রবিবার সাধারণত আমার জন্য সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তাই ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরী করি। কিন্তু অন্য রবিবারের মত আজ দেরীতে উঠতে পারিনি একটি ব্যক্তিগত কাজ ছিল বলে। উঠে দেখি আব্বু টিভি নিয়ে বসে আছে। সাধারণত আব্বু বাংলা চ্যানেল ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল দেখেন না। আর আমিও সকাল সকাল টিভি দেখাটা পছন্দ করিনা। তাই তেমন করে খেয়াল না করে প্রয়োজনীয় কাজ করার জন্য গেলাম হঠাৎ আব্বুর হা-হুতাশ চিৎকার এসে শুনলাম আরেক গুনী শিল্পীর চির বিদায় দেখলাম। আসলে গুনী শিল্পী। উল্লেখ্য যে আমি গান না শুনলেও এমন কিছু বিচ্ছেদ গান শুনি যা আমাদের জীবনের সাথে মিলে যায়। যেমন সৈয়দ আব্দুল গফুর হালী, আব্বাস উদ্দীন, বশির আহমেদ মহামুদুন্নবী এই সব শিল্পীর গান শুনলে খুবই গভীর মন দিয়ে শুনি। কারণ তাদের গান গুলো যতই শুনি খুবই ভাললাগে। আসলে খুবই গুনি শিল্পী। তার অনেক গান আমি শুনেছি প্রত্যেকটি গান ছিল হৃদয় বিদারক। আমি তার আত্নার মাগফেরাত কামনা করি। এবং আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করি।
ইস্টার সানডেঃ- আগেই বলেছি রবিবার আমার জন্য ছুটির দিন। ব্যক্তিগত কাজ ছিল কিন্তু যেতে পারিনি। তাই ভাবলাম দোকানে (চায়ের দোকান) বসে ছোট ভাইকে একটু হেল্প করব। বলতে হয় যে, আমি দোকানে বসি কিছু মানুষের কথা নোট করার জন্য। আমাদের পাশে শীপ ইয়ার্ড, আজ নাকি ইয়ার্ডে পরিবেশ কর্মী আসবে। তাই কিছু শ্রমিককে কাজে নেয়নি আজ। যাদের বয়স ৪০এর উরদ্ধে। হঠাৎ এক কাকু আমাকে বলল (যে – হাকু আজিয়ে কিয়র বন্ধ) আমাকে দোকানে সবাই মাস্টার বলে আবার কেউ আংকেল কাকা বলে সম্নোধন করে। তো আমি উত্তর দিলাম আজ খ্রিষ্টানদের ইস্টার সানডে। আবার প্রশ্ন এটা কি আবার? উত্তরে বললাম আজ তাদের (খ্রিস্টানদের) বড়দিন। কিছুক্ষণ পর আরেক জন জানতে চাইলে আগের জন হুট করে বলল আজকের দিন নাকি আগের দিনের চেয়েও (৫-৭) হাত লম্বা। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেল। আরেকটু হাসলে কি হত আল্লাহ ভাল জানেন। পাঠক সমাজ আপনাদেরকে একটু অবগত করতে চাইযে, ২০১৩ এর ৫ই নভেম্বর হিজরি নববর্ষ (পহেলা মহরম) পালন করতে নগরের নজরুল স্কোয়ার (ডিসি হিল) গিয়ে ছিলাম। মূলত আমি সেচ্ছা সেবকের দায়িত্বে ২নং গেটে ছিলাম। তখন সারা দেশ ছিল থমথমে নিস্তদ্ধ। চারদিকে জ্বালাও পোড়াও, ভাংচুর, হরতাল – অবরোধ। সংগঠনের উত্তর জেলার সাবেক সভাপতি আজিম উদ্দীন জনি ভাই ফোন করে বলছিেলন আপনারা (আমি আর আনোয়ার ভাই) আসবেন তো! আমি বললাম আসব। যখন ঘর থেকে বের হলাম রাস্তায় কোন গাড়ি পাচ্ছিলাম না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর তরকারী বোঝাই একটি টমটম গাড়ি দেখলাম হাত নেড়ে ইশারা করলাম কতদূর যাবেন? ওনি বললেন প্রি- পোর্টের উদ্দেশ্যে। গাড়িতে উঠলাম কিন্তু সালেহ কার্পেট পৌঁছাতে সামনে বি,এন,পির একটি মিছিল দেখতে পেলাম। ড্রাইভার ও আমরা ভয়ে গাড়ীকে এক পাশে সাইড করে দাড়াতে বললাম। মিছিল শেষে ধুম করে বিকট শব্দ বুঝতে দেরি হলোনা কক্টেল। ভয়ে নেমে দিলাম দৌড়। চিন্তা করলাম যবি,এন,পি যে মাঠে আছে তা জানান দিয়ে গেল। প্রায় ১০ মিনিট পর আবার গাড়ীতে উঠলাম। আবার বিপদ জলিল পৌঁছার পর, সেইখানে জামাত-শিবিরের মাথায় ব্যান্ড পরা কতগুলো ছেলে বিভিন্ন লাটি-সোটা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আল্লাহ আল্লাহ করে বিপদটা পার হলাম। ফকিরহাটে পৌঁছার পর একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা যোগে নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। জোহরের সময় পৌঁছলাম ডিসি হিলে। প্রিয় পাঠক এত লিখার কারন হল এইযে, আমাদের প্রিয় জন্মভুমিতে শতকরা ৯০% লোক মুসলিম। এই মুসলিম দেশে মুসলমানের হিজরি নববর্ষে(মাহে মহরম) বি,এন,পির হরতাল অবরোধ, হাম্লা-ভাংচুর আর আওয়ামীলীগের অনড় অবস্থান ছিল চোখে পড়ার মত। যদি সেইদিন হিন্দু ধরমালম্বীদের কোন পূজা, খ্রিষ্টানদের মাঘী/রাখী পূর্ণিমা থাকত তাহলে হয়তো বি,এন,পির হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার করত, এবং আওয়ামিলীগ নিরব দর্শকের মত ভূমিকা পালন করতনা। কেননা তাদের দুইয়ের উদ্দেশ্য আমরা সুন্নী মুসলমানকে নিশ্চিহ্ন করা। তাই আজ সময় এসেছে বুঝার ও শিখার।
উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক
নাস্তিক মুরতাদ নিফাত যাক,
নাস্তিক মুরতাদের দিন শেষ
সুন্নীয়তের বাংলাদেশ।