তারেক কি জাহাজগুলো পুড়িয়ে দিয়েছিল?
আমাদের আন্দালুস-স্পেনের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করতে গেলে বর্তমানে একটি কথা বেশি শোনা যায়।তা হল,যে "আন্দালুস অভিযানে মুসলিম বাহিনী স্পেনে পৌছার পর সেনাপতি তারেক বিন জিয়াদ রহঃ নাকি জাহাজগুলো পুড়িয়ে ফেলেছিলেন। যাতে করে কেউ আর ফিরে যেতে না পারে"
আসলে কি ঘটনা এমন!?
অথচ স্পেনের নির্ভরযোগ্য কোন ইতিহাস গ্রন্থে তা পাওয়া যায় না।এমন আন্দালুসের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বড় ইতিহাসগ্রন্থ, আল্লামা মুকাররী'র "নাফহুত-তীবে"ও এ ঘটনার কোন উল্লেখ নাই।
>>আল্লামা উছমানী* বলেন,"তারেক বিন জিয়াদের অগ্নিঝরা বক্তব্য থেকে হয়ত এই ঘটনাটাকে অনুমান করা হয়েছে--(দুনিয়া মেরে আগে)
বাস্তব ইতিহাস হচ্ছে,তারেক বিন জিয়াদ রহঃ কোন জাহাজ পুড়াননি;বরং জাহাজ পুড়ানোর 'ইতিহাস'টা 'সভ্য'(!)ইউরোপিয়ানদের বানানো কাহিনী ।
কারণ, ইউরোপিয়ান-ফিরিঙ্গীদের বিস্ময়ের ঘোর কাটে না,যে মুসলমানরা অপরিচিত-আজনবি, অন্যের ভূ-খন্ডে এসে অল্প-অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মাত্র বার হাজার পায়দল মুজাহিদ কীভাবে একলক্ষ অস্ত্রে সজ্জিত ঘোড়সওয়ার সেনা বাহিনীকে পরাজিত এবং নাস্তবাবুদ করে ছাড়ল!শেষফল সমগ্র স্পেন, ফ্রান্সের কিছু অংশসহ তারা বিজয় করে নিল!
মুসলিম মুজাহিদদের এই সাহসীকতা-বীরত্ব এবং খৃস্টানদের ব্যর্থতা-কে লুকানোর জন্য তারা কাহিনী তৈরি করল,যে "তারেক জাহাজগুলোকে জ্বালিয়ে দিয়ে মুসলিম সৈন্যদেরকে যুদ্ধ করতে বাধ্য করল।
আসলে এই সমস্ত খৃস্টান-কাফেররা অন্ধের জাতি।তারা কুর'আনের এই বাণীগুলো বুঝে না।
"...সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।--- সূরা বাকারা "
আসলে যুদ্ধের ময়দানে ইসলামি বাহিনীর আসল হল সংখ্যায় 'কম' হওয়া।আর দুশমন 'বেশি' হওয়া।আর এই কমসংখ্যক মুজাহিদ নিয়ে মুসলামনার আল্লাহর সাহায্য পেত,দুশমনদের উপর বিজয়ী হত।
বরং আশ্চার্য হচ্ছে মুসলমানরা সংখ্যায় বেশি হয়ে যদি 'হুনাইনে'র মত অবস্থা ঘটত!!!
" আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছেন অনেক ক্ষেত্রে এবং হোনাইনের দিনে, যখন তোমাদের সংখ্যধিক্য তোমাদের প্রফুল্ল করেছিল, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্তেও তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়েছিল। অতঃপর পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে।= তাওবা "
=== রহস্যময় আদমচূড়া!
শ্রীলংকার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের শ্রীপাডা প্রদেশে অবস্থিত রহস্যময় 'আদমচূড়া '।
হাজার বছর ধরে মানুষের কাছে রহস্যের সাক্ষর বহন করছে এই এড্যাম পিক বা আদমচূড়া।
বলা হয় এই চূড়াতেই বেহেশত থেকে সরাসরি নামানো হয় আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)কে।
চারিদিকে সবুজে ঘেরা,উঁচু -নিচু পাহাড়ি টিলার মাঝে অবস্থিত এই চূড়াটি।আশে পাশে রয়েছে ছোট বড় নদি-নালা।সব মিলিয়ে নয়নাভিরাম এক দৃশ্য।
এই চূড়ার উচ্চতা ৭৩৬২ফুট।২২৪৩মিটার।
চূড়াটি-তে হযরত আদম আঃ এর যে পদচিহ্ন (আল্লাহ মা'লুম) রয়েছে,তার পরিমাপ হচ্ছে ৫ফুট ৭ইঞ্চি।বলা হয়ে থাকে, খৃস্টপূর্ব ৩০০অব্দ আগে এই পদচিহ্ন টি আবিস্কার হয়।এর পর এটাকে ঘুরে রাখা হয়।
যুগ যুগ ধরে এই চূড়াটিতে অনেক পর্যটক পরিভ্রমণ করে।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে,ইবনে বতুতা এবং মার্কো পলো।
আরো রহস্য হচ্ছে চূড়ার যে স্থানে হযরত আদম আঃ এর পদচিহ্ন রয়েছে,সে স্থানে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সূর্যের আলো আর মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মেঘের ঘনঘটা বা বৃষ্টি পড়ে না।বছরের পর বছর অবিকল রয়েগেছে এই চূড়াটি।
মানুষের কাছে এই চূড়াটি পবিত্র এবং দর্শনীয় হিসেবে পরিচিত।
(আল্লাহু আ'লামু বিস-সাওয়াব)
কারো কাছে সঠিক তথ্য থাকলে যানাবেন।
* আল্লামা মুফতি তক্কী উছমানী >> দুনিয়া মেরে আগে।