somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভয় নিয়ে ব্লগিং কি তবে এখন, রয়ে সয়ে ব্লগিং!

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সময় বদলানোর সাথে সাথে জ্ঞানের সংজ্ঞা, ব্যবহার এবং প্রয়োগ সবকিছুতেই বদলানোর হাওয়া লেগেছে. নানা পরিবর্তন দেখে এটা না বুঝার কোনো কারণ নেই. ব্লগ এসব পরিবর্তনেরই আরেক অংশ. পরিবর্তন যে মানুষগুলাকে ঘিরে ঘুরছে, সেখানে ব্লগের লেখক, পাঠকরাও আছে. বদলানোর কথা বলার কারণ নতুন জ্ঞান দেয়া বা আবিষ্কার করা-্এমন কিছু না.

আজ এই ব্লগে ৯ বছর পর মনে হচ্ছে , ব্লগে এখন মানুষ কিজন্য আসে বা আসলেই কি জন্য মানুষ ব্লগে আসছে বা লিখছে, পারস্পরিক মতবিনিময়, যুক্তিতর্কে জড়াচ্ছে! নিজে অন্য অনেক ব্লগের পাঠক হলেও লেখক শুধুমাত্র সামুতেই। ব্লগ যতদিন আছে, এখানে ব্লগার থাকবেই. এখন সময়ের কারণে সেখানে যে পরিবর্তন সেটা আসলে যারা ব্লগে যুক্ত হয়, হচ্ছেন, তাদের নিজেদের জ্ঞান, উপস্থাপনা, সৃষ্টিশীলতা এগুলোর মাধ্যমেই ফুটে উঠার কথা. যদি চোখ খুলে তাকানো যায় তাহলে হয়তো সেটা দেখা যাবে, ব্লগাররা আসলে নিজের সময়, জ্ঞান ও আরো অনেক কিছুর সমন্বয়ে এখানে কি পোস্ট দিচ্ছেন.

গন্ডি যখন সীমাবদ্ধ হয় তখন সেখানে কোন সেবা, পণ্যের দাম একরকম থাকে, আবার সেটা বিস্তৃত হলে সেবা বা পণ্যের দাম ,মাণেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়. ব্লগ যেহেতু এখন বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতার মানুষ ব্যবহার করছেন সে কারণে সবকিছুতেই তাদের নিজস্ব জ্ঞান, অবস্থানের প্রমাণ পাওয়া যায়, যাচ্ছে. তথ্য জানার জন্য এটা সব দিক দিয়েই ভালো. এতে করে মাণের প্রশ্ন, সুস্থ যুক্তি তর্কের প্রশ্ন বা সৃষ্টিশীলতার প্রশ্ন থাকাই স্বাভাবিক. এখন ব্লগে আসলে তা নিজেই দেখি অনেক. কেউ আবার মনে করে বসবেন না যে- ব্লগে এখন যা তা পোস্ট হয় বা আবাল পোস্টে ব্লগ ভরে গেছে- এমনটা নয়. আমি পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক কিছু ভালো-মন্দ এবং সেখানে অসুস্থ চর্চার প্রভাব বা আশংকার কথা্টাই বলছি.

ব্যক্তিগতভাবে আমি ব্লগে এসেছি ভয়ে ভয়ে. অনেক দিন শুধু দেখেছি অন্যরা কি পোস্ট দিয়েছে, আর কিভাবে এত্ কিছু জেনে লেখা এবং সেটা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়া, আবার আলোচনায় নানামুখি যুক্তি. এতসব কিছু অসম্ভবই মনে হতো. বিষয়টা এজন্য হতো যে, ব্লগাররা পোস্ট দেয়ার সাথে সেই সম্পর্কে প্রচুর যে জানতেন সেটার প্রমাণ পাওয়া যেত. আলোচনায় +, ভাল লাগলো এসব কিছু খুবই, খুবই কম ছিলো. কারণ পোস্টগুলোর অধিকাংশই এত তথ্যবহুল হতো যে তাতে সংক্ষপে আছি, নাই বলা মুশকিল ছিল. নিজে এত সুন্দর করে গুছিয়ে লেখা নিয়েই ভয়ে থাকতাম প্রথম. অনেক পরে আস্তে আস্তে লেখা শুরু করেছি. আর এত কিছুর মাঝে শত শত ক্যাচাল বেড়েছে সময়ের সাথে সাথে. বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন কারণে, বিষয়ে. এসব নিয়ে অনেকের অনেক লেখা আছে, এ নিয়ে এখানে বলার কিছু নাই.

এখন আমি দেখি আগের সুস্থ, যুক্তিপূর্ণ আলোচনার ভীড়ের জায়গায় স্থান নিয়েছে অসুস্থ , অযৌক্তিক, ফাঁকাবুলির আলোচনা, পোস্ট. অনুপাতে এসব কতটা কম বা বেশি সেটা অনেক বিশ্লেষণের বিষয়, কিন্তু নিজস্ব চিন্তা, জ্ঞান, যুক্তি আর সুস্থ ব্লগিং না হলে হাজার পোস্ট, শত ব্লগার থাকলেও তা এক সময় উদ্বেগে পরিণত হবে. ব্লগে ক্যাচাল হোক, আলোচনা, সমালোচনা, ভালো- মন্দ লাগা সবই হোক, তবে অসুস্থ চর্চা, সহ ব্লগারকে ব্ল্যাকমেইলিং আর হেনস্তা, ব্যক্তি আক্রমণের চেষ্টা এসব দূর করতে হবে. আগাছা সবখানেই থাকে, থাকবেও. তবে, নিয়মিত সেগুলা পরিষ্কার ও করতে হবে.

ব্লগের নিক একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক. এটা এটা আইডেন্টিটি. একজন যখন ব্লগে অন্যদের সাথে পারষ্পরিক যোগাযোগ, আলোচনায় জড়িয়ে যান, ধীরে ধীরে ব্লগের সেই চরিত্র, নিক একজনের পরিচয় হয়ে উঠে. কারো যদি খুব বেশি অলস সময় না থাকে তাহলে নিজের একাধিক পরিচয় নিয়ে অন্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অত্যন্ত কঠিন বা অসম্ভব. আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা খুবই অসম্ভব. একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে একাধিক চরিত্র নিয়ে টিকে থাকতে পারেনা. বাস্তবতার কারণেই সম্ভব না. এখন কেউ যদি তা করেন সেজন্য তার সক্ষমতার প্রশংসা করতেই হবে. এতে আমি কোন সমস্যা দেখি না. কিন্তু আশংকার কথা হলো দুমুখো সাপের মতো. গল্পের বইয়ে আমরা যেটা পড়েছিলাম ডা. জেকিল এন্ড মি: হাইড. এখন কেউ যদি সালাম দেয়ার জন্য এক চরিত্র আর গালি দেয়ার জন্য আরেক চরিত্র একউসাথে ধারণ করে অপর প্রান্তের একই ব্যক্তির সাথে দু ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখে সেটা অত্যন্ত ক্ষতিকারক. এখানে সুস্থ ব্লগিং বলে কিছু থাকে না. ব্ল্যাকমেইলিং, ব্যক্তি আক্রমণই সেখানে প্রাধাণ্য পায়. এ ধরনের কোনো দু-মুখী চরিত্র সব সময়ই ব্লগের জন্য ক্ষতিকর. এটা আগেও ছিলো, এখনো আছে. এসব অপ্রয়োজনীয়, অসুস্থ চর্চা বন্ধ হওয়া দরকার. নিজের এ চরিত্র থাকলে সেটা থেকে সেই ব্লগাররা দূরে সরে আসলে প্রকৃতপক্ষে তাদের নিজের জন্যই তা ভালো হবে. অবশ্য, ভালো কি হবে বা না হবে সেটা যার কাজ সেই ঠিক করবে, উদ্দেশ্য সে রকম থাকলে এখানে ভালো হবে- এমন কথা বলার মানে হলো বিরক্তরি উদ্রেক করা মাত্র. তারপরও আমি বলি অসুস্থ ব্লগিং চর্চা নিজের জন্য, ব্লগের জন্য, সবার জন্যই ক্ষতিকর. --এসব কিছুর জন্য অবশ্য কর্তৃপক্ষ আছে, অসুস্থদের সু্স্থ রাখার উপায় তাদের ভালো জানার কথা!

ছবি: আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতের ছবি. কয়েক দিন আগে তোলা.
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২
২৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×