শুরুতেই বলে রাখছি, এটি একটি বুক রিভিউ পোস্ট। এটি আমার ব্যক্তিগত পর্যালোচনা। এর সাথে অন্য কোন উদ্দেশ্য জড়িত নয়। ভালোলাগা থেকেই পোস্ট করা।
বইয়ের নামঃ 'পাকিস্তানীদের দৃষ্টিতে একাত্তর'।
লেখক / সম্পাদনাঃ ১. মুনতাসির মামুন।
২. মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিষয়ঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গবেষণা, সাক্ষাৎকার।
ভাষাঃ বাংলা।
রেটিংঃ ব্যক্তিগত রেটিং - ৮/১০.
প্রকাশনীঃ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড।
http://www.uplbooks.com
বই সম্পর্কে ধারণাঃ
যারা অখণ্ড পাকিস্তানের চেতনার কফিনে সর্বশেষ পেরেক পুঁতে দিয়ে পঁচিশে মার্চের ভয়াল রাতের ঘটনা ঘটায় এবং সেই নিষ্ঠুরতা পুরো নয় মাস বজায় রাখে, একটি গণতান্ত্রিক অর্জনের ফলকে নস্যাৎ করে দিয়ে দেশের এক অংশে নির্বিচারে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, নিপীড়ন হওয়া সত্ত্বেও কেন পাকিস্তানের অপরাংশের জনসমাজের প্রায় সকল স্তরে নির্লিপ্ততা দেখায় বা এজন্য বাঙালীদের আগাগোড়া দোষারোপ করে, কী প্রেক্ষাপটে, কেন এমনটি করেছিল, একাত্তরের ঘটনাবলীকে তারা তখন কীভাবে মূল্যায়ন করেছিল বা এখনো করে - সে ব্যাপারে খুব সামান্য কথাবার্তাই আমরা এ পর্যন্ত শুনেছি। পাকিস্তানীদের কাছ থেকেও এসব বিষয়ে কোন খোলামেলা বক্তব্য বা মূল্যায়নও আশা করা যায় না, কারণ বিষয়টি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান সামরিক বাহিনীর কর্মকান্ড ও তার পরাজয়কে ঘিরে আবর্তিত এবং পাকিস্তানী সমাজজীবন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্পষ্টভাবে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার মত স্বাধীনতা ভোগ করে না। এই প্রেক্ষাপটে উপরোক্ত বিষয়ে যতটা সম্ভব তথ্য আহরণের লক্ষ্যে সাক্ষাৎকার গ্রহণের ভিত্তিতে এই বইটি প্রণীত হয়েছে। যাঁরা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে আছেন সামরিক-বেসামরিক ১১ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমলা, ৯ জন রাজনীতিবিদ ও বাকী ৮ জন সিভিল সমাজের প্রতিনিধি। সাক্ষাৎকারদানকারীদের অধিকাংশ প্রত্যক্ষভাবে পূর্ব পাকিস্তান বিষয়ে নীতি নির্ধারণে ও একাত্তরের যুদ্ধে জড়িত ছিলেন। যাঁরা জড়িত ছিলেন না তাঁরাও পাকিস্তান সমাজের সচেতন অংশের প্রতিনিধি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সামগ্রিকভাবে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল তা বুঝতে গেলে বা এ বিষয়ে কিছু রচনা করতে গেলে সংকলিত এই সাক্ষাৎকারগুলি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
[প্রকাশনা দপ্তর]
ব্যক্তিগত মতামতঃ
সাধারণত আমরা মুক্তমন নিয়ে পড়াশোনা খুব কমই করে থাকি। আমরা কেউই নিরপেক্ষ নই। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইয়েও আমরা সেই একই বিষয় খুজে বেড়াই। কিন্ত আমরা কখনো এ বিষয়টা চিন্তা করিনা, আমরা যা ভাবছি ঠিক অপরপক্ষ এটা নিয়ে কি ভাবছে! তাদের বক্তব্য কি এ বিষয়ে আমরা তা কখনোই খুঁজিনা।
এ বইটা একটা সাক্ষাতকার। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। যা পাকিস্তানি তৎকালীন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের থেকে সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। তাদের এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
তারা যে সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন তাতে সত্য মিথ্যা যা হোক মোটামুটি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছুটা ধারণা আমরা পেয়েছি।
অসাধারণ একটা বই।
খারাপ লাগেনি পড়তে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে হলে বা জ্ঞানের জন্য পড়তে হলে আপনার পড়ার তালিকায় এটি রাখতে পারেন।
আমরা সমালোচক, দাবী করি।
কিন্তু সমালোচনা করার জন্য প্রয়োজন সে বিষয়ে প্রচুর জানা, প্রচুর পড়া।
লেখক পরিচিতিঃ
১. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন (জন্মঃ ২৪ মে, ১৯৫১) একজন বাংলাদেশী লেখক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। ঢাকা শহরের অতীত ইতিহাস নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। তিনি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী।
জন্মঃ ২৪ মে, ১৯৫১
পেশাঃ শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
নাগরিকত্বঃ বাংলাদেশ Flag of Bangladesh.svg
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারঃ বাংলা একাডেমী পুরস্কার।
দাম্পত্যসঙ্গীঃ ফাতেমা মামুন।
সন্তানঃ মিসবাহউদ্দিন মুনতাসীর, নাবীল মুনতাসীর ও রয়া মুনতাসীর।
সাহিত্য কর্মঃ
মুনতাসীর মামুনের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২২০।
গল্প, কিশোর সাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্র সমালোচনা, অনুবাদ সাহিত্যের প্রায় সব ক্ষেত্রেই মুনতাসীর মামুনের বিচরণ থাকলেও ইতিহাসই তার প্রধান কর্মক্ষেত্র।
প্রশাসনের অন্দরমহল | প্রকাশকালঃ ১৯৮৭
ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী | প্রকাশকালঃ ১৯৯৩
বাংলাদেশের রাজনীতিঃ এক দশক | প্রকাশকালঃ ১৯৯৯
১৯ শতকের ঢাকার মুদ্রণ ও প্রকাশনা | সময় প্রকাশন | প্রকাশকালঃ এপ্রিল ২০০৪
১৯ শতকে পূর্ববঙ্গের মুদ্রণ ও প্রকাশনা | সময় প্রকাশন | প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০০৫
আইন, আদালত ও জনতা |অনুপম প্রকাশনী | প্রকাশকালঃ জুলাই ২০০৫
১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ ও পূর্ব বাংলার প্রতিক্রিয়া |মাওলা ব্রাদার্স | প্রকাশকালঃ জানুয়ারি ২০০৬
১৯৭১ চুকনগরে গণহত্যা | সূবর্ণ প্রকাশনী | প্রকাশকালঃ অক্টোবর ২০০৮
আমার ছেলেবেলা | প্রকাশকালঃ অক্টোবর ২০০৮
দুঃসময়ের দিনগুলি | প্রকাশকালঃ ২০১০
ঢাকার স্মৃতি ৯ এবং ১০ | প্রকাশকালঃ ২০১০
ঢাকার স্মৃতি ৮ | প্রকাশকালঃ ২০১০
[উইকিপিডিয়াঃ Click This Link
২. মহিউদ্দিন আহমেদ (জ. ১৯৪৪) সংবাদপত্রে সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাঁর পেশাগত জীবন শুরু করেন। তিনি প্রায় ৪ বছর লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। পরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের পাকিস্তান শাখায় সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। এ সময় তাঁর প্রকাশনার নানাবিধ বিষয়ে ব্যাপক পেশাগত প্রশিক্ষণ লাভের সুযোগ হয়। তিনি স্বাধীনতার পর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী নিযুক্ত হন। তিনি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত তার প্রকাশক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরূপে কর্মরত আছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই। তিনি দেশে ও বিদেশে পুস্তক প্রকাশনা বিষয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে আসছেন। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় উন্নয়ন বিষয়েও তাঁর রচিত নিবন্ধ প্রায়শ প্রকাশিত হয়। পুস্তক প্রকাশনায় বিরল অবদান রাখার জন্য তিনি ১৯৯১ সালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র স্বর্ণপদকে ভূষিত হয়েছেন।
বইটির প্রকাশকালঃ
প্রথম প্রকাশ- ২০০৫.
পঞ্চন প্রকাশ- ২০১৪
ষষ্ঠ প্রকাশ- ২০১৮
পৃষ্ঠাঃ ৩৬০.
মূল্যঃ ৪৬০
অনলাইন প্রাপ্তিস্থান -
১. https://www.daraz.com.bd/-i102389-s805359.html
২. Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৬