somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরিফের বিষয়টা ভালো চোখে দেখা দরকার...ইসলামের বিপরীতে আরিফকে দাঁড় করানো ঠিক হচ্ছেনা

১৩ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যক্তিগতভাবে আমার ধর্মের প্রতি আমার ভালোবাসা প্রচন্ড।
ধর্মীয় কট্টরতা পরিবারে না থাকা এবং ছোটবেলা থেকে ধর্মের পাপ পূন্যের চেয়ে ধর্মের ঐতিহ্যকেই সামনে রাখার কারনে ইসলামের প্রতি এই ভালোবাসাটা হয়তো বেশি।
সে হিসেবে যে কোনো কিছুতেই আমার হই হই করে ওঠার প্রবণতা কম। একটু সময় নিয়ে দেখি, বোঝার চেষ্টা করি, তারপর একটা সিদ্ধান্তে পৌছাই। আর আমি ধর্ম নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়িতেও নেই। কারণ আমি জানি এ কাঁদা একটা সময় আর আমাকে লক্ষ্য করে আসবে না। লক্ষ্যবস্তু একটা সময় ধর্মের দিকে পরিবর্তিত হবে।
যে কারণে ব্লগের কোনো ধর্মীয় পোষ্টে এমন কি আস্তিক নাস্তিক পোস্টে আমার আনাগোনা কম। গেলেও যে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকি।
তবে যারা সরাসরি শুধু ইসলামকে অপবাদ দেবার জন্য পোষ্ট দেয়, আল্লাহ এবং তার প্রেরিত নবীদের বিরুদ্ধে অশালীন কথা প্রচার করে তাদের ব্যাপারে চরম ঘৃণাও পোষণ করি।
২.
এখন ব্লগে আরিফকে নিয়ে চলছে এক ধরণের পোষ্ট, পাল্টা পোষ্ট।
আরিফের অপরাধ?
সে একটা কার্টুন একেঁছে।
কার্টুনটা কি?
একটা প্রচলিত কৌতুককে সে এঁকে দিয়েছে।
এটা যে ছেপেছে তাদের কিছু হয়নি।
এটা যদি পাপ হয় তবে সেজন্য যাদের প্রাশ্চিত্ত করার কথা তারা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরেছে।
অদ্ভুত দেশ। ক্ষমতা থাকলে এদেশে নিজের পাপের প্রাশ্চিত্ত্য আরেকজনকে দিয়ে করানো যায়।
তবে তার আগে দেখা দরকার, এটা আসলে কী? এটা যদি পাপ ধরে মোল্লাগণ, তবে এরও বছর দশেক আগে এটা তাদের সমমনাদের কিশোর কণ্ঠে ছাপা হয়েছিল।
তখন তারা কোথায় ছিলেন? তখন কী তাহলে পৃথিবীতে পাপ পূণ্যের হিসাব সৃস্টি হয়নি?
৩.
আরিফ।
২০০৫ এর কোনো এক সকালে এক ছেলে ফোন করেছিল, ভাই একটা কার্টুন পাঠালাম, দেখবেন।
একটা পত্রিকার সাথে যুক্ত থাকার কারণে তার এই ফোন।
তার ভালো কার্টুন সেদিন ভালো ট্রিটমেণ্ট-এ ছাপাও হয়েছিল। তখন আরিফ, আরিফ ছিলনা। সিরাজগঞ্জের এক তরুণ, চোখে যার বড় শিল্পী হবার স্বপ্ন।
তারপর থেকে তার সাথে কথা হতো। তার সম্পর্কে যতটুকু জানতাম, সব দিকেই ভালো।
ধর্মের প্রতিও তার অনুরাগ কম না।
এরপর কয়েকটি পুরস্কার পাওয়া এবং স্বপ্নের বাস্তবায়নে আরিফের ঢাকা চলে আসা।
হঠাৎ সেই কার্টুন আঁকা।
কোনো ভুল নেই, আরিফ আসলে একই সঙ্গে প্রতিক্রিয়াশীল এবং তথাকথিত প্রগতিশীলদের স্বার্থে বলি হয়েছিল।
৪.
কাল আরিফের বিরুদ্ধে একটা রায় হয়েছে।
দুদিন আগেও তার সাথে ফেসবুকে কথা হয়েছে। আরিফ হয়তো নিজেও জানেনা এই ঘটনা।
যাই হোক, এখন আবার আরিফ ইস্যুতে ব্লগ গরম।
আরিফকে সালমান রুশদী আর তসলিমার লেভেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এই ধারণা যাদের তারা হয়তো কেউ-ই ব্যাক্তিগতভাবে আরিফকে চেনেন না। যে দোষ আরিফকে দেয়া হচ্ছে, আসলে বিশ্বাস আরিফ নিজেও করে না। তাকে অযথা ইসলামের বিপরীতে দাঁড় করানোর কিছু নেই। সে নিজে ধর্মপরায়ন ছেলে।
যদিও আরিফের এই ধর্ম পরায়ণতার মূল্য এখন এদেশে নাই। ধর্মও এখন শো ডাউনের বিষয়। মোল্লাদের সাথে জুম্মার পর দুয়েকটা বিষয় নিয়ে রাস্তায় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি ছাড়া ধর্ম পালন পুর্নাঙ্গ হয় না। ঈমানি সার্টিফিকেটও এখন তাদের হাতে।

কিন্তু ব্লগে আমরা সুস্থ মানুষগুলো কেন এই অযথা তর্কে জড়াচ্ছি?
আমাদের যদি সময় থাকে, বিতর্কের বিষয় না থাকে চলেন সবাই ঠিক করে একটা বিষয় নিয়ে বিতর্ক করি। তাও আরিফকে মুক্তি দেই।
কত্ত বিষয় আছে। কত্ত অমীমাংসিত বিষয় আছে। এই ধরেন 'ডিম আগে না মুরগী আগে' মতো বিষয়টার এখনো নিষ্পত্তি হলো না।
চলেন সেসব নিয়ে বিতর্ক করি আর আরিফকে মুক্তি দেই। আর যদি আরিফকে গালি দিতে ইচ্ছে করে একটু কষ্ট করে আগে তার খোঁজখবর নিয়ে নিই।
আরিফও মুক্তি পাবে। আমার ঐতিহ্যের ধর্মও মুক্তি পাবে এইসব কাঁদা থেকে।

আল্লাহ আমাদের জ্ঞান দান করুক।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৩৯
১৩৯টি মন্তব্য ১০৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×