গতকাল সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনার সময় দুই পক্ষের সংসদ সদস্যরা অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার এবং হুমকি ধমকির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকায় পুরো সময়টাই ছিল উত্তপ্ত। বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানুর অশালীন বক্তব্যে সবাই হতবাক হয়ে যান। স্পিকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ চেষ্টা করেও অধিবেশনে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত রাখতে পারেননি।
বিএনপির বিএনপির মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রেহানা আক্তার রানু অশালীন ভাষায় সরকারি দল, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মহাজোটের নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়ার হুমকি আর সরকার বেসামাল, অর্থমন্ত্রী টাল, বাণিজ্য মন্ত্রী টাল, আইন প্রতিমন্ত্রী টাল, জিয়া ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটুক্তি করলে জিহ্বা কেটে টুকরো টুকরো করা হবে, সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে 'চৌকিদার'সহ নানা অসংসদীয়-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করে তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে যেভাবে বাড়িছাড়া করেছেন, জনগণ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। দেশ ছেড়ে পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না বেলে হুমকি প্রদান করেন।এ সময় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা দাঁড়িয়ে এমন অশালীন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন।
বিরোধী দলীয় নেত্রীও কম যান না, তিনি বলেছেন "দেশে যে কোন সময় যেকোন অঘটন ঘটবে" বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া এই বক্তব্যের মাধ্যমে কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন তা জাতি জানতে চায়।
সরকারি দলের সিনিয়র সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে বিরোধী দলীয় নেত্রী দেশে কিছু একটা ঘটনা ঘটানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। কী ঘটনা ঘটবে, এটা জাতি জানতে চায়। না হলে দেশে অঘটন ঘটলে তার দায়িত্ব খালেদা জিয়াকেই নিতে হবে। খালেদা জিয়া সদস্যপদ রক্ষায় সংসদে যোগ দিয়ে নিজেই প্রমাণ করেছেন, এই সরকার, সংসদ, বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসাবে গ্রহণ করা তার পতাকা, বেতন-ভাতা বৈধ। ড. ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর নোবেল বিজয়ে সারা জাতি গর্বিত। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সুযোগ নিয়ে তিনি রাজনীতি করতে চাইলে জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করে। জনগণ প্রমাণ করেছে, ড. ইউনূস নোবেল পাওয়ার যোগ্য হলেও রাজনীতি করার যোগ্য নন।
আমার প্রশ্র জাগে মহান সংসদে জনগণের নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্যরা কেন তাদেরকে জনগণের কাছে নিজেদের এমন নিন্দনীয়ভাবে উপস্থাপন করছেন। কথায় আছে দারোগার চেয়ে দারোগার নায়ের মাঝির দাপট বেশী। তার যথার্থ প্রমাণ রেখেছেন বিএনপির বিএনপির মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রেহানা আক্তার রানু । তিনি যদি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হতেন তা হলে তিনি হয়তো তার হুমকি বাস্তবায়ন করতেন। একজন সাধারণ মানুষ তার প্রতিপক্ষকে এই রকম হুমকি দিলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির আওতায় মামলা করা যায়। তবে বাংলাদেশের মহান সংসদে প্রকাশ্যে একজন সাংসদ অপর সাংসদকে এরূপ হুমকি বাংলাদেশ দন্ডবিধির কত ধারার অপরাধ তা আমার জানা নাই। আপনারা কেউ আইন পেশায় থাকলে জনগণের জ্ঞাতার্থে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো। আমাদের মহান সংসদকে এই ভাবে মাস্তানীর জায়গা ভাবার বা অশালীন বক্তব্য প্রদান করার দুঃসাহস তাদের কে দিয়েছে?
আমরা সেই সকল সদস্যদের কাছে বিনীত নিবেদন করছি দয়া করে নিজেদেরকে অতি উৎসাহী আর নেতা দরদী সাজতে যাবেন না আর অশালীন বক্তব্য প্রদানে আমাদের মহান নেতাদের ছোট করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখা জরুরী যে আপনাদের অতিউৎসাহ সেই সকল মহান নেতাদের কোন উপকারে আসেনা কারণ আপনারা তাদের ধারে কাছেও যেতে পারবেন না হাজার বার জন্ম নিলেও। আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এই প্রত্যাশায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১০:০৭