দৈনিক কালরে কণ্ঠে পরম শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী'র একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। লেখার বিষয়বস্তু হলো সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্য "দেশ এখন বাজিকরদের হাতে"। তাঁর লেখার মন্তব্য করা ধৃষ্ষ্টতা ছাড়া কিছু নয়। তবে বাজিকর বিএনপি-জামায়াত সুষ্টি করেছে বা তাদের আমলে টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের আমলেও এসব হজম করতে হবে জনগণকে এটা বোধহয় ঠিক না। তাছাড়া দেশের ভেতরে যা ঘটাচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ তা কিন্তু তারেক জিয়ার হাওয়া ভবনকে ছঁতে আর বেশি সময় লাগবে না। মাহমুদুর রহমান না হয় রাজনৈতিক ভুঁইফোড় সম্পাদক, মতিউর রহমানতো তা নন। তাহলে তাঁকে সংসদে তলব করার মতো বক্তব্য প্রদান এটাতো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি ছিল বলে নিজামী, খালেদা ও বাবর বলতেন। এখন শেখ হাসিনার উপদেস্টারা বলছেন "পাবনার প্রশাসনের কর্কর্তারা কেঁদেছেন বলে যে রিপোর্ট ছাপা বা প্রচার হয়েছে তা মিডিয়ার সৃষ্টি"। বিএনপি-জামায়াত এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্যটা কোখায়? দেশে যে নিয়োগ বাণিজ্য ও নিয়োগ কেন্দ্রিক সরকারদলীয় ক্যাডারদের তান্ডব তা কোন অংশে কম বিএনপি-জামায়াত আমলের তুলনায়। আহসানউল্যাহ মাস্টার, মমতাজউদ্দিন, ডা. আয়নাল, ড. হুমায়ুন আজাদ প্রভৃতি হত্যাকান্ড, সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন, সংখ্যালঘু হত্যা-নির্যাতন, ২১ আগস্টের ঘটনাগুলি এবং জঙ্গিবাদ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের। যার ফলতো জনগণই দিয়েছেন ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে। আর আমি করেছি বলেই আপনিও করবেন এটা ন্যায়পরায়ণ বা সুশাসনের লক্ষণ নয়। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে বিএনপি-জামায়াত জ্যেষ্ঠতা লংঘণ করেছে তা আওয়ামী লীগকেও করতে হবে এটা কোন নীতির মধ্যে পড়ে। কেন হত্যা-খুন, রাহাজানি বেড়েই চলেছে? আসলে সমস্যাটা অন্যখানে। প্রকৃতঅর্থে গণতন্ত্রের চর্চা ছাড়া সুশাসন বিনির্মাণ করা যায় না। আর আওয়ামী লীগ বলি বিএনপি বলি কোখায় আছে প্রকৃতঅর্থে গণতন্ত্রের চর্চা? বুদ্ধি্জীবী, সাংবাদিক, ডাক্তার, আইনজীবী এবং অন্যান্য পেশাজীবী সর্বত্রই দলবাজি আর দলবাজি। এই দলবাজি, আর গণতন্ত্র চর্চাহীনতার সংস্কৃতি, প্রতিহিংসা-প্রতিঘাতের রাজনীতির শেষ কি নেই?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৩:০৮