somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাফিনের গল্প!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিউওয়ার্ক এর নতুন আফিসের সিইও রাফিন। আজই এই অফিসে জয়েন করল। অনেক কষ্টে ও এখানে এসেছে। এইদেশে এসে প্রথমদিকে তো প্রায় না খেয়েই ছিল। কয়েকটা ডলারের জন্য রাস্তার গাড়িও পরিস্কার করেছে ও। বাবা মা বিয়ে করতে বলছে। ভাবছে এবার একটা বিয়ে করে ফেলবে। তখনি ইরার কথা মনে পড়ল। অল্পএকটু হলেও তাকে ভালবাসত রাফিন। কিন্তু ওর বিয়ে হয়ে গেছে। এমনকি একটা বাচ্চাও আছে।
মাঝে মাঝে রাফিন ফোন করে ইরাকে। ইরার মোবাইলে বিদেশী নম্বর উঠলেই বুঝে যায়, রাফিন ফোন করেছে। রাফিন কখনো কথা বলে না। শুধু ইরার হ্যালো শব্দটি শুনে রেখে দেয়। ইরা মোটেও বিরক্ত হয় না। ওর বড্ড ভাল লাগে। রবিবারের জন্য ও অপেক্ষা করে। কারন রাফিনের ফোনগুলো রবিবারে আসে।
ইরার মনটা আজকাল তেমন ভাল নেই। ওর স্বামির চাকরি চলে যায় যায় অবস্থা। অফিসে পলিটিক্স, কে কাকে রেখে উপরে উঠতে পারে এই প্রতিযোগিতা। কিন্তু সুমন এইসবের ভিতর নেই। বেশকিছু লোক ছাটাই করা হবে। শুনা যাচ্ছে তাদের ভিতর সুমনের নামও আছে। ইরা সুমনকে কুপথে যেতে বলতে পারে না, কিন্তু আবার এটাও ও চায় না ওর চাকরিটা চলে যাক।
আজ অফিস থেকে খুব তাড়াতাড়ি ফিরেছে সুমন। হাতে একগুচ্ছ ফুল। সাদা ধবধবে ফুলের ভিতরে কয়েকটা লালা ফুল গুজা। ইরা হাসিমুখে বলে, কি ব্যাপার ফুল কেন তোমার হাতে??
সুমন হেসেই উত্তর দেয়, এ অফিসে যেদিন জয়েন করি সেদিনো আমি ফুল এনেছিলাম। আজ চাকরি চলে গেছে তাই বলে কি আনব না। তোমার জন্য ফুলগুলো।
ইরার চোখ ভিজে গেছে। খুব চুপ চাপ স্বভাবের ভাল মানুষ তার স্বামি।আর তার আজ এ কি দশা? ভাল মানুষ গুলোর এমন হয় কেন??
প্রায় একমাস হয়ে গেল সুমনের চাকরি নেই। তিনটা টিউশনি পড়াচ্ছে। এ দিয়ে কি সংসার চলে? বাসা ভাড়াই তো দিতে পারবে না। বাজার করতে কষ্ট হয়। আর বচ্চা ছেলেটার কাপড় গুলো পুরনো হয়ে গেছে। সুমন নিজেকে আর নিতে পারছে না। আচ্ছা আত্মহত্যা করলে কেমন হয় ও ভাবছে।

কাজের প্রচুর চাপ রাফিনের। এমনকি বন্ধর দিনেও কাজ করতে হচ্ছে। অন্য দেশের মানুষ এত বড় কম্পানির সিইও হতে পারে না। গ্রিন কার্ড না পেলে রাফিনও হতে পারত না। তবে রাফিন অলস না। আর সময়ের কাজ একটু আগেই করে ফেলে। যে কাজগুলোও এখন না করলেও চলবে সে কাজগুলও এখন করে রাখবে। আজ রবিবার আজ কিছু জরুরি মিটিং ডেকেছে রাফিন। সবার আগেই ও অফিসে চলে এসেছে। হঠাৎ একটা টেক্সট দেখেল মোবাইলে।
"আমি খুব অভাবে আছি রাফিন। তোমায় না বলে পারলাম না। আমার স্বামি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডায়রি পড়ে আমি জানলাম। ভাল থেকো।"

রাফিন ফোনটা কানের কাছে নিয়ে বলে দিল আজ মিটিং ক্যানসেল। রাফিনের ব্যাংক আজ বন্ধ। এটিএম কার্ড দিয়ে ডলার তুলতে পারবে কিন্তু পাঠাতে পারবে না। রাফিন খুব ছটফট করছে। সুমনকে যে ভাবেই হোক বাচাতে হবে। সুমন যে ইরার ভালবাসা। রফিন কখনও ইরার ভালবাসার জিনিষ নষ্ট হতে দিবে না।

পরদিন ইরার একাউন্টে রাফিনের জমানো সবগুলো ডলার দিয়ে দিল। এই ডলার গুলো রাফিনের আবারো হবে। কারন ও ভাল বেতন পায়। গাড়ি, এমনকি থাকার যায়গাটাও কম্পানির। দুর থেকে তার ভালবাসাটা তো বেচে থাক। রাফিন যে তাকে অল্পএকটু ভালবাসে!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৮
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×