গত পোস্টে লিখেছিলাম, এই নির্লজ্জতার শেষ কোথায়!!!! Click This Link
সুবিধাবাদী আর নির্লজ্জদের আত্মসম্মান এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তারা এখন উল্টাপাল্টা কাজ করতে শুরু করেছে। তারা তাদের পূর্ব পুরুষদেরও আত্মসম্মান মাটির সাথে মিশিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেনা। দেশের একটা উঁচু পর্যায়ের চাকরিতে যোগ দিতে চাই সর্বোচ্চ মেধাশক্তি আর কমনসেন্স। যার সেটা নেই সে এমনিতেই অযোগ্য। এবার সে যেই হোক। হোক সে প্রধানমন্ত্রী কিংবা আমলা বা সচিবের সন্তান। মেধা নেই, তো চাকরি নেই। অপরপক্ষে "মেধা আছে! তো চাকরি আছে, সম্মানও আছে" সে যেই হোক। হোক সে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বা রাস্তার কুলি-মজুরীর ছেলে।
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে ভালো কথা, সেই যোদ্ধাদের সুযোগ সুবিধা দিয়ে সম্মান জানানো, সহযোগীতা করা চিকিৎসা, শিক্ষা দিয়ে সহযোগীতা করা দায়িত্ব ও কর্তব্য। এমনকি আমাদের সরকার তা করেছে, এখনো করছে।
কিন্তু এতোকিছুর পরেও দেশের এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে তার নাতিকে কোটা দিয়ে 'প্রথম শ্রেণী'র সরকারির চাকরি কেন দিতে হবে?
যিনি যুদ্ধ করেছেন তাকে সম্মান জানানো আমাদের কর্তব্য। ওনার আর্থিক সমস্যা থাকলে সন্তানদেরও শিক্ষার খরচ দিয়ে সাহায্য করা কর্তব্য। কিন্তু সন্তানদের সাহায্য পর নাতিদের সাহায্য করতে হবে কেন? বরং, যোদ্ধাদের জন্য আর্থিক সম্মানি ভাতা ব্যবস্থা করলেই তো আর সমস্যা থাকার কথা না। সরকার সেটাও করেছেন। কিছুদিন পর পর সেটাও বাড়িয়ে কয়েকগুণ করে দিচ্ছেন। বাড়ি দিচ্ছেন, যাতায়াত ব্যবস্থা অনেকটা ফ্রি করে দিয়েছেন। হাসপাতালেও কোটা রেখেছেন। সবমিলিয়ে একটি সম্মানজনক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এবং তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানাই। এরকম সুযোগ সুবিধা আর পৃথিবীর অন্যকোন দেশে দিচ্ছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। আমার গরীব রাষ্ট্র অনুযায়ী যথেষ্ট দিচ্ছে তা হলফ করে বলতে পারি।
কিন্তু তারপরেও তাদের কোটা দিয়ে চাকরি দিতে হবে কেন? এতো বেশি খাই খাই চাহিদা থাকবে কেন?
"চাকরি দরকার? প্রতিযোগীতায় আসো, নিজেকে প্রমাণ করো, চাকরি নাও। সম্মানীত হও।"
"কিছুই পারোনা? - সারাদিন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়িয়েছ? স্কুল ফাঁকি দিয়েছ? প্রেম করে পরীক্ষায় ফেল করেছ? রাস্তায় রাস্তায় গুণ্ডামি করে বেড়িয়েছ? - তাহলে তোমার মতো অপদার্থ আর আমড়া কাঠের ঢেকী দিয়ে রাষ্ট্রের কি কাজটাই বা উদ্ধার হবে? তাছাড়া নির্লজ্জের মতো বলো সে পরীক্ষায় ৮০ পেয়ে চাকরি পেলে আমাকে ২০ দিয়ে চাকরি দিতে হবে। কারণ আমার বাবা- দাদা/ নানা মুক্তিযোদ্ধা তাই।
কিন্তু তুমি কি জানো যে ছেলেটা ৮০ পেয়ে পাস করেছে সে কতটা কষ্ট করে এ নাম্বার পেয়েছে? সে কি তোমাদের মতো সরকারি ভাতা আর সুযোগ সুবিধা পেয়েছে? না, অনেক ছেলে রাস্তায় রিক্সা চালিয়ে, টিউশনি করে, চা দোকানে চাকরি করে, খরচের টাকা জমিয়ে রেখে আজ এ পর্যন্ত এসেছে। সে এতদূর এসেও তোমার মতো অপদার্থের কাছে এসে নিজেকে হারিয়ে পথে বসতে হয়েছে। তুমি নিজেকে আর তার মধ্যে কোন কিছু আলাদা করতে পারছো? যদি পারো তাহলে তুমি মেধা দিয়ে চাকরিও পাবে। আর যদি আলাদা করতে না পারো, সে কমনসেন্স তোমার নেই তাহলে তোমাকে দিয়ে ক্ষেতে হাল চাষ করা ছাড়া কোন গতি নেই। তোমাকে দিয়ে প্রশাসন চালানো মানে দেশের আইন শৃঙ্খলা শেষ করে দেয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই না। কারণ তোমার কমনসেন্সের জন্য তুমি কিছুই করতে পারবেনা। সেরকম যোগ্যতাই তোমার নেই।
এখন তুমি যদি চাও, 'পরীক্ষা দিলে আমি জীবনেও বিসিএস ক্যাডার হতে পারবোনা, তাহলে আমার বাবা- দাদা যুদ্ধ করেছেন সে সার্টিফিকেট দিয়ে পরীক্ষা ছাড়া বিসিএস ক্যাডার বানিয়ে দাও।'
তাহলে সেটা সরকার ভেবে দেখবে। সে আবেদন করো। তোমাদের এরকম দাবীতে কেউ কিছু মনে করবেনা। কারণ মানুষের ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা থাকতেই পারে। তবে যেটা অযৌক্তিক সেটা চেয়ে নিজেকে পরিবারকে অসম্মান করবেনা।
কিছু কিছু পদের জন্য আলাদা আলাদা যোগ্যতা লাগে তা পূরণ করতে পারলেই তুমি মেধাবী। তুমি যোগ্য। জোর করে দাবী আদায় করে নিলে তুমি সন্ত্রাসী। অনৈতিকভাবে নিলে তুমি দুর্নীতিবাজ।
এবার ভেবে দেখ তুমি কোন পর্যায়ের !!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩