটু ঘুমের ছোঁয়া লেগে আসে দুচোখে ততটুকু পর্যন্ত'ই বলি। খুব বেশি বিস্তৃত করবো না, স্বল্প পরিসরেই শেষ করতে চেষ্টা করবো।

নিদ্রাহানির পর প্রথমেই আমি নিজের মধ্যে উপলব্ধি করতে পারি আত্মকেন্দ্রিক যোগাযোগের টাইপটাকে, যখন নিদ্রাহানি ঘটে তখন সর্বপ্রথম আত্মমস্তিষ্কে বেজে উঠে সময় কত, কি কি করবো আজ, কখন ভার্সিটি যাবো, কি পরিধান করে যাবো, ভার্সিটির ক্লাশ শেষে কি করবো....? এমন অনেক প্রশ্ন জম্ম নেয় আত্মমস্তিষ্কে, উত্তরগুলোও আমি নিমিষেই পেয়ে যাই, প্ল্যানিং করে নেই চলমান দিনটির জন্য ।

এরপর আমার মাঝে পরিলক্ষিত হয় এক ভিন্ন ধরনের যোগাযোগের মাধ্যমের, আর সেই যোগাযোগগুলো হচ্ছে কিছু বস্তুর সাথে, যে বস্তুগুলোর নেই কোনো অনুভূতি নেই কোনো ফিডব্যাক দেওয়ার উপায়, তবুও প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হচ্ছে তাদের সাথে, বস্তুগুলো যেমন :- ব্রাশ, পানির ট্যাপ, পেষ্ট, এবং আমার ড্রেসআপ। আর হ্যাঁ আমার ড্রেস আপ কিন্তু বলে দেয় আমার পরিচয়। "গাছকে যেমন প্রশ্ন করা হয় গাছ তোমার পরিচয় কি...? গাছ উত্তর দেয় ফলেই পরিচয় " তেমনি জীবন অতিবাহিত করার ক্ষেত্রে আমাদের ড্রেসআপ বলে দেয় আমাদের পরিচয়।
উদহারণ স্বরুপ :- হাসপাতালে বা কোর্টে গেলে আপনাকে/ আমাকে কেউ বলে দিতে হবেনা কে ডাক্তার বা কে আইনজীবী, কেননা এখানে তাদের ড্রেসআপ'ই বলে দেয় কে তারা। আমার/ আমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনি।

এরপর ইন্টারপার্সোনাল কমিউনিকেশন লক্ষ্য করা যায়, তবে ইন্টারপার্সোনাল এর পূর্বে ইনট্রাপারসোনাল কমিউনিকেশন দেখা যায় । উদহারণ স্বরূপ :- কোনো ফ্রেন্ড বা অপরিচিত কাউকে প্রশ্ন করবো বা আলাপ করবো তারপূর্বে স্বল্প সময়ের মাঝে আমাদের মস্তিষ্কে বাতিয়ে দেয় , এটাও একপ্রকার আত্মকেন্দ্রিক যোগাযোগ।
এরপর ইন্টারপার্সোনাল কমিউনিকেশন সমপূর্ণ হয়, কখনো কখনো তা আবার গ্রুপ কমিউনিকেশনে রূপান্তরিত হয় ।
উদহারণ স্বরুপ :- আমি এবং রাজ একত্রে কথা বলছি সেমিনারে বসে তখন আমাদের মাঝে ইন্টারপার্সোনাল কমিউনিকেশন হয় , একসময় হৃদয় এসে আমাদের সাথে যোগ দিল, এরপর সারা ক্রমান্বয়ে সবাই । হৃদয়ের যোগদানের পরপর'ই আমাদের যোগাযোগের পার্টেন পাল্টে যায় ইন্টারপার্সোনাল থেকে গ্রুপ কমিউনিকেশনে রূপান্তরিত হয়।

এরপর মাঝে মাঝে নিজের পাবলিক কমিউনিকেশন কে খুঁজে পাই, কখনো স্রোতা আবার কখনো বক্তা হিসাবে, আর এই টাইপের কমিউনিকেশন যখন কোনো সেমিনার বা মঞ্চে প্রোগ্রাম হয় তখন নিজের উপস্থিতির মাঝে উপলব্ধি করতে পারি।
আমাদের জীবন চলার ক্ষেত্রে আরেক টাইপের যোগাযোগ লক্ষ্য করা যায় আর তা হলো ম্যাস কমিউনিকেশন বা গনযোগাযোগ, ম্যাস কমিউনিকেশনে নিজেকে একজন রিসিভার হিসেবে দেখতে পাই যাখন...... টিভি, নিউজপেপার, ম্যাগাজিন, বই, রেডিও, বিলবোর্ড, লিফলেট, ব্যানার, পোষ্টার ইত্যাদির মাধম্যে কোনো প্রকার যোগাযোগ করে থাকি।
মাঝে মাঝে ম্যাস কমিউনিকেশনে নিজেও সোর্স হয়ে ম্যাস কমিউনিকেশন সম্পূর্ণ করি, যেমন :- একটি বই, ম্যাগাজিন অথবা পত্রিকায় কিছু লিখলাম, আর তা অজনা সংখ্যক জনগন পড়লো, তখন জনগন রিসিভার আর আমি সোর্স। ম্যাস কমিউনিকেশনের মাঝে আবার সেলফ ম্যাস কমিউনিকেশন দেখতে পাই। বিশেষ করে যখন আমরা অনলাইন ব্যাবহার করে থাকি। যেহেতু এখন আধুনিক যুগ সেহেতু এখন আমাদের মাঝে ম্যাস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সেলফ ম্যাস কমিউনিকেশন বেশি পরিলক্ষিত হয়।
উদহারণ স্বরূপ :- আজকাল ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন পোর্টালগুলোতে আমরা বিভিন্ন টাইপের ম্যাসেজ পেয়ে থাকি আমরা তখন ইচ্ছে করলে সেখানে ফিডব্যাক দিতে পারি আবার নাও দিতে পারি আর সেটাও একধরণের ম্যাস কমিউনিকেশন যেহেতু সেখানে ফিডব্যাক দেওয়া আত্মনির্ভরশীল সেহতু তাকে সেলফ ম্যাস কমিউনিকেশন বলা হয়।
এছাড়া ও আরো অনেক টাইপের যোগাযোগ আমাদের মাঝে উপলব্ধি করতে পারি আর যেগুলোর বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না, বিশেষ করে ননভার্বাল কমিউনিকেশনের টাইপগুলো ও বর্ণনা করে শেষ করতে পারবো না। অথচ আমরা উপলব্ধি করছিনা আমাদের যোগাযোগের পার্টেনগুলো ।
একজন মানুষ হিসেবে প্রতিদিন আমাদের বিভিন্ন টাইপের কমিউনিকেশন এর সম্মুখীন হতে হয়, যোগাযোগের এমন কোনো টাইপ বাকী নেই যে টাইপের যোগাযোগ আমাদের মাঝে হচ্ছে না, একটু চিন্তা করলেই উপলব্ধি করা যাবে আমরা প্রতিনিয়ত'ই প্রায় সব টাইপের যোগাযোগের সম্মুখীন হচ্ছি, হয়তো তা আমরা উপলব্ধি করতে পরিনা, কিন্তু যখন একটু গভীরভাবে চিন্তা করি তখন আমাদের সামনে ভেসে উঠে যোগাযোগের বিভিন্ন টাইপগুলো আর আনমনে হেসে উঠি আমরা প্রতিনিয়ত এত্গুলো টাইপের যোগাযোগের সম্মুখীন হয়ে থাকি। আমরা ভালো থাকতে চাই, রিফ্রেশ থাকতে চাই তাই কমিউনিকেশনের মুখামুখি হয়ে থাকি। একমাত্র কমিউনিকেশন'ই পারে মানুষকে রিফ্রেশনেস দিতে।
উদহারণ স্বরূপ :- সেলফ কমিউনিকেশনে আমরা নিজেকে নিয়ে ভাবি, এবং মোটিভেট করি নিজেকে আর তাতে রিফ্রেশ অনুভূত হয়। ইন্টারপার্সোনাল বা গ্রুপ কমিউনিকেশনে আমরা নিজেদের নিয়ে কথা বলি বা বিভিন্ন ব্যাবসায়িক কার্জক্রম অথবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলি। শেয়ার করি একে অন্যের ইমোশন, ইমপ্রেসনেস, এবং ভালোলাগা খারাপ লাগার সময়গুলো । আর তাতে আমরা খুব ভালো ফিডব্যাক পেয়ে থাকি, সেই ফিডব্যাক'ই আমাদের রিফ্রেশনেস দেয়। পাবলিক বা ম্যাস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রেও একই বলা যায়, কখনো বক্তার বক্তব্যশুনে, কখনো নিজে বক্তব্যদিয়ে। বিনোদন পেতে এবং কোনো কিছু সম্পর্কে জানতে অথবা বিনোদন দিতে এবং কোনো কিছু জানাতে পেরে আমরা রিফ্রেশ ফিল করি, যেনো শ্বাসরুদ্ধকর হাপ ছেড়ে বেঁচে উঠি।
এককথায় বলা যায় যোগাযোগের মূল উদ্দেশ্য হলো রিফ্রেশনেস, কেননা যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিটি কাজ সম্পাদানের মাধ্যমেই আমরা অনুভূব করি সতেজ, এক নতুন অনুভূতির যাকে রিফ্রেশনেস ও বলা যায়।
রিফ্রেশনেস অনুভব করার জন্যই আমরা যোগাযোগ করে থাকি।

#চাইরচোখ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×