somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“নির্বাসিত জীবনের কথা” ॥ মানবাধিকারের অন্তরালে!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাহাঙ্গীর আলম আকাশ (পেন-আকাশ) ॥ মানুষের অধিকার বা মানবাধিকার বিষয়টি অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই ধারণাটি শতভাগ সার্বজনীন। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার অধিকার ছাড়া কী মানবাধিকার কল্পনা করা যায়? সকল বন্ধনাদি হতে মুক্ততার নামই মানবাধিকার। এটি মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতা। যা সকল মানুষ সমভাবে পাবার বা ভোগ করার অধিকার রাখে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকার সবকিছুই মানবাধিকার।
আইনের চোখে মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে-বেঁচে থাকার স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, কাজ করার স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের স্বাধীনতা, খাবারের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, এবং সমঅধিকার। কু-শাসন, বৈষম্য, অনাচার, অবিচার, অনিয়ম, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ তথা ধর্মের নামে চলমান চরমপন্থা, সন্ত্রাস, স্বৈরাচারী মনোভাবসহ নানাভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে মানব অধিকার। উল্লিখিত কারণে প্রতিনিয়ত দেশে দেশে অধিকারহারা হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ফলে বিশ্বময় বাড়ছে খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসাহীন, গৃহহারা, বস্ত্রহীন মানুষের মিছিল।
এশিয়া থেকে আফ্রিকা, আমেরিকা থেকে ইউরোপ পৃথিবীর প্রায় সবখানেই মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা লক্ষ্যণীয়। পার্থক্য শুধু এই-কোথাও কম আর কোথাও বেশি। মানবাধিকারের সূচকে এশিয়া-আফ্রিকার অবস্থান আমেরিকা বা ইউরোপের তুলনায় খুবই শোচনীয়। এশিয়া-আফ্রিকার বহু দেশ আপদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। যেসব দেশে নেই প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা। নেই বিজ্ঞানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিচালনায় প্রযুক্তির ব্যবহার। তদুপরি আছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধকল, রাজনৈতিক অস্থিরতা, হানাহানি, বিভাজনসহ নানান নেতিবাচক উপসর্গ। এর বাইরেও আছে স্বৈরশাসকদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা কিংবা মানবাধিকার রক্ষার নামে ধনী দেশ ও জোটগুলির মানবাধিকার লংঘন।
মানবাধিকার রক্ষার অন্তরালে আন্ত:শক্তি এবং বহি:শক্তি উভয় শক্তির মাধ্যমেই কেড়ে নেয়া হচ্ছে মানুষের অধিকার! এক্ষেত্রে অধিকার লংঘণকারিদেরকে নানান কৌশল ও ছলছুঁতোর আশ্রয় নিতে দেখা যায়। মানবাধিকার যেমন একটি সার্বজনীন ব্যাপার তেমনি আজকে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার ইস্যুটি একটি সার্বজনীন ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সুবিধাবাদ, দুর্নীতি ও ক্ষমতাপ্রিয় রাষ্ট্রনায়ক এবং তাদের দোসরদের কাছে অবশ্য এর ভিন্ন অর্থ। এদের কাছে ক্ষমতা, পরিবার এবং নিজস্ব আরাম-আয়াশই মুখ্য কথা।
মানুষের অধিকারকে ঘিরে দুইটি পক্ষ সবসময় তৎপর। একটি পক্ষ অধিকার লংঘণকারি অন্য পক্ষটি অধিকার রক্ষাকারি। বাস্তবে আমরা দেখি, উভয়পক্ষই মানবাধিকার লংঘণ করে! একদিকে নির্যাতন, অনিয়ম, অবিচার এবং নানান কালো আইন খর্ব করছে মানুষের অধিকার। গণতন্ত্রে বিশ্বাসহীনতা কিংবা গণতন্ত্রের চর্চা নেই এমন রাষ্ট্রগুলিতে চলছে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা। অন্যদিকে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, গোলাবারুদের ব্যবহার কেড়ে নিচ্ছে নিরীহ মানুষের প্রাণ। নারী ও শিশুরাও এর থেকে রেহাই পায়না। যুদ্ধ-বিগ্রহের লেলিহান শিখায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নগর, বন্দর, সভ্যতা, সংস্কৃতি। বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন-যাপন প্রণালী। বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শান্তি, সৌহাদ্য। এর দায় কে নেবে?
আর যাই হোক, বোমা ও অস্ত্রের ব্যবহার কখনও অধিকার বা মানুষ কাউকেই রক্ষা করতে পারেনা। পারে শুধু শান্তি ও মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে। অথচ এই সহজ ব্যাপারটি আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনাকারি ইনটেলেকচুয়ালরা বুঝতে চায়না বা বুঝতে পারেনা! মানবাধিকার ও মানুষ রক্ষার নামে তাদের কাছে কখনও কখনও অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং আধিপত্যবিস্তার বড় হয়ে ওঠে। যতদিন স্বার্থের আদান প্রদান ততদিন কোন সমস্যা নেই। স্বৈরাচারী রাষ্ট্রনায়কই তখন ভালো! কিন্তু যখনই স্বার্থের টানাপোড়েন তখনই স্বৈরাচারি রাষ্ট্রনায়ক মানুষের জন্য, মানবাধিকারের জন্য বিপদজনক। এই তত্ত্বটা যে কোনভাবেই সার্বজনীন মানবাধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় তা কী তারা বোঝে না?
মানুষ জানে, স্বৈরাচারি ও মানবাধিকার লংঘণকারি রাষ্ট্রনায়করা আধিপত্যবিস্তারকারি কোন কোন রাষ্ট্রনায়কের একদা সুহৃদও বটে। তৃতীয়বিশ্বের দেশে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা জায়েজ বা বৈধ নয়! এই হত্যা হোক না কেন কোন দাগী সন্ত্রাসীকে। কিন্তু প্রথম বিশ্বের কোন রাষ্ট্র বিনাবিচারে কাউকে হত্যা করলে সেটা কিন্তু মানবাধিকার লংঘণের পর্যায়ে পড়েনা! এই স্ববিরোধী এবং বৈষম্যমূলক মতবাদ বা আচরণ কী সমাজে, বিশ্বে শান্তি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে? মজার ব্যাপার হলো-বিনাবিচারে মানুষ হত্যার ফরমুলা কিন্তু আবার একই। সেটা তৃতীয় বিশ্বেই ঘটুক আর প্রথম বিশ্বের দ্বারাই চলুক।
আজকের আলোচনার মূখ্য বিষয় মূলত: আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মানবাধিকারচর্চা নিয়ে। সেখানে নানাভাবে মানুষের অধিকার পদদলিত, লংঘিত হচ্ছে। রাষ্ট্র, রাষ্ট্রীয় বাহিনী, সন্ত্রাসী চক্র মানুষের মর্যাদা, অধিকার হরণকারির ভূমিকায়। এখানে মানবাধিকার সার্বজনীনতা পায়নি, রাজনীতির দ্বারা বিভক্ত মানবাধিকার। ব্যক্তি এবং তার রাজনৈতিক মতাদর্শের কাছে পরাজিত মানুষের অধিকার। আবার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেউ কেউ মানবাধিকারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। ব্যক্তিগত কারণে কেউ কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার শিকার হলেও তাতে মানবাধিকারের রং লাগানো হয়। এমন একটি ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে বাংলাদেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁতে।
প্রিয় পাঠক আপনাদের বিবেচনা এবং পর্যবেক্ষণের জন্য ঘটনাটির বিস্তারিত তুলে ধরছি। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হিউম্যান রাইটস (বিআইএচআর) এর নির্বাহী পরিচালক মো. শাহনুর ইসলাম (ওরফে সৈকত) ১০ জানুয়ারি, ২০১১ ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তিনি লিখেছেন যে, “৯ জানুয়ারি দুপুর ১.৩০ মিনিটের সময় একটি মানবাধিকার লংঘনজনিত ঘটনার তথ্যানুসন্ধান করতে আমার দু’জন সহকারী মো. সোহেল রানা ও মো. উজ্জল হোসেন, তথ্যানুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া সংলগ্ন ঝারগাঁও/বানিয়া গ্রামে তথাকথিত ভিক্টিম ইউনুস ও জলিলের বাসায় যাই। ভিক্টিম ইউনুস ও জলিলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অস্ত্রের মুখে (রিভলভার জাতীয়) তাদের সঙ্গে থাকা একটি আসুস ব্যান্ডের ল্যাপটপ যার আনুমানিক মূল্য-১৪০,০০০/- টাকা, ১টি সনি ব্রান্ডের স্টীল ক্যামেরা যার আনুমানিক মূল্য-৩৫,০০০/- টাকা ১টি সনি ব্রান্ডের ভিডিও ক্যামেরা যার আনুমানিক মূল্য-৮৬,০০০/- টাকা ১টি সনি ব্রান্ডের গোপন ভিডিও পেন ক্যামেরা যার আনুমানিক মূল্য ২১,০০০/- টাকা ২টি নকিয়া ব্রান্ডের মোবাইল ফোন যাহার আনুমানিক মূল্য-২২,০০০/-টাকা, দুইটি স্যামসাং ব্রান্ডের মোবাইল ফোন যার আনুমানিক মূল্য ১৬,০০০/- টাকা, ১টি পেনড্রাইভ যার মূল্য ১৮০০/-টাকা, নগত আনুমানিক ১৭,০০০/-টাকাসহ আমার বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা বার এ্যাসোসিয়েশন ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় তাদের বাধা দিতে গেলে তারা শাহনুরসহ তার দুই সহযোগিকে মারপিট করে এবং হত্যা করার হুমকি দেয়।”
চাঞ্চল্যকর এই বিষয়টি আমার নজরে আসে গত মে মাসে। জার্মান পর্ব শেষ করে আমি তখন অষ্ট্রিয়ায়। নেদারল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন “গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স” (জিএইচআরডি) এর হিউম্যান রাইটস অফিসার মিস. জেনি লুন্ডস্ট্রোম। সেই আমাকে জনাব শাহনুরের অভিযোগনামাটি পাঠিয়েছিলেন ইংরেজীতে অনুবাদ করে দেবার জন্য। যেখানে শুদ্ধ করে ইংরেজী বলতে, পড়তে বা লিখতেই পারি না সেখানে আবার অনুবাদ। আমার মতো করে আমি তা করার চেষ্টা করেছি। জেনিদের কাছে আমি ব্যক্তিগতভাবে ঋণী। বন্ধুবৎসল, মানবিক জেনি এশিয়া বিশেষ করে বাংলাদেশের মানবাধিকারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, ইন্টারন্যাশনাল পেন, রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারস (আরএসএফ), পেন-নরওয়ে, কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিষ্টস (সিপিজে), হামবুর্গ ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল হাউজ ডেয়ার আউটোরেন-গ্রাজ, অষ্ট্রিয়া, ইন্টারন্যাশনাল সিটিজ অফ রিফিউজি নেটওয়াক (ইকর্র্ণ), দোহা সেন্টার, ফ্রিডম হাউজ প্রভৃতির কাছে আমি ঋণী এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আরও কৃতজ্ঞ জিএইচআরডি’র প্রতি। জার্মান মানবাধিকারকর্মী সাংবাদিক বেনহার্ড হারলেইন, মানবাধিকারকর্মী-লেখক মিরিয়াম আলেকজোভিজ, পেন ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় মারিয়ান বোর্ডসফোর্ট, ইকর্ণের প্রিয় এলিজাবেথ ডিইভিক’র কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আমি আরও কৃতজ্ঞ বিসিডিজেসির মাঈনুল ইসলাম খান, সিডিএ’র উইলিয়াম গোমেজ এর কাছে।
যাহোক, জনাব শাহনুরের অভিযোগটি পড়েই আমার একটা খটকা লাগলো। এতবড় ঘটনা অথচ বাংলাদেশের মিডিয়া এড়িয়ে গেলো। বিআইএচআর’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক বাংলাদেশে বর্তমান সরকারি দল আওয়ামী লীগ দলীয় প্রভাবশালী সংসদ সদস্য। জনাব শাহনুরের রাজনৈতিক মতাদর্শও একই। দীর্ঘ দুই দশকের সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত থাকা মন আমার। কোন বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিলে তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান চালিয়ে সত্য অন্বেষণ করাই তো একজন সাংবাদিকের কাজ। পরিচিত সহকর্মী সাংবাদিক বন্ধুদের কাছে সাহায্যে প্রার্থনা করলাম। তারাও হাত বাড়িয়ে দিলেন। সংগ্রহ করলাম সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার ফোন নম্বর। প্রথমেই ফোন করলাম ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব গোপাল চক্রবর্ত্তীর কাছে। জানতে চাইলাম শাহনুর ইসলামের অভিযোগের বিষয়ে। তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন আমি কোন পক্ষের হয়ে ফোন করেছি উনাকে। আমি সরাসরি জানিয়ে দিলাম সত্য জানতে এবং আমি সবসময় সত্যের পক্ষে। এই মামলা বিষয়ে (শাহনুরের অভিযোগ) অনেক চাপ রয়েছে। কিসের চাপ এবং কেন সেসবের কোন জবাব দিলেন না তিনি। বরং তিনি মামলার তদন্তকারি পুলিশ সদস্যের মোবাইল নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিলেন আমাকে। তদন্ত কর্মকর্তা কোমল মোহন চাকী বললেন, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না! ফলে আমার সন্দেহের ডালপালা বাড়তে থাকলো। সিদ্ধান্ত নিলাম বিষয়টির অনুসন্ধান করবো। আমার অনুরোধে সাড়া দিলেন ঠাকুরগাঁ ও তার পাশ্ববর্তী জেলা শহর পঞ্চগড়ের কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধু। তারাই ঠাকুরগাঁও জেলায় কর্মরত দুইজন নামকরা সাংবাদিক এবং একজন আইনজীবী সমন্বয়ে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করলেন।
কমিটির সদস্যরা সরজমিনে পুঙ্খানুপঙ্খু অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনাটি উৎঘাটনের চেষ্টা করেছেন। কমিটি যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে আমার কাছে তাও হুবহু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। “ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঝারগাঁও/বানিয়া গ্রামে মানবাধিকার লংঘনজনিত কোন ঘটনার কথা উক্ত এলাকার মানুষ অদ্যাবধি অবহিত নয়। তারা জানেন না মানবাধিকার লংঘনজনিত কোন ঘটনার কথা। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে কথাবার্তার এক পর্যায়ে এ বিষয়টি পরিস্কার হয় যে, উক্ত এলাকাটিতে একটি চক্র জাল ডলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই জাল ডলার ব্যবসার সংগে জড়িতরা বিভিন্ন জনকে বিভিন্নভাবে প্রতারিত করে। এই প্রতারনার অংশ হিসেবে বাজার মূল্যের চাইতে তুলনামূলকভাবে অনেক কম মূল্যে আমেরিকান ডলার ক্রয় করার প্রলোভনে দুর দুরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসে। এখানে অনেকের কাছ থেকে টাকা পয়সা সহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়ার গল্প লোকমূখে প্রচলিত আছে। পুলিশের নথিতেও এধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা গত ২/৩ বছরে পরিলক্ষিত হয়। শাহনুর ইসলামের ঘটনা জানতে চাইতে উক্ত গ্রাম সংলগ্ন ফুটানি বাজারে ঔষুধের দোকানে অবস্থানরত পল্লী চিকিৎসক বিশ্বনাথ রায় (৩০), পিতা-কটকু রাম রায় তদন্ত দলকে বলেন, মানবাধিকার লংঘনজনিত কোন ঘটনা এই গ্রাম সহ আশপাশের গ্রামে ঘটে থাকলে এটা আমাদের জানার কথা ছিল। কারণ চিকিৎসার বাইরেও অবসর সময়ে এই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে এমনকি তাদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা হয়। এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় এ অঞ্চলে ঘটে থাকলে এটা অবশ্যই জানা যেত। তিনি আরো বলেন, তবে এই বাজার থেকে ৫০০/৭০০ মিটার দুরে জাল ডলার নিতে এসে কে বা কারা দুর এলাকার মানুষকে প্রতারনা করেছে বলে তিনি এলাকাবাসীর কাছে শুনেছেন। একই এলাকার কবিরুল ইসলামের পুত্র ২১ বছর বয়সী পিয়ার আলী বলেন, কিছুদিন আগ পর্যন্ত এই এলাকা এবং এর নিকটস্থ কয়েকটি গ্রামে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে ডলার কিনতে এসে প্রতারিত হয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি এটা তিনি লোকমুখে শুনেছেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রতারনার অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক কোমল মোহন চাকি হামিদুল ইসলাম নামে মধ্য বয়সী এক মানুষকে ঝারগাঁও গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে আনে। গ্রেফতারকৃত হামিদুল ইসলামের সঙ্গে তদন্ত দল কথা বলেন। তিনি জানান, উক্ত ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। যেহেতু তার বাড়ি সেদিন সম্পূর্ণ ফাঁকা ছিল সেহেতু তার বাড়িকে প্রতারনার স্থান হিসেবে কেউ ব্যবহার করে থাকলে সেটা তিনি বলতে পারেন না। একই এলাকার মকসেদ (৩০), পিতা-কালু মিয়া, তারা মিয়া (৬০), পিতা-ফালু শেখ সহ আরো অনেকে বলেন, মানবাধিকার লংঘনজনিত কোন ঘটনা এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে তা তারা জানেন না। তবে গত ২ বছরে জাল ডলার ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনায় বিভিন্ন মানুষ প্রতারিত হয়েছে এমন গল্প লোকমুখে তারা শুনেছেন। জনাব শাহনুরের অভিযোগে ঐ গ্রামের ইউনুস ও জলিল নামে যে দু’টি লোককে আসামী করা হয়েছে বাস্তবিক অর্থে তারা প্রত্যন্ত একটি গ্রামের সত্তরোর্দ্ধ বৃদ্ধ। যাদের স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা নেই বললেই চলে। তাদের দ্বারা ছিনতাই কিংবা সেই জাতীয় কোন অপরাধ সংঘটনের কোন সামর্থ্য তাদের আছে বাস্তবে তা পরিলক্ষিত হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁও থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক কমল মোহন চাকি তদন্ত দলকে বলেন, ঘটনার পুরোপুরি তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন ডলার ব্যবসার জন্য খ্যাত সেই এলাকায় কম দামে ডলার কিনতে এসে এর আগে অনেকেই অর্থ সহ দামি দ্রব্যাদি হারিয়েছেন। তিনি বলেন, শাহনুর ইসলামকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ও মিথ্যা ঘটনা বর্ণনা করে এ এলাকায় কোন দুষ্টচক্র আনতে পারে!”
এই হলো বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী বা নেতার কর্মকান্ড! জনাব শাহনুর ইসলাম শুধু একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী প্রধানই নন তিনি সুইজাল্যান্ডভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠন কর্তৃক “জাষ্টিজ মেকার” খেতাবে ভূষিত। বিবেকবান, শ্রদ্ধেয় পাঠক উপরিল্লিখিত ঘটনার বিষয়ে আমি আর কোন মন্তব্য করতে চাই না। আপনারাই বিচার-পর্যবেক্ষণ করুণ প্রকৃত সত্যটা কী হতে পারে? আমি শুধু এটুকু বলতে পারি যে, এই ‘তথাকথিত’ জাষ্টিজ মেকার ব্যক্তিটি মিথ্যা বলতে বেশ পটু! মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হবার আগে জার্মানিতে আসার পূর্বে আমি তার মিথ্যাচার প্রত্যক্ষ করেছি। সেব্যাপারেও আলোকপাত করা দরকার মনে করছি।
২০০৭ সালে আমি অন্যায়ভাবে যখন গ্রেফতার হই। ওই সময় আমি সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিআরসিটির আঞ্চলিক সমন্বয়কারির দায়িত্ব পালন করছিলাম। জনাব শাহনুর আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রচার করলেন যে, তার সংগঠন বিআইএইচআর বা বিআরসিটিই আমাকে আইনগত সহায়তা দিচ্ছেন। একেবারেই ডাহা মিথ্যা কাহিনী। সত্যটা একেবারেই উল্টো। আমার বিরুদ্ধে রাজশাহীতে সিরিজ রাজনৈতিক হয়রাণিমূলক মামলা চলছিল। এগুলির বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে লড়াই করার জন্য সকল প্রকার কাগজপত্র বিআরসিটির আইনজীবী জনাব রুবেলের হাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ ফাইল করবো, কাল করবো এমন করতে করতে কালক্ষেপণ হতে থাকলো। আমার শংকা, উদ্বিঘ্নতা বাড়ছেই। এই অবস্থায় আমি রাজশাহীর আইনজীবী সুশান্তর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তিনি আমাকে ঢাকা হাইকোর্টে প্রাকটিস করেন এমন একজন আইনজীবীর সন্ধান জানালেন। ওই আইনজীবীর বাড়ি বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে। অ্যাডভোকেট জাহিদ আমার কাছ থেকে ৬০০০ টাকা নিলেন। তিনিও আমাকে ঘুরাতে থাকলেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেননি। দুই সপ্তাহ পরে তিনি আমাকে তিন হাজার টাকা ফিরিয়ে দিলেন। অন্যদিকে দেশের একজন নামকরা আইনজীবী মানবাধিকারকর্মীর কাছে গিয়েছিলাম আইনগত সাহায্য নিতে। তিনিও আমাকে নিরাশ করেছিলেন। তিনিই আবার ইউরোপ-আমেরিকায় এসে মানবাধিকারের কথা বলেন। এই হলো বাংলাদেশের আইনজীবী! এই দেশে আবার মোহাম্মদ হোসেন ও সৈয়দ মামুন মাহবুবদের মতো দরদী আইনজীবীরাও আছেন।
দেশজুড়ে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্যাডারদের নানান অপকর্ম। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তাদের অপকর্মের তালিকায় যুক্ত হয় নারী ধর্ষণ ও সংখ্যালঘু-আদিবাসি নির্যাতন। পেশাদার একজন সাংবাদিক হিসেবে ঘটনার পেছনের সত্য তথ্য তুলে ধরেছি দেশবাসির সামনে। আমার রিপোর্টিংয়ে মুগ্ধ হয়ে বিআরসিটির প্রতিষ্ঠাতা আকরাম হোসেন চৌধুরী ২০০২ সালে আমাকে প্রস্তাব দেন বিআরসিটির সঙ্গে কাজ করার। বাংলাদেশে একটি পত্রিকা মাধ্যমে কাজ করে সংসার চালানোটা কঠিন। সেইকারণে আমি উনার প্রস্তাবটা লুফে নিলাম। যদিও আমি তখন ব্যাচেলর ছিলাম। বিআরসিটির আঞ্চলিক সমন্বয়কারির দায়িত্ব পালন করার জন্য আমাকে প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা সম্মানি দেয়া হবে। পাশাপাশি বিআরসিটি কর্তৃক পরিচালিত টাস্কফোর্স এগেইনেষ্ট টর্চার (টিএফটি)’র জন্য দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি কার্যালয় থাকবে। যার একটিতে টিএফটির কার্যক্রম চলবে এবং অন্যটি আমার থাকার জন্য। এই শর্তে চুক্তিনামা সই হলো বিআরসিটির সভাপতি ডা. খলিলুর রহমান ও আমার মধ্যে।
বিআরসিটির কাজ হলো রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের ঘটনাগুলির তথ্যানুসন্ধান করা। সাংবাদিকতার সঙ্গে মানবাধিকারের একটা মিল খুঁজে পাই আমি। তাইতো যথাযথভাবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করতে থাকি। এরই মধ্যে ঘটে গেলো আমার জীবনের সবচেয়ে যন্ত্রণাবিদ্ধ ঘটনাটি। আমাকে গ্রেফতার, নির্যাতন ও জেলে পুরে দিলো সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলির প্রচেষ্টায় ২৮ দিন পর জেল থেকে ছাড়া পেলাম। কিন্তু মুক্তি পেলাম না ষড়যন্ত্র আর হয়রাণি থেকে। ফলে রাজশাহী ছেড়ে পালিয়ে গেলাম রাজধানী ঢাকায়। সেখানে বিআরসিটি কর্তৃক পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি হলাম। সেখানে ভর্তির পরপরই বিআরসিটির পক্ষ থেকে আমাকে নির্যাতিত সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েকজন মানবাধিকারকর্মী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিচারপতি কে এম সেবহান, আকরাম চৌধুরী, তার স্ত্রী মাহফুজা আকরামও উপস্থিত ছিলেন।
বিআইএইচআর এবং বিআরসিটি মূলত: মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। উভয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আকরাম চৌধুরী। বিআরসিটির মাসিক প্রকাশনা “মানবাধিকার অনুসন্ধানী”। আমি যদি সহায়তা করি তাহলে এই পত্রিকাটি পুনরায় নিয়মিত প্রকাশ করা সম্ভব। এই মন্তব্য করলেন আকরাম চৌধুরী। এজন্য তিনি আমাকে প্রস্তাব দিলেন এটি নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার। এর প্রকাশনা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। কি কারণে তা জানি না। প্রস্তাবমতো তিনি আমাকে বিআরসিটি অফিসে থাকার জন্য একটা জায়গা দিলেন। এবং সেখানেই আমার খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হলো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মতো। পারিশ্রমিক বা সম্মানি হিসেবে মানবাধিকার অনুসন্ধানীর সংখ্যাপ্রতি ১৫০০০ টাকা দিবেন বলে আকরাম চৌধুরী অঙ্গিকার করলেন। এই প্রস্তাব ও প্রতিশ্রুতির অবশ্য লিখিত কোন রুপ ছিল না। আমি সেখানে দিন রাত পরিশ্রম করে মাসিক অনুসন্ধানীর চাকা সচল করলাম। রিপোর্ট, ফিচার তৈরী করা, সম্পাদীয় লেখা খেকে শুরু করে কম্পোজ ও প্রুফ দেখা সবকিছুই আমাকে করতে হতো। আমি ঢাকায়, আমার পরিবার (স্ত্রী ও শিশু সন্তান) রাজশাহীতে। মাসিক অনুসন্ধানীর মোট ৫টি সংখ্যা প্রকাশ করে দিয়েছিলাম। বিআরসিটির তরফ থেকে আমাকে ২১২০০ টাকা প্রদান করা হয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৫৩৩০০ টাকা এখনও আমি পাই। তবে এই টাকার বিষয়ে আমার কোন দাবি নেই। কষ্ট শুধু একটাই সেটা হলো-একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান হয়ে কী করে একজন নির্যাতিত-নিষ্পেষিত সাংবাদিককে মিথ্যা অভিযোগে অপমান ও অপদস্ত করা যায়?
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। বিআরসিটির সুনিরাপদ ঢাকা অফিসের ভেতর থেকে চুরি হলো আমার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো “জঙ্গিবাদ” এর ওপর লেখা আমার বইয়ের মূল পান্ডুলিপি। এছাড়া আমার ব্যবহার করা মোবাইল সেটটিও হারালো। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও রহজ্যজনকভাবে এই ডাকাতি’র! কাজটি ঘটে গেলো। বিষয়টি জানানো হলো বিআরসিটির কর্ণধার আকরাম হোসেন চৌধুরী, তার পত্নী মাহফুজা আকরাম, শাহনুর ইসলামসহ বিআরসিটি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সবাইকে। কে এই ঘটনার নায়ক কী তার উদ্দেশ্য? সবাই পরিস্কার ছিল সবার কাছেই। কিন্তু বিআরসিটি কর্ণধারের দক্ষিণহস্ত এক নারীর খুবই প্রিয় সেই চোরটির কিছুই হলো না। উল্টো অভিযোগ করেই ফেসে গিয়েছিলাম প্রায়। নোয়াখালির সেই ব্যক্তিটি শেষ পর্যন্ত আমার জীবন কেড়ে নেয়ার হুমকি দিলো। বললো কাগজপত্র চুরি যাওয়ার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলো আমার নাকি লাশ পড়ে যাবে! কাজেই জীবন বড় নাকি গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি বড়? স্বভাবত:ই জীবনের মায়ার কাছে পরাজিত হলো গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস’র প্রিয়তা বা প্রয়োজনীয়তা। আজও আমি সেই ডকুমেন্টসগুলি পাইনি। শুধু যে আমার জিনিসপত্রই হারিয়েছিল তা নয়। আমার ঘটনার ক’দিন পরেই এক বিদেশীনির দামী মোবাইল সেটটিও চুরি হয় সেই বিআরসিটি অফিসের ভেতর থেকেই। সেটিও পরবর্তীতে পাওয়া গিয়েছিল বলে শুনিনি।
রাজশাহীর আদালতে আমার বিরুদ্ধে প্যারামিলিটারি এলিট ফোর্স র‌্যাব (rab) ও রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের করানো রাজনৈতিক হয়রাণিমূলক মামলাগুলি চলছে। এরইমধ্যে বিআরসিটির চেয়ারম্যান ডা. খলিল আদালতে আরেকটি মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, আমি কয়েক বছর ধরে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করিনি এবং বাড়িও ছাড়ছি না। অথচ আমাকে বাড়ি ছাড়ার জন্য কখনই কিছু বলা হয়নি। এখানে বলে রাখা ভালো যে, ডা. খলিল হলেন জনাব আকরাম চৌধুরীর মামাশ্বশুর। যে সংগঠনের হয়ে আমি ছয় বছর ধরে জীবনের ওপর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলাম যেসই সংগঠনের সভাপতি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন আদালতে। সরকারি স্ট্যাম্পের ওপর ডা. খলিলের সঙ্গে আমার যে লিখিত চুক্তি হয়েছিল তা কপি আদালতে দাখিল করা হয়। এরপর আদালতের কাছে পরিস্কার হয় যে, ডা. খলিলের অভিযোগটি কতটা অসাঢ়! শেষ পর্যন্ত টিএফটির কার্যালয়ের আবাসস্থলটি ছেড়ে দেয় আমার স্ত্রী ও শিশুসন্তান। এই হলো দেশের মানবাধিকার নেতাদের আচরণ!
অস্বাভাবিক-অনাকাঙ্খিত দুই বছরের জরুরি অবস্থার অবসান হলো ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে নিয়েছে। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় মানবাধিকার নেতা আকরাম ভাই (আকরাম চৌধুরী) সংসদ সদস্য। সবমিলিয়ে যখন আশা জাগছে এই ভেবে যে কালো মেঘ এবার বুঝি কেটে যাবে! কিন্তু না, ষড়যন্ত্রের কালোছায়া আবৃত করে ফেলছিল আমাকে ও আমার পরিবারকে। রাজশাহীর মেয়র এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা জনাব লিটন, একই দলের নমিনেশনে সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য আকরাম চৌধুরী এবং রাষ্ট্রীয় এলিট ফোর্স র‌্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন ((rab) সবই কী একই সুতোয় বাঁধা? হায় বাংলাদেশ!
বিআরসিটির আঞ্চলিক সমন্বয়কারি হিসেবে যোগদানের পরই আমার উদ্যোগে বিআরসিটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ব্যাপক কভারেজ পায়। নির্যাতিতদের জন্য ট্রিটমেন্ট ক্লিনিকের আয়োজন এবং নির্যাতিতদের সংগঠিত করে সমাবেশ করার দায়িত্বটিও আমিই পালন করেছি। কানসাটের সেই নির্যাতিতদের জন্য বিআরসিটির ট্রিটমেন্ট ক্লিনিক আয়োজন করতে হয় আমাকেই। ২০০৬ সালের ২৬ জুন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে নির্যাতিতদের একটি সমাবেশ হয়। সেই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্যাতিত নারী-শিশু ও পুরুষদের রাজশাহী অঞ্চল থেকে ঢাকায় আনা-নেয়ার গুরু দায়িত্বটিও কিন্তু এই অধমই পালন করেছিল। এই নির্যাতিতদের সংগঠিত করতে গিয়ে এই অভাগাকে মোটরসাইকেলে চেপে রাত-দিন ছুটে বেড়াতে হয়েছে সেই দূর্গম আত্রাই, রানীনগর, বাগমারা, নলডাঙ্গা এলাকায়। স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে ঘরে একা ফেলে চষে বেড়িয়েছি রাজশাহী অঞ্চলের নির্যাতিতদের ঘরে ঘরে। বিনিময়ে বিআরসিটি থেকে পেলাম মিথ্যা দুর্নাম আর বদনামের কালিমা। এতে আমার কোন রাগ কিংবা আক্ষেপ নেই। তবুও আমি তাদের ওপর কৃতজ্ঞ! তারাইতো আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল, চিকিৎসা দিয়েছিল জেলখানার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার পর। হোক না সেটা তাদের তহবিল বা প্রকল্পের দায়িত্ব-কর্তব্য। দেশেতো আরও অনেক সংগঠন ছিল! যেকারণেই আর যেভাবেই হোক তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল! এটাতো আর অস্বীকার করতে পারি না। কিন্তু নিষ্পেষিত সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীদের ওপর থেকে যখন দুর্যোগের ঘনঘটা বন্ধ হয়ে যাবার কথা তখনই হতাশার কালো মেঘে ঢেকে যায় আমার আশার আলো।
বাংলাদেশের আরেকটি মানবাধিকার সংগঠনের নাম ‘অধিকার’। এই সংগঠনটি ডানপন্থি রাজনীতির সমর্থনকারি! আমার ধারণা ছিল, তারা মানবাধিকারের কাজ করে সার্বজনীনভাবেই। কোন বিশেষ ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলন হতে পারে? এমনটা কখনই আমার কল্পনায় ছিল না। কিন্তু অধিকারের কর্মকান্ডে আমার ভুল ভাঙে। আমি অধিকারের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম বন্ধু উইলিয়াম গোমেজকে সঙ্গে নিয়ে। অধিকারকর্মী জনাব এলান ও জনাব কোরবানের সঙ্গে আমাদের কথা হয়। আমাদের অনুরোধ ছিল, অধিকার যাতে আমার উপর আনীত অভিযোগ (রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত), র‌্যাবের বর্বর নির্যাতন বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। কিন্তু এজন্য উনারা আমাকে অধিকার বরাবর আবেদন করতে বলেন। তাদের কথানুযায়ী আমি আবেদন করি। আড়াই পার হতে চললো। আজও তারা আমার আবেদনের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
দেশে থাকতেই ফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। অধিকারের অফিস থেকে আমাকে জানানো হয়, ‘আপনার বিষয়টি এখন সাবজুডিশ, তাই আমাদের (অধিকারের) কিছু করার নেই’। পরবর্তীতে এই অধিকারই দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিষয়ে জিহাদী মনোভাবে ঝাপিয়ে পড়ে। জনাব রহমানের বিষয়টিও একই অর্থে সাবজুডিশ। কারণটা অবশ্য সেটা নয়, কারণ রাজনৈতিক! মাহমুদুর রহমানের যে রাজনৈতিক মতাদর্শ সেই একই রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারি অধিকার! যে কারণে মাহমুদুর রহমানের বেলায় সাবজুডিশ বিষয়েও রিপোর্ট করা জায়েজ!
বাংলাদেশের মানবাধিকার ফিল্ডের আরেকটি অমানবিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিচয় আছে আমার। সেটি খুবই দু:খজনক। হাইকোর্টে প্রাকটিস করেন এমন একজন মানবাধিকারকর্মী যিনি একটি বিদেশী সংস্থার কাছ থেকে মাসিক সম্মানি পান। তিনি মানবাধিকার লংঘণের ঘটনার তথ্যানুসন্ধান করতে গিয়ে ভিক্টিমের কাছ থেকে যাতায়াত খরচ হাতিয়ে নেন। একই অভিযোগ ঢাকার আরেক মানবাধিকারকর্মীর বেলায়ও পাওয়া যায়। ঢাকাভিত্তিক আরেক মানবাধিকারনেত্রী জার্মানির একটি সংস্থা থেকে নিয়মিত ফান্ড পান। যিনি সংবাদপত্রে প্রকাশিত মানবাধিকার লংঘণের ঘটনাগুলির ক্লিপিংস সংগ্রহ ও তার ওপর ভিত্তি করেই বুলেটিন প্রকাশ করেই দায়িত্ব সারেন। রাজশাহীর একজন সংবাদকর্মী, যিনি আমার নির্যাতন সংশ্লিষ্ট ষড়যন্ত্রের অন্যতম অনেকের মধ্যে একজন। সেই ব্যক্তি এখন ঢাকার একটি পুরনো দৈনিকে কর্মরত। তার স্ত্রী একটি নারী সংগঠনের সদস্য। মানবাধিকার লংঘণের বিশেষ করে ধর্ষণ ঘটনাগুলিকে পুঁজি করে স্বামী-স্ত্রী মিলে অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জন করতো বলে অভিযোগ আছে। নির্যাতন ভিকিটিম ও অভিযুক্ত উভয়পক্ষের কাছ থেকে নানান কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিতো। ধর্ষণ ঘটনাগুলির মেডিক্যাল রিপোর্ট কেলেংকারীর মাধ্যমে এই অবৈধ-অমানবিক ব্যবসা চলতো। এই বিকৃত মানসিকতার যোগসাজশী পার্টনার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিৎসক। মানবাধিকার রক্ষার অন্তরালে এমন শত শত, হাজারো কাহিনী আছে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে।
২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারি এই সংবাদকর্মীসহ অন্যান্যদের চাঁদাবাজির খবর ছাপা হয়েছিল। দুর্ভাগ্য যে বার্তা সম্পাদকের হাত দিয়ে সেই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছিল তিনি আজ একই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। সেই ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকই এখন সেই ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলেন। সেই বিতর্কিত ব্যক্তিটি ২০০৩ সালের ওই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আমাকে ‘অবাঞ্ছিত‘ ও রাজশাহী ছাড়া করার দাবিতে নানান কর্মসূচীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়েছিল। প্রয়াত সাংবাদিক শাহ আনিসুর রহমান, রাজশাহী প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমান এবং বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা এনামুল হক যার সাক্ষী। রাজশাহীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলিকে আমার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার আহবান জানিয়েও তাদেরকে মাঠে নামাতে ব্যর্থ হয়েছিল। কারণ সেই রিপোর্টটি কোন বানানো বা মিথ্যা রিপোর্ট ছিল না। সেই প্রতিবেদনটি যেই ব্যক্তিকে ঘিরে রচিত ছিল সেই ব্যক্তি এবং তার এক দোসর সুবিধাবাদী এক সংস্কৃতিকর্মী (তথাকথিত) যৌথভাবে ষড়যন্ত্র করে জরুরি অবস্থার সময়ে র‌্যাব ও ডিজিএফআইকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার নামে। এমনকি আমার বিরুদ্ধে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং আমাকে বয়কট করার জন্য যে আহবান করা হয়েছিল তার কপিসমূহও ডিজিএফআইকে এবং ‌প্যরামিলিটারি ফোর্সকে সরবরাহ করে সেই সংবাদকর্মীই। সেই ডাহা মিথ্যা এবং কাল্পনিক অভিযোগের কথাগুলিই আবার জাতিসংঘেও পাঠানো হয় বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে। আমি অবশ্য আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি বেশ আগেই। আজও সেই চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করার মতো ‌সাহস দেখাতে পারেনি সরকার।
২০০৩ সালের সেই আলোচিত প্রতিবেদনটি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ষড়যন্ত্রের ডালপালা গজাচ্ছিল। সেইসময়ে আমি একদিন ঢাকায় দৈনিক সংবাদ অফিসে যাই। সংবাদ এর ওইসময়ের সম্পাদক বজলুর রহমান আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। যিনি নিজেই বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের একটি প্রতিষ্ঠান! তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। আমি বিশ্বাস করি, তার আত্মা শান্তিতেই আছেন। প্রিয় বজলু ভাই প্রসঙ্গে অন্য সময়ে লেখা যাবে। তিনি (বজলু ভাই) আমাকে বলেছিলেন, “আকাশ গণশত্রুদের বিরুদ্ধে লিখলে সেই গণশত্রুরাই তোমাকে বলবে তুমিই গণশত্রু-দুশমন। কাজেই বিচলতি হয়ো না, ভয় পেয়ো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। এবং তুমিই জিতবে।” কী অসাধারণ প্রজ্ঞা, স্বজ্ঞা তার। সত্যিই বাস্তবে তাই ঘটেছে। অথচ সেই ব্যক্তিই (মূলত: সংবাদ এ প্রকাশিত ২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারির রিপোর্টটি ছিল যাকে ঘিরে) আজ বজলু ভাইদের গড়া প্রতিষ্ঠানে স্বদর্পে কাজ করছে। কী আশ্চর্য্য, দুর্ভাগ্য!
আরেকটি কথা বলে নেয়া দরকার। সেটা হলো এশিয়া বিশেষত বাংলাদেশের শিক্ষিত শ্রেণীর অধিকাংশের মাঝেই হিংসা বা জেলাসি ক্রিয়াশীল। এই হিংসা ব্যক্তিগত এবং রাজন
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×