নাগরিক হলো একটি রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান উপাদান। নাগরিক ছাড়া রাষ্ট্র কল্পনা করা যায়না। আর নাগরিকই প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের মালিক। সে হিসেবে একটির রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমান। তা যে দলেরই হোক না কেন। বা সে যেই হোক না কেন। নাগরিকদের অধিকার সমূহের মধ্যে অন্যতম অধিকার হলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার প্রয়োগ প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কিন্তু কোন দল যদি সে অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করে থাকে তাহলে সে স্পষ্ট ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে বলে ধরে নেয়া যায়। এমনকি এটা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। পাশাপাশি জনগণের সাথে হঠকারিতাও বলা যায়।
২০১৪ সালের জঘন্য নির্বাচন দেখে অনেকেই এ নির্বাচনের গতি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছেন। লক্ষ্য করছেন কিভাবে আবারো নিকৃষ্ট রাজনীতির উদাহরণ, পাতানো নির্বাচনের নামে জনগণকে মূলা দেখিয়ে আবারো ক্ষমতা হাতিয়ে নেয়া যায়। যদিও জনগণ বিষয়টা নিরপেক্ষতার দৃষ্টিতে একেবারেই নিতে পারছেনা। "ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করা, রাষ্ট্রের টাকা অপচয় করে নিজের ক্ষমতা নবায়ন করা একই কথা।" এতে বিঘ্নিত হয় সঠিক পন্থায় গণতন্ত্র চর্চা। আগ্রহ কমে যায় সঠিক রাজনীতি চর্চায়। ফলে রাষ্ট্র জনগণের ক্ষমতা হারিয়ে এক নায়কের দিকে পা বাড়ায়। বাধাগ্রস্ত হয় সুশাসন ও ন্যায়বিচার ব্যবস্থায়। বেড়ে যায় হানাহানি, মারামারি, লুটতরাজ, দুর্নীতি, অন্যায়, বিভিন্ন অপরাধ সহ নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা। যার কারণে নষ্ট হয় শান্তির পরিবেশ। শিক্ষার পরিবেশ। সঠিক গনতন্ত্র চর্চার পরিবেশ। আইন শৃঙ্খলার পরিবেশ।
ভালো কাজ না করার কারণে ভোট না পেলে কি ভোট ব্যবস্থাই তুলে দিতে হবে নাকি? এ কেমন আচরণ?
আওয়ামী সরকারের একটা মুদ্রাদোষ বেশ লক্ষ্যনীয়। বাকশাল বা একনায়কের প্রতি এদের আগ্রহ প্রচুর। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই এ বিষয়টা ইতিহাসের পাতায় ব্যাপকভাবে স্থান করে নিয়েছে। অনেক ঘটন অঘটনও ঘটেছে এ বিষয়টা নিয়ে। এমনকি রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়তেও হয়েছিলো তাদের। তারপরেও তাদের আগ্রহ জনগণের অধিকার হরণ করে নিজেদের নোংরামি প্রতিষ্ঠার দিকে।
গত ১০ বছরের ক্ষমতা দখলের রাজনীতি দেখলেই বোঝা যায় তারা গনতন্ত্রের প্রতি কতটা আন্তরিক। দেশের কোন সেক্টর বাদ নেই যেখানে তারা সফল হয়েছে। বরং সব সেক্টরেই দুর্নীতির আর অপরাধের মারাত্মক প্রভাব ফেলে রেখেছে। প্রতিটা ক্যাম্পাসেই ছাত্রলীগের মেধাবী গুণ্ডাদের তাণ্ডবলীলায় শিক্ষাঙ্গনকে আজ ধ্বংসের মুখে ফেলছে। প্রশ্ন আউট আর নিয়োগ বানিজ্যে বেকারত্ব দিন দিন মহামারীর আকার ধারণ করিয়ে ছেড়েছে। তাদের গুম, খুন আর ধর্ষণের রেকর্ডের ফলে মানবতা আজ বিপন্ন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীও আজ তাদের সাথে গলা মিলিয়ে নিজেদের পশুত্ব দেখাতে শুরু করেছে।
যে বাহিনী জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার কথা তারা আজ জনগণের জান-মাল কেড়ে নিচ্ছে। যে নিরাপত্তা বাহিনীর কখনো বিনা ওয়ারেন্টে কারো উপর গুলির বিধান নেই, সেই বাহিনী আজ রাজনীতি করার অপরাধে জনগণের উপর অবলীলায় গুলি চালিয়ে বর্বরতার সাক্ষী দিচ্ছে। লে.জে. হু মোঃ এরশাদ সামরিক শাসক হয়েও গুলি না চালিয়ে ক্ষমতা ত্যাগ করেছে, সেখানে বর্তমান সময়টা?
যদিও এখন সে সময়ের সাথে তুলনা করাটা অপরাধ হয়ে দাঁড়াবে।
জনগণের জান মালের নিরাপত্তা জন্য হলেও আসুন চুক্তিবদ্ধ হই। জানমালের নিরাপত্তা দিন, বাকশাল নিয়ে নিন। তারপরেও শান্তি দিন। লাগবেনা আমাদের ভোটাধিকার! প্লিজ, কুত্তা সামলান। তারপরেও নির্বাচনের নামে টাকা অপচয় বন্ধ করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪০