somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ইতিকথা, এবং একটি সোনার হরিণের হাতছানি

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জানুয়ারির ১ তারিখ।
চারিদিকে কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। বেশ শীতল। পাশাপাশি অসাধারণ। আবার ভয়ানক ৷যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাস। ভয়, আবেগ সবমিলিয়ে একটা অন্যরকম অবস্থা ৷
চোখে মুখে আনন্দের পাশাপাশি যথেষ্ট ভয়, সংকোচ আর চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার অবস্থা কি ধরনের? শিক্ষকরা কেমন? পাশাপাশি স্টুডেন্টরাও বা কেমন? - এসব ভাবতে ছেলেটি ক্লাসের সামনে পৌঁছে গেল। দরজার সামনে দাঁড়াতেই ভিতর থেকে স্যারের কর্কশ ধ্বনি এবং বিরক্তিকর দৃষ্টি।
: আসবো স্যার ?
: এসো, আমি না বললে কি তুমি আসতেনা?
প্রথম ক্লাসে তোমার ১৫ মি. লেট, কি করবে জীবনে? এখন পর্যন্ত ডিসিপ্লিন শিখতে পারলেনা।
: সরি স্যার, আর দেরি হবেনা।
: ঠিক আছে, এসো, প্রথম প্রথম সবাই এরকম বলে ৷কিন্তু কিছুদিন পর খুঁজে পেতেও কষ্ট হয়ে যায় ৷

ছেলেটি প্রথম দিনের ধাক্কায় যথেষ্ট মর্মাহত হলো ৷ কারণ, সে জানত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পড়াশুনা নেই বললেই চলে। সারাদিন আড্ডা, গান, ঘুরাঘুরি এসব করেই কেটে যায়। মাঝেমধ্যে অনেকে নাকি আবার গাঁজা সিগারেটও খায়। আবার কেউ কেউ নাকি প্রেমও করে। এসব ভেবে সে আরো হতাশ হলো। যেরকম জানতাম সেটা ঠিক নাকি আজকেরটা!

ছোটবেলা থেকে সে দেখলো,
প্লে নার্সারীতে বইয়ের ভারে শিশুদের আর খুঁজে পাওয়া যেতনা। তারপর সেই বোঝা কিছুটা হালকা হত প্রাথমিকে গিয়ে। তারপর হাই স্কুলে গিয়ে আরো অনেকটা হালকা হয়ে যেত। কলেজে যাওয়ার পর তো বই ই থাকতো না, শুধুমাত্র একটা খাতা প্যান্টের পেছনের পকেটে পুরে আসা যাওয়া করলেই হয়ে যেত। তার খাতা দেখলেই সবাই বুঝে নিত সে কলেজে পড়ছে ৷
বিশ্ববিদ্যালয়কে অতীতের সিরিয়ালে নিলে এখানে পড়াশোনা একেবারেই নাই হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু ব্যাপারটা ঘটলো ঠিক উল্টো।

কিছুটা মন খারাপ করে সেদিনের বাকি ক্লাস সেরে বাসায় চলে আসলো।
তারপরদিন একটু আগেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো, যাতে করে স্যারের আবার বকা শুনতে না হয়।
দ্বিতীয় দিন ক্লাসে ঢুকে এবার তার অজ্ঞান হবার উপক্রম।
গিয়ে দেখলো পেছনের সব বেঞ্চ আগেই ফিলাপ হয়ে গেছে। শুধু সামনের বেঞ্চগুলোই খালি। বেচারা হতাশ হলো, শেষ পর্যন্ত বসে বসে ভাবতে লাগলো স্কুল, কলেজ লাইফে কখনো সামনে বসার ইচ্ছেও করতাম না। ইচ্ছে করলেও মেধাবীদের জন্য আর জায়গা পাওয়া যেতনা ৷আর এখন বাধ্য। না জানি কখন আবার আগে স্যারের কথা শুনতে হয়।
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার মনে পড়লো,
এক গুরুজন বলেছিলেন,
জীবনে একমাত্র পেছনের বেঞ্চের ছেলেরা উন্নতি করতে পারে। আর সব বুংবাং।
সামনের বেঞ্চের পোলাপান একেবারে খালি কলসির মতো ঝনঝন করে, কাজের বেলায় ফাও। মন খারাপ করে সামনে বসে সেদিনের মতো কেটে পড়লো ৷

সে আরো ভাবলো এজন্য মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে পেছনের বেঞ্চ ফিলাপ হয় তারপর সামনের বেঞ্চ। যে যত ভালো স্টুডেন্ট সে তত পেছনে বসে। ৹৹৹৹
আর এভাবেই চলতে থাকল তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।
শেষ পর্যন্ত এভাবেই চললেই বোধহয় ভালো হতো! কিন্তু কিছুদিন পরের ঝড় তুফানের কথা মোটেই ভাবতে পারলো না, - ক্লাস টেষ্ট, এ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশান এগুলোর কবলে পড়ে সে একজন দার্শনিকে পরিণত হয়ে গেল। জীবন আর জীবনের জায়গায় রইলো না । সবই শেষ । ....

আর এভাবেই তৈরি হয়ে থাকে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। সবাই না, যারা মেনে চলে তারা ৷
কঠোর পরিশ্রম আর শিক্ষকদের চাপের মুখে দেশের জন্য তৈরি হওয়াও বেশ ভালো লাগার মতো।
ঝড়, বৃষ্টি, হাসি, আনন্দ বিসর্জন দিয়ে জীবনের জন্য তৈরি হতে পারে কয়জন?

শুভ কামনা সবার প্রতি!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×