somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

- দূরত্ব

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




- কেমন আছো..?
- হঠাৎ মনে পড়লো...? ঠিক বছর দুয়েক পর, এতদিন কোথায় ছিলে, অসহায়ত্বের সুযোগ নিতে আবার মেসেজ করছো.....?
- তুমি এমন হয়ে গেছো কেনো...?
- কেমন হলাম, আমি আমার মতোই আছি।
- মিস করো আমায়..?
- মিস করবো ..? কাকে, তোমাকে....? আর কেনোইবা করবো...?
- হুম, মিস করবেই বা কেনো, আমি কে...?
- বাদ দাও, কেনো মেসেজ দিয়েছো তা বলো...
- কেমন আছো...?
- বেশ আছি, তুমি কেমন আছো..?
- ভালোই আছি, কোথায় থাকা হয় এখন ...? শুনলাম নাকি আবার স্ট্যাডি ধরেছো..?
- ইটপাথরে ঘেরা স্বার্থপর কোনো এক শহরে থাকা হয়। আর হ্যাঁ, সত্যিই শুনেছো, ফ্রাস্টেশন থেকে বেরিয়ে আবার স্ট্যাডি শুরু করেছি, শুধুমাত্র কিছু অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য, তখন আমি উপলব্ধি করতে পারি নাই সেই অকৃত্রিম ভালোবাসাগুলো, না হয় স্ট্যাডিটা চালিয়েই নিতাম আর নিজের ক্যারিয়ার গড়ে নিতাম। আমি এখন স্বপ্ন দেখি একদিন বড় হবো, কিছু নিঃস্বার্থ মানুষের মুখ উজ্বল করবো।
- সময়গুলো এখন তোমার কেমন কাটে...?
- ভালোই যাচ্ছে সময়গুলো, ভার্সিটি, বন্ধু আড্ডা আর সমাজ সচেতনতা মূলক কাজ করেই দিনগুলো পার হয়ে যাচ্ছে। আর রাত ! তাও ভালোই যাচ্ছে, শুধুমাত্র যে ঠোট জোড়ায় দুটি মিষ্টি ঠোটের উষ্ণতা পাওয়ার কথা ছিলো সে ঠোট জোড়ায় স্থান পাচ্ছে নিকোটিন পুড়ানো উষ্ণতা, আর রাতের আঁধারে মাঝে মাঝে বালিশ ভেজে যায় চোখের জলে, এটা একটা রোগ হয়তো, সেই তুমি চলে যাবার পর থেকেই দেখা দিয়েছে। তবুও ভালো আছি।
- তুমি কথা দিয়েছিলে যে ঠোটে আমার কপাল স্পর্শ করেছো সে ঠোটে কখনো নিকোটিন স্পর্শ করবে না।
- কথা দিয়েছিলাম ! হ্যাঁ কথা দিয়েছিলাম, কিন্তু যেখানে মানুষটাই থাকে না, সেখানে ঠোটজোড়া কার কপালের স্পর্শ নিবে ...? সেই ঠোট জোড়ায়তো নিকোটিনের পোড়া ধোঁয়া'ই স্থান পাবে।
- খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলছি তোমাকে ..?
- কষ্ট..? তাও আমাকে...? হাহাহা ! আমি কি কষ্ট পেতে জানি, আর আমার কি কষ্ট পাওয়ার অনুভূতি আছে...? কষ্ট পাওয়ার অনুভূতি নেই বলেই আজ দুটি মানুষ কতটা দূরত্বে আছি, জানি এখন চাইলেও কাছে আশা হবে না।
তারপর বলো, তোমার সময়গুলো কেমন যাচ্ছে..? আর ইমনের সাথে তোমার সম্পর্ক কেমন যাচ্ছে..? শুনলাম নাকি তোমরা এঙ্গেজডও, ইমন নক করে বলেছিলো একদিন। সেদিন কষ্ট পেয়েছিলাম একটু,মেনে নিতে পারছিলাম না মানুষগুলো কিভাবে পরিবর্তন হয়ে যায়, তাদের দেওয়া কথাগুলো ভুলে যায় ! নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম সেদিন, কিন্তু পরক্ষণে ভেবে নিয়েছি কার জন্য শেষ করবো নিজেকে, কিছু স্বার্থপর মানুষের জন্য..? যদি নিজেকে শেষ করেই ফেলি তাহলে আমার তাকিয়ে কিছু নিঃস্বার্থ মানুষ তাকিয়ে আছে তাদের কি হবে..?
জানো, এখন মানিয়ে নিয়েছি নিজেকে, কষ্ট হয়না চলে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য। ভালো আছি, ভালো থাকতে পারবো চিরজনম সেই বছর দুয়েক আগের স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরে। তবুও ভালো থাকুক সেই মানুষগুলো।
- অভিমান করে আছো আমার সাথে..?
- কেনো হাসাও বলোতো...? অভিমান করতে ভুলে গেছি সেদিন, যেদিন একজন মানবীর অপেক্ষায় সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে এসেছিলো তবুও সে মানবীর সময় হয়নি এমনকি এখনো পর্যন্ত সময় হয়নি।
- এখনো ভালোবাসো আমাকে ...?
- ভালোবাসা জীবনে একবার'ই আসে, ভালো একজনকেই বাসা যায় , যদিও আজকাল আমার সেই ভালোবাসার মূল্য নেই কারো কাছে, তবুও ভালোবাসা একবার'ই আসে। ঘৃণা জম্মেছে ভালোবাসার প্রতি এখন আর কাউকে ভালোবাসি না।
- মিথ্যা বলছো কেনো..?
- কে মিথ্যে বলছে, আমি....? আচ্ছা কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দিতে আসছো নাকি...? আর হ্যাঁ, সেদিন আম্মুর দেওয়া চিঠিটা তোমার হাতে পেয়ে এমন সিনক্রিয়েট না করলেও পারতে, আমি জানতাম না কিছু চিঠিটার ব্যাপারে, কিন্তু তিনি তো জম্মদাত্রী, চোখের সম্মুখে সন্তানকে এভাবে শেষ হতে যেতে দেখতে পারছিলেন না বিধায় তোমাকে চিঠিটি দিয়েছিলো, আর তুমি, কি করলে..? এমন এক মহানাটক সাজালে সত্যি অবাক করে দিয়েছিলো আমায়, এত দ্রুতই মানুষগুলো সব ভুলতে পারে..? ২০১৪ সালের চার নভেম্বরের কথা মনে আছে..? আমার লাইফে একটি বেষ্ট মোমেন্টস ছিলো সেদিন, এখনো অানমনে হেসে উঠি সে দিনের কথা মনে পড়লে, কিন্তু আমাদের দূরত্বটা সে হাসি কেড়ে নিয়ে যায়। এখন চার নভেম্বর আসলেই বড্ড কষ্ট হয় আমার, যখন ২০১৪ সালের চার নভেম্বর দিনটাকে বড্ড মিস করি।
- কেনো আঁকড়ে ধরে আছো এসব..? পারতে না নিজের লাইফটা কে গুঁছিয়ে নিতে..?
- গুঁছিয়েছিতো লাইফটাকে, বললাম না, এখন দিব্যি বেশ আছি। আর আঁকড়ে ধরে আছি কেনো তা জানতে চাইছো তাই না..? বলছি, লাইফে কখনো কখনো এমন কিছু মোমেন্টস আসে যেগুলো আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে হয়, আর আমি সেই রুলসটাই ফলো করছি, স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরে বাকী জীবন কাটিয়ে দিবো।
- জীবনটা নতুন করে সাজাও, নতুন করে কাউকে জড়িয়ে নাও নিজের সাথে।
- বড্ড অট্টহাসি পেয়েছে আমার, তুমি জানোনা জীবনে ভালোবাসা একবার'ই আসে, ভালো একজনকে'ই বাসা যায়। ভালোবাসা এতটা সস্তা না যে, যখন তখন আসবে আর নতুন কাউকে জড়িয়ে নিবো নিজের সাথে। ভালোবাসা হলো একপ্রকার অনুভূতি, আর সেই অনুভূতিতে একবার'ই মেশা যায় বারবার না।
- নিজেকে আর কত কষ্ট দিবে..?
- কষ্ট আমি পাইনা, কষ্ট পেতে ভুলে গেছি। এটাই চাই শুধু অনুভূতিতে মেশা মানুষগুলো ভালোথাকুক, সুস্থ থাকুক।
- ক্ষমা করতে পারবে আমাকে... ?
- ভালোবাসার মানুষদের প্রতি অভিমান, ক্ষোভ থাকতে নেই। ক্ষমা সেদিন'ই করে দিয়েছি যেদিন তোমার সাথে শেষবার দেখা হয়েছিলো।
- এতটা ভালোবাসতে আমাকে ...?
- তোমাকে ভালোবেসেছে কে.? সেগুলো অভিনয় ছিলো, আর অভিনয় বলেই দূরত্বটা আজ অনেক বড় । ভালোবেসেছি কিনা জানিনা, তবে এতটুকু বলতে পারি তুমি আমার অনুভূতিতে মিশে ছিলে, হয়তো এখনো আছো ।
বাদ দাও এসব প্লিজ, ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছি, আর পারছি না। প্লিজ চলে যাও, আর ভালোথেকো, সুখে থেকো, আর কখনো প্রয়োজন মনে করলে আমাকে নক কইরো। আর হ্যাঁ, তোমাদের প্রথম সন্তান হলে আমাকে জানাইও, একবার দেখে আসবো শুধু তোমাদের সন্তানটাকে, কথাদিলাম সেদিন তোমার সম্মুখীন হবো না, শুধু তোমাদের সন্তানটিকে একপলক দেখে চলে আসবো। আর তোমাদের প্রথম সন্তানের নামটা ইমনের ইচ্ছানুযায়ী'ই রেখো, খুব ভালো ছেলে ইমন। ভালো থেকো দুজনে, অনেক ভালো থেকো।

#চাইরচোখ

ছবি : সংগ্রহিত

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×