আমি ব্যক্তিগতভাবে যে কোন অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করিনা। আমি বিশ্বাস করি বেঁচে থাকা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষকে সৃষ্টি করেছেন মহান পরাক্রমশালী সৃষ্টিকর্তা সুতারাং মানুষের জীবননাশের বা জীবন কেড়ে নেওয়ার একমাত্র অধিকার তাঁরই। আমরা কেবলমাত্র আমাদের রচিত আইন বা শাসনতন্ত্র অনুযায়ী কোন মানুষের শাস্তি বিধান করতে পারি, যদি সে ব্যক্তি আইন বিরুদ্ধ কোন কাজ করে বা আইন অমান্য করে।
কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমি আমার এই মানসিক বা নৈতিক অবস্থান সবসময় ধারন করতে পারিনা বা অবস্থানের উপর দৃঢ় থাকতে পারিনা। বিশেষতঃ নারী বা শিশুর প্রতি সহিংসতা বা যৌন নিপীড়নকারী এবং বাসার কাজের মেয়ের প্রতি শারীরিক নির্যাতনকারীর অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসি বলবৎ থাকা।
প্রত্যেক মানুষের একটা যৈবিক চাহিদা আছে এবং মানুষ সবসময় যে এটা নিয়ন্ত্রন করতে পারে, তাও নয়। মানুষ দোষের উর্ধ্বেও নয় যে সে তার রিপু বা কামনা বাসনাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। কিন্তু সেটা যদি মানুষের মনুষ্যত্বকে হার মানায় কিংবা তার আচার আচরন বা কার্যকালাপ যদি পশুর ন্যায় হয় তাহলে সে মানুষকে তো আর মানুষ বলা যায়না, স্রেফ জানোয়ার ছাড়া।
দিনাজপুরের পাঁচ বছরের শিশুর উপর পাশবিক নির্যাতনকারী সাইফুল ইসলাম (৪২) এবং আফজাল হোসেন কবিরাজ (৪৮) কে জানোয়ার ছাড়া আর কিইবা নামে অভিহিত করা যায়। আরো অবাক করা বিষয় হলো এই জানোয়ারদের বয়স, একজনের বয়স ৪২!! আর একজনের ৪৮!! কি বিকৃত শৌর্য বা বীরত্ব, যে নর পাষুন্ডগুলো ৫ বছরের এক নিষ্পাপ শিশুর উপর এদের পশুত্ব জাহির করে। ছি ছি, ধিক তোদের পৌরুষত্ব, মনুষ্যত্ব। তোদের জন্য মাঝে মাঝে নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে বড় অপরাধী মনে হয়।
এই ধরনের জানোয়ারদের জন্য কি আমরা আমাদের সৃষ্টির সেরাজীব মানুষের জন্য রচিত আইন অনুযায়ী বিচার করবো নাকি তাদেরকে জানোয়ার হিসেবে অভিহিত করে বিচার করবো?? মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে সবার সামনে প্রকাশ্যে বা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে অামাদের অনেকের দ্বিমত বা ভিন্নমত আছে। কিন্তু এই জানোয়ারদের জন্য আমার মনে হয় এই পদ্ধতিতে অতি দ্রুত সময়ে ফাঁসি কার্যকর করা হোক। তাতে জানোয়ারদের ছবি যেমন আমরা দেখতে পারব ঠিক তেমনি জানোয়ারদের চরিত্রের সাথে আমাদের কারোর চরিত্রের সাদৃশ্য থাকলে, শাস্তির ভয়াবহতা দেখে সেও নিজেকে সংশোধন করতে পারবে।
মোঃ শওকত হোসেন বিপু
২৭.১০.২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮