somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের বিয়ে বিড়ম্বনা !

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? কি করে? মেয়ের বাবার ছুড়ে দেয়া প্রশ্নে ছেলে পক্ষের জবাব ছিলো বিএ পাস, দুবাইতে প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে। মেয়ের বাবার এক কথা আর যা হোক এমন পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিবেন না।
যার কথা লিখছিলাম চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স শেষ করে বর্তমানে আবুধাবীতে আল ফালাহ নামের একচেন্জে রেমিটেন্স অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন প্রায় তিন বছর। তার মাসিক বেতন ৩০০০ দিরহামের উপর। বিয়ে করার জন্য দেশে গিয়েছিলেন নিজ দেশে পরবাসী এই লোকটি। চার মাস দেশে অবস্হান করে ও কোনো উপযুক্ত পাত্রীর সন্ধান না পেয়ে পরিচিত একজনের হাতে আংটি পরিয়ে আবার ফিরে আসে আপন গন্তব্য প্রবাসে।
এরকম ঘটনা বর্তমানে আমাদের দেশে অহরহ, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্হানরত শিক্ষিত যুবকদের ক্ষেত্রে। শিক্ষিত যুবক, শিক্ষিত পাত্রী খুজবে এটা খুবই স্বাভাবিক। যা কম শিক্ষিতদের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়না, কারন কম শিক্ষিত পাত্র কোনভাবে পাত্রীর সন্ধান পেলেই খুশি থাকেন তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে।
দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা প্রবাসীদের বিরাট অংশ থাকেন মধ্যপ্রাচ্যে, যারা জীবিকার তাগিদে পরিবার ও স্বজনদের ছেড়ে দীর্ঘদিন দেশের বাহিরে আছেন, অথচ মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের প্রতি আমাদের দেশের মানুষদের একটা ধারনা যে, যারা মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন তাদের সবাই কুলি, মুজুর বা লেবার। তাই তাদের বিবাহযোগ্য অর্নাস বা বিএ অধ্যয়নরত কন্যার জন্য কোনো মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী ছেলের প্রস্তাব নিয়ে গেলে বাবা মা বলেন আমার মেয়ে এখনো ছোট, বিয়ের বয়স হয়নি। বাবা মায়ের দৃষ্টিতে বিয়ের বয়স কখন হবে তা বুঝার আগেই ছেলে মেয়েদের অহরহ প্রেম হয়ে যাচ্ছে। যা চিন্তা প্রতিবন্ধী অভিভাবক, তথা বেকুব অভিভাবকদের চোখে পড়েনা। আমাদের অভিভাবকগণ মনে করে তাদের ছেলে-মেয়ে অশ্লীল কাজ করতে পারে না । যেখানে ১৫ -১৬ বছর বয়স থেকেই পর্ণোগ্রাফি দেখা শুরু হয়, ইভ টিজিং করা শুরু হয় এমনকি অবৈধ যৌনাচারে জড়িত হয়ে পরে সেদিকে খেয়াল নাই!! বাল্য বিবাহ করা যাবেনা !!কিন্তু এই অপকর্ম করলে অসুভিধা নাই!! আসলে যেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়, সেই সমাজে বিয়েতো কঠিন হবেই।
মধ্যপ্রাচ্যের শিক্ষিত পাত্রের সাথে বিয়ে না দিলে ও ইউরোপ আমেরিকার অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত ছেলের সাথে মেয়েকে বিয়ে দিতে মেয়ের বাবারা ব্যাস্ত থাকে, মেয়েরা ও প্রতিযোগীতা করে ইউরোপ আমেরিকার ছেলের সাথে বিয়ে বসতে। যদি ও পাত্র স্বল্পশিক্ষিত! তাতে কি? সত্যিই বিচিত্রতার অনেক কিছুই দেখা মেলে এই দেশে।
আমাদের দেশে শিক্ষিত একটা ছেলে যেভাবে ব্যংক, বীমাসহ সরকারী, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, শিক্ষিত একটা ছেলে সেভাবে প্রবাসে ব্যংক, বীমাসহ সরকারী, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কাজ কর্ম চালিয়ে যেতে সক্ষম। নাকি আমাদের দেশের শিক্ষিত জনশক্তি দেশের বাইরে অক্ষম! কতিপয় লোকের ধারণা শিক্ষিত জনশক্তি দেশের বাইরে অক্ষম! যদি শিক্ষিত জনশক্তি দেশের বাইরে অক্ষম হয় তাহলে কি লাভ আমাদের এই শিক্ষাব্যবস্হার! যেখানে past, present, future শিখতে গিয়ে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় লাইফ শেষ হয়। নাম ডাকহীন এমন অনেক শিক্ষিত জনশক্তি আছেন যারা নিজ নিজ যোগ্যতায় প্রবাসে খুবই ভালো অবস্হানে।
FARNEK Total Facilites Management দুবাই’র অন্যতম একটি কোম্পানি, পরিচিত এক বড় ভাই FARNEK চাকুরী করেন, যার মাসিক বেতন ৪০ হাজার দিরহাম, নিজ যোগ্যতায় তিনি চাকুরী পেয়েছেন। এছাড়া পরিচিতদের অনেকেই আছেন যারা শিক্ষা এবং যোগ্যতার কারণে প্রবাসে সফল, তাদের মাঝে বাংলাদেশ সোস্যাল ক্ল্যাব দুবাই’র প্রেসিডেন্ট জনাব নওশের আলী যিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ সময় এমিরেটস এয়ারলাইনস পরিবারে সাথে জড়িত. ব্যবসায়ীদের কথা নাইবা বললাম.
হ্যা, এটাও অস্বীকার করছিনা যে যোগ্যতাসম্পন্ন জনশক্তির চাইতে যোগ্যতাহীন জনশক্তির পরিমাণ বেশি, যাদের মাসিক বেতন ৮শ’ থেকে ১ হাজার দিরহাম। বেতন যাই হোক অবস্হান অনুযায়ী কেউ মূল্যয়ন করেনা প্রবাসিদের।
পরিবারের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, নিজের বিলাস-ব্যাসন ত্যাগ করে, আধা পেট খেয়ে, নির্ঘুম রাত কাটানো প্রবাসের এই মানুষ গুলো আমাদেরই কারো সন্তান, কারো ভাই, যাদের আয়ের উপর শুধু একটি পরিবার চলেনা! দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যাদের অবদান সিংহভাগ.
পরিবারের সন্তানের মতই মূল্যয়ন করুন প্রবাসি পাত্রদের, এতে হয়তো প্রবাসি পাত্রদের কষ্ট কিছুটা হলে ও কমবে। কারো করূনা নয়, মূলত নৈতিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চায় পরিবার তথা আপন মানুষদের ভালোবাসা বঞ্চিত হাজারো প্রবাসী।
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪
১৩টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×