somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'বাপ মায় ভদ্রতা শিখাইছে ভাই, তাই কিছু কইতে পারিনা'

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'কিছু কমুনা, কইলে চাকরি থাকবোনা।'
বাংলাদেশের কয়েকটা আত্ম পরিচয়ে বলিয়ান ছাত্র সংগঠন রয়েছে, তাদের অবস্থা দেখলে মনে হয় দেশে শিক্ষার অকাল পড়ছে।
শিক্ষার কোনো দামই নেই। তাদের কাছে 'শিক্ষিত হওয়া' বিষয়টা যেন একেবারেই দুধভাত। 'শিক্ষিত হইছি কি হইছে? ভালো মানুষ করতে পারবিনা' এ নীতিতে তারা এগিয়ে চলছে। নীতি, আদর্শ, মূল্যবোধ কোনো কিছুতেই তাদের যেন মাথাব্যথা নেই।
'পাওয়ার চাই পাওয়ার' নীতিতে চলছে তারা।
আর তাদের দেখলে মনেই হয় দেশে ভালো মানুষের খুব অভাব।

কয়েকটা ঘটনা দিয়ে আলোচনা সংক্ষেপ করি-
ঘটনা - ১.
লাঞ্চে গিয়েছিলাম একটা হোটেলে। মোটামুটি খালিই আছে বলা যায়। ভালো দেখে নিরিবিলি পরিবেশে একটা কেবিনে বসলাম। সাথে বন্ধুরা ছিলো। খাবার আসতে দেরী হচ্ছে। এই ফাঁকে নিজেরা আড্ডায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলাম। কিন্তু বিপত্তি হলো আরেকজায়গায়, অল্প বয়সী কিছু ছেলে এসে এখান থেকে সরে গিয়ে অন্য কোথাও বসার জন্য ওয়ার্নিং দিয়ে গেলো। মন মেজাজ খারাপ হইতে চাইলো, কিন্তু কি করার খারাপ করা যাবেনা।
ভাইয়েরা বলেছে উঠে যেতেই হবে। ভাইয়েদের পাওয়ার লাগবে। কিছু বলা যাবেনা।

ঘটনা- ২.
এক বৃদ্ধ লোক চা-বিস্কুট বিক্রি করছে। ছোট্ট টং দোকান দিয়ে ব্যবসা করছে। বয়স সম্ভবত সত্তরোর্ধ হবে। শরীরের গঠন দেখে বোঝাই যাচ্ছে ভালো নেই। জীর্ণশীর্ণ- কঙ্কালসার লিকলিকে শরীর। হাড়গুলো ধরে দেখা যাবে এরকম।
যার এ বয়সে ঘরে বসে আরাম কেদারায় আরাম করার কথা সে কিনা এখন জীবিকার জন্য চা বিক্রি করছে। যাই হোক বৃদ্ধ এটা করতেই পারে। দোষের কিছুনা। সেতো ভিক্ষা করছেনা, সেদিক থেকে অনেকটা পজেটিভ।
কিন্তু সমস্যা হলো, এলাকায় কিছু নেতা আছে। তারা চা খেয়ে চলে যাচ্ছিলো। বৃদ্ধ যখন টাকা চাইলো তখন আর বৃদ্ধ যায় কই? এতো বড় সাহস? নেতাদের থেকে কেউ টাকা চায়?
শুরু হলো উত্তম মধ্যম। পাশাপাশি ক্যাশ বক্স থেকে টাকা জরিমানা হিসেবে টাকা মাইর।

ঘটনা - ৩.
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিছিল হলো বাইক মিছিল। যা বাইকে চড়ে করা হয়। এক কথায় বাইক র‍্যালী।
তো সেরকম একটা বাইক র‍্যালী যাচ্ছিল স্থানীয় বাজারের উপর দিয়ে। নিজেদের শক্তি জানান দেয়ার জন্য মোক্ষম একটা ব্যাপার। সাথে স্থানীয় মানুষদের দৃশ্যমান উপভোগ। এতে নেতারা অত্যন্ত ফুলকিত হন। নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলে বিদ্যুৎ গতিতে। 'যাকে পাই, তাকে খাই' গতিতে এগিয়ে চলে র‍্যালী। অনেকেই দেখছে। কেউ দাঁড়িয়ে কেউ বা সরে গিয়ে আবার কেউ বা আরেকটু দূরে গিয়ে দৃশ্যপট উপভোগ করছেন।
সেরকম এক মটরসাইকেল আরোহীও বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিলেন। বেচারার বিধি বাম ছিলো বলা যায়। হঠাত র‍্যালীর সন্মানিত সদস্যরা আচ্ছামতো কেলিয়ে বা উত্তম মধ্যম দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেছিলো, কেউ কিছু বোঝার আগেই। বেচারা অঘারাম নিজেও কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কি থেকে কি হয়ে গেলো? কি দোষ আমার?

ঘটনা- ৪.
খবরের কাগজ ঘাটাঘাটি করলে বোধহয় দেখতে পাবেন,
কোনো এক জায়গায় (সঙ্গত কারণে লেখক নাম বলতে রাজী নয়) বাসে যাতায়াত করতে হয় সে এলাকার মানুষদের। অবশ্য নব্য নেতারাও মাঝেমধ্যে বাসে চড়েন। হয়তো ভালোলাগা থেকেই চড়েন। একদিন এরকম নেতা সাহেব বাসে যাতায়াতের প্রাক্কালে বেয়াদব হেল্পার নাকি নেতা থেকে যাতায়াতখরচা ছেয়েছিল। সেই সুবাদে হেল্পারের জন্য এখনো নাকি ওষুধপাতি খরচা করতে হয় পরিবারের। নেতা সাহেব নাকি তাকে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল।

এসব বিষয়ে বন্ধুবরের সাথে আলাপচারিতায় বন্ধুবরকে জিজ্ঞেস করলাম, লাঞ্চের পরে সেই ব্যাপারে তোমার মন্তব্য কি?
বেচারা বলে ভাই! বলতে চাইনা এসব।
তারপরও বলি -
'বাপ মায় ভদ্রতা শিখাইছে ভাই, তাই কিছু কইতে পারিনা'।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×