জাহাঙ্গীর বাবু
প্রেম কাব্যের ওস্তাদ সেই,
যে প্রেমে পড়ে,যে প্রেম করে,যে ভালোবাসে।
কবি কবিতার প্রেমে টুইটুম্বুর আজীবন।
কল্পনায় সাজায় বাসর,চোখ বন্ধ করে
পাড়ি দেয় প্রেম সাগর।
প্রেম যমুনায় নিত্য স্নান করে, সাথে লয়ে
অনিবন্ধিত অবয়ব,
বয়স,স্থান,কাল পাত্র,কবির সাজানো।
হে প্রেমিক কবি,নির্লজ্জ তুমি।
কি করে বলে দাও অবলীলায়,
ভালোবাসো তুমি।
আর কতো কবিতার শব্দে কেড়ে নেবে
কবিতার লাজ লজ্জা সব।
বেহায়া প্রেমিক,এতো বার বারণ করি,
এসোনা,বাতায়নে,কে শুনে কার কথা।
পর্দা টেনে দেই,
কেশ এলো মেলো করে দাও
হাওয়ায় শাড়ীর আঁচল,উফ,আর পারিনা।
তুমি যে কি?সংসার ভাঙ্গবে নাকি আমার?
বেশতো ছিলাম, যেমনি ছিলাম।
স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন দিকে তাকাইনি
তুমি আসবে বলে,কাছে ডাকবে বলে।
অপেক্ষার ক্যালেন্ডারে কেটেছি দাগ।
আসতে না, অনেক দিন পর একটা চিঠি পাঠাতে ,
প্রেরকের ঠিকানা শুন্য।
ব্যাস, আমার অপেক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত।
শেষ বার, অপেক্ষা যখন ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিলো
সমাজ চোখ রাঙ্গালো, নিরুপায় হয়ে কেয়ার অফে
বয়সের ভারে নুয়ে পড়া প্রফেসর।
আমার চল্লিশ ছুঁই ছুঁই তার সত্তর।কোন দাবী নেই তার।
একটা পাহাড় দিলো, একটা ঘর, ব্যাংকে ডিপজিট,
পেনশন স্কীম।নাতি পুতি ও দিলো।
পাঁচ তলা বাড়ি আভিজাত এলাকায়।
কেউ আসেনা এ দিকে।আমি পাহাড়ের সেই ঘরে।
পুরোনো চিঠি পড়ি,ঝর্ণার গান শুনি।
বাতায়নে তোমার সিগারেটের ধোঁয়া অনুভব করি।
দমকা হাওয়া,শিহরণ রোম কুপে আজো
শাড়ির আঁচল সরিয়ে দিলো।
লজ্জায় আজো লাল হই।
চিঠি পড়ি, চিঠিতেই আলিঙ্গন হয় আজো।
তোমার সব গুলি কবিতা পড়া শেষ,
বই গুলি পুরানো হয়ে গেছে
কোন লাইনে, কোন বাক্যে আমায়
ছুঁয়ে যাও বুঝতে পারি।
কবিতার সঙ্গমে যদি গর্ভাশয়ে ভ্রুণের জন্ম হতো
আমি হতাম মা,হতে পারিনি।
মাতৃত্বের স্বাদ পাইনি,হয়েছি কলঙ্কীনি।
কেউ জানেনা,আমার কপালে কলংকের দাগ
তোমার দেয়া উপহার,কেউ জানেনা। তুমিও না।
কবি, তুমি মিথ্যেবাদী,প্রতারক,চরিত্রহীন,
কোথায় কখন কোন কবিতায়,কোন কবিতার
জন্ম দাও, জানো!
বেহিসাবী,কুলাঙ্গার! দিন,ক্ষণ,কিচ্ছু যদি মনে থাকে!
আমি যদি জজ হতাম কতো বার ফাঁসিতে ঝোলাতাম।
আচ্ছা,কি করে এতো মিথ্যে লিখো।
সত্যকে মিথ্যা,মিথ্যাকে সত্য করে লেখ?
তুমি কতো বড় গুনাহগার জানো।
আকাশ,পাহাড়,নদী,চাঁদ,তারা,ঝর্ণা, মেঘ,বৃষ্টি,
হরিণ,ময়ুর,কবুতর,ঘুঘু
কি বাদ যায়,আমার অঙ্গের তুলানায়।
আমায় মানুষ হয়ে থাকতে দিলেনা!
কতো অপেক্ষায় ছিলাম,
এই বুঝি এলে,
এলেই হাড়,মাংস সব গুড়িয়ে দেবে আমার।
আসোনি কবি,আসোনি!
সময়ে আসোনি,যৌবণে আসোনি!
এসেছে তোমার মিথ্যের কবিতার শিহরণ।
এসেছে তোমার নেশার্ত নি:শ্বাস
লক্ষ কোটি বার লজ্জা দিয়েছে আমায়
শাড়ির আঁচল কেড়ে নিয়েছে।
আমার যৌবণ নিয়ে খেলেছ,
অবেলায় কি দেবেনা শান্তি আমায়।
মাঝে মাঝে ভাবি,তুমি কি জানতে আমার
অপেক্ষার প্রহরের যন্ত্রনার কথা।
যদি নাই জানতে, কেনইবা লিখতে চিঠি
কবিতার শব্দ মালায়।
অনেক কবিতার শব্দের যাদু টোনায়
আমায় পাগল করেছো।
কবি একবার এসো পাহাড়ের পাদদেশের
ঝর্ণার ধারে,এসো কবিতার কুটিরে।
অতি যতনে আমি রেখেছি সাজিয়ে
আমায় পাগল করা তোমার শব্দমালা
কবিতায় লেখা সেই চিঠি গুলির
ভালোবাসার পংতিমালা।
কবি,ধোকা দিলে আজীবন
মিথ্যের মোহমায়ায়!
এখনো বুঝোনি,আমি কে?
বলছি,শোন আমি তোমার একটি
অবাঞ্চিত প্রেমের কবিতা।
সিঙ্গাপুর
১৬-৪-২০১৮ ইং
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭