somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুগে যুগে ইসলাম

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তেরশ' বছর আগের কথা.....
মদীনার বাজার। পড়ন্ত বিকেলে একজন
খদ্দের এসে দাড়ালেন একজন সাহাবার
দোকানে। একটা পণ্যের দাম শুনে কিনতে
সম্মত হলেন ক্রেতা। কিন্তু তাকে আশ্চর্য
করে দিয়ে সাহাবা দূরের আরেকটি
দোকান দেখিয়ে বললেন পণ্যটি সেখান
থেকে কিনতে। দাম একই, জিনিসও একই।
.
আপনি যদি ব্যবসায়ের ছাত্র হন তাহলে
লাফিয়ে উঠে বলবেন এই জন্যই ইহুদিরা
সারা দুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করে; মুসলিমরা
ব্যবসা বুঝেই না। খদ্দের মানে হাতের
লক্ষী। হাতের লক্ষী কেউ পায়ে ঠেলে?
আপনি যদি ঝানু ব্যবসায়ী হন তাহলে বলবেন
দুই ক্ষেত্রে খদ্দেরকে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে
পাঠানো যায়: যদি ক্রেতা বেশি খুঁতখুঁতে
হয় আর যদি ক্রেতা ঠিক যা চাইছে সেটা
আমার কাছে না থাকে। কিন্তু এছাড়া
ক্রেতাকে ফিরিয়ে দেওয়া মানে ব্যবসায়
লাল বাতি জ্বলা।
.
যাহোক, আমাদের ঘটনার ক্রেতাও হয়ত এসব
সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে গেলেন অন্য
দোকানটায়। পণ্যটা কিনে ফেরতআসলেন
প্রথম দোকানে। সাহাবা তখন অন্য আরেকজন
খদ্দেরের সাথে কথা বলছেন। এটাই আল্লাহর
বিধান—যত টাকার বিক্রি হওয়ার কথা ছিল,
তত টাকার বিক্রি হবেই। এটা আল্লাহর
দেওয়া রিযক্। যা আসার কথা ছিলো তা
আসবেই। মাঝখান থেকে আমাদের পরীক্ষা
হবে—সেই রিযক্টা পেতে গিয়ে আমরা কী
হালালে সন্তুষ্ট থাকলাম নাকি হারামের
ডুবে গেলাম।
.
সাহাবা জিজ্ঞেস করলেন ক্রেতাকে,
‘পাওনি তোমার জিনিস?’
– পেয়েছি, কিন্তু আমি অন্য একটা
জিনিসের জন্য এসেছি।
– কী?
– তুমি যার কাছে আমাকে পাঠিয়েছিলে
সে আমারই ধর্মের মানুষ—ইহুদি। আমরা
তোমাদেরপছন্দ করি না। কিন্তু তুমি একজন
ব্যবসায়ী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে আমাকে
পাঠালে,মুসলিম হয়ে একজন ইহুদিকে ব্যবসার
সুযোগ করে দিলে? কেন?
– কারণ আল্লাহ আমাকে আজকের মত যথেষ্ট
রিযক্দিয়েছেন।আর ও বেচারা সকাল
থেকে বসে আছে–আজ কোন বিক্রিই হয়নি
ওর। তারও তো পরিবার আছে। একজন খদ্দের
পেলেও তার ন্যুনতম চাহিদাটুকু হয়ত মিটবে।
.
ক্রেতাটি হতবাক হয়ে ভাবল—যে ধর্ম
মানুষের কল্যাণের কথা এভাবে মানুষকে
ভাবতে শেখায় সেটা সত্য বই মিথ্যা হতে
পারে না। পণ্য কিনতে এসে ইহুদি ব্যক্তিটি
জান্নাত কিনে নিয়ে চলে গেল।
ইসলাম কিন্তু এভাবেই পৃথিবীতে
ছড়িয়েছে। তাত্ত্বিক আলোচনার মাধ্যমে
না, জীবনে প্রতিফলনের মাধ্যমে।
সাহাবারা হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের
ছাত্র ছিলেন না, তারা রসুলুল্লাহ
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
মাসজিদে নববীর ছাত্র ছিলেন। তাদের
অভিধানে মনোপলি, কম্পিটিটর, গ্রোথ
কার্ভের মতো কঠিন সব ধারণা ছিলো না।
তারা এই পৃথিবীতে আল্লাহর দেওয়া
রিযক্তারা বান্দাদের সাথে ভাগ করে
নিতেন। তারা দু’হাত উপুড় করে মানুষকে
দিতেন, কারো কাছে ব্যক্তিগত প্রয়োজন
মেটাতে হাত পেতে ভিক্ষে মাঙতেন না।
শোষণ-লুন্ঠন-প্রবঞ্চনা-প্রপঞ্চনা তো দূরের
কথা।
.
এই ইসলাম মানা, একে সমাজে পুর্নপ্রতিষ্ঠা
করে ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনা যদি
মধ্যযুগে প্রত্যাবর্তন হয়, তেরশ বছর পিছু হাঁটা
হয়তাহলে মন্দ কী? যারা এই যুগের মাৎসন্যায়
থেকে ছিঁটে-ফোটা ভাগ পেয়ে সুখে
আছে বলে ভাবছে তাদের জন্য ইসলাম কষ্টকর
হবে। কিন্তু ইসলামী শরিয়াহ মেনে
নেওয়াতে দেশের সিংহভাগমানুষের জন্য
মঙ্গলকর। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললাম কিন্তু
সংখ্যাগরিষ্ঠের মঙ্গল চাইলাম না এটা কী
মুনাফিকি নয়? ইসলামী শরিয়াহ বাঘের গুহা
নয়—সাম্যতা আর ন্যায়বিচারের বিধান।
ইসলাম মেনে ব্যবসা করলে সবাই উপকৃত হবে।
ইসলামি আইনে বিচার করলে মানুষ ইনসাফ
পাবে। ইসলাম অনুযায়ী দেশ চালালে কেউ
আঙুল ফুলে কলাগাছ হতে না পারলেও সবার
ঘরে খাবার থাকবে। অন্তত ক্ষুধার জ্বালায়
কাউকে আত্মহত্যা করতে হবে না।ইসলামের
আগমনে কলাগাছওয়ালারা বেজার হবে।
ইসলাম ঠেকাতে তারা আমাদের ভুল
বোঝাবে—কিন্তু আমাদের কল্যাণের জন্যই
আমাদের চোখ খোলা দরকার। ইসলাম
সম্পর্কে জানা দরকার। ইসলাম মেনে নেওয়া
দরকার।
.
আল্লাহ ক্ষুধা-তৃষ্ণার উর্ধ্বে। পাথরের
দেবতার মতো তিনি ভোগ চান না। মানুষ
কাজ করে তাকে খাওয়াবে সে সুযোগই
নেই। আল্লাহচান মানুষ যেন পৃথিবীতে
ভালো থাকে। সেজন্যই ইসলামী শরিয়াহ
তাদের কাছে পাঠিয়েছেন।আমরা এই সহজ
সত্যটা যত তাড়াতাড়ি বুঝব ততই মঙ্গল।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×