somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাতারে মাওলানা সাঈদীর কান্ডজ্ঞান এবং মূর্খতা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাতারের ধর্ম মন্ত্রণালয় এর আওতাধীন একটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টার হচ্ছে- ফানার। এ সেন্টারের তত্ত্বাবধানে কাতারে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের মুসলিম নাগরিকদের জন্য তাদের স্বদেশী আলেমদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কাতারে মাহফিলএর ব্যবস্থা করে থাকে। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশীদের অনুরোধে ফানার বিভিন্ন সময়ে এ দেশ থেকেও আলেমদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কাতারে প্রবাসীদের উদ্দেশে বয়ান ও নসীহতের ব্যবস্থা করেছে। ফানার এর আমন্ত্রণে কাতার সফর করেছেন মুফতী ফজলুল হক আমিনী, হাটহাজারীর মাওলানা শাহ আহমদ শফী, শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক।

চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ফানার এর তত্ত্বাবধানে কাতার সফরে যান মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। সেখানকার বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশীদের উদ্দেশে তিনি ওয়াজ করেছেন। স্থানীয় একটি হোটেলে জামাত এর সংগঠন কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার এর উদ্যোগে আয়োজিত এমনি এক সুধী সমাবেশে সাঈদী ওয়াজের মাঝখানে বিশিষ্ট সাহাবী আমর ইবনুল আস রা.কে গালি দিয়ে ধোঁকাবাজ বলে আখ্যায়িত করে বসেন। বিতর্কিত নারী নেতৃত্বের বিপে কুরআন হাদীসের কোথাও কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলে তিনি বয়ান করলেন। বেফাঁস কথাবার্তার এক পর্যায়ে চরমোনাইর মরহুম পীরকে তিনি বেআদব বলে বসেন।
তার এ কয়েকটি কথায় উপস্থিত সচেতন উলামায়ে কেরাম ফুঁসে ওঠলেন। সাঈদীর এমন অজ্ঞতাপূর্ণ মন্তব্যের প্রমাণ হিসেবে যারা ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন- অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর তাৎণিকভাবে সেখানে উপস্থিত জামাতকর্মীরা সবার মোবাইল থেকে ভিডিওটি সিডি আকারে তাদেরকে দেওয়া হবে বলে জোর করে মুছে ফেলে।
উপস্থিত কয়েখজন আলেম ঘটনাটি কাতারের ধর্ম মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানালেন। এভাবে একে একে সাতাশটি রিপোর্ট জমা হলো কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে। এতে নড়েচড়ে বসলো ফানার।
কয়েক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সাঈদীকে তার ভ্রান্ত ধারণা পরিবর্তন করার তাগিদে এ বিষয়ের নির্ভরযোগ্য কয়েকটি কিতাব দিয়ে তার কাছে পাঠানো হলো। সাকাফাতুদ্দায়ী এবং ইতিকাদু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ গ্রন্থদুটিও তার কাছে পাঠনো হলো। এ গ্রন্থদুটির লেখক আরব বিশ্বের প্রখ্যাত গবেষক আল্লামা ইউসুফ কারযাভী।
তদন্তদলে দু একজন এমনও ছিলেন যারা সাঈদীকে তার ওয়াজের কারণে ভালোবাসতেন। তারা চাচ্ছিলেন, বিষয়টি যেন সহজে সুরাহা হয়ে যায়। কিন্তু সবাই অবাক হয়ে দেখতে লাগলেন, সাঈদী কিতাবদুটোর নামটুকুও আরবীতে পড়তে পারছেন না। তার এমন দুর্গতি দেখে তাৎণিকভাবে উর্দু অনুবাদ এর ব্যবস্থা করা হলো, তিনি সেটিও দূরে ঠেলে দিয়ে বললেন, আমাকে বংলায় বুঝিয়ে দিন। নারী নেতৃত্ব বিষয়ে যখন তাকে পড়ে শোনানো হলো- ...কোন অবকাশ নেই। তিনি বলে উঠলেন, অবকাশ নেই বলা হয়েছে, জায়েজ নেই’ কথাটি তো লেখা নেই। উপস্থিত লোকজন তার বোধশক্তির স্বল্পতা দেখে অবাক হয়ে গেলেন।
ফানার এ তখন পরিচালক ছিলেন বারেক আলাওয়ী। তিনি সাঈদীর এমন কান্ড শুনে রেগে উঠলেন। তার উপদেষ্টাদের জানালেন, এ লোকটিকে এখানে গ্রেফতার করা হোক। উপদেষ্টাদের একজন জনাব বাসিইউনী (মিশরীয় আলেম) তাকে বুঝিয়ে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ করলেন।

পূর্ণ তদন্তের পর কাতার এর ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ফানার তখনই মাওলানা সাঈদীকে সতর্কবার্তা জানিয়ে তাকে কাতারে অবস্থানকালীন আর কোন সমাবেশ কিংবা সভায় বক্তৃতা দেয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এ লোক যেন ভবিষ্যতে আর কোনদিন কাতারে আসতে না পারে- সেজন্য তার নামে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা লিখে রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সাঈদী দুবাই গিয়ে অনেকদিন অপো করছিলেন কাতারে প্রবেশ করার জন্য, কাতার এর জামাত নেতারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েও তাকে আর কাতারে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে পারেনি।
সাঈদীর এমন জ্ঞানের স্বল্পতা দেথে ফানার এর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মন্তব্য করেছিলেন, এ লোকটির ওয়াজ শুনতে নাকি হাজার হাজার মানুষ আসে- তোমাদের দেশে ইসলামের কি এতই করুণ অবস্থা!!
১১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×