somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বইয়ের নেশা

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই চার পাঁচদিন পূর্বে বইয়ের নেশায় পেয়ে বসে। এদিকে ফেসবুক অফ ছিলো আমার অবশ্য থাতে কোন মাথাব্যথা ছিল না।তার যথেষ্ট কারনও আছে হয়তো নিজের কোন পারসনাল একাউন্ট নেই, তাই সরকারের এই সিদ্ধান্তে কিছুটা খোশিই হই যে আরো কজন হয়তো ফেসবুক বন্ধে আগ্রহি হবেন। যাইহোক শীতের এই সময় সন্ধার দিকে পকেটে ১৮০ টাকা নিয়ে আম্বরখানার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। মনে মনে ঠিক করি কয়েকটা রহস্যপ্রত্রিকা কিনবো। চিরায়িত নীয়ম অনুযায়ি আম্বরখানা যেতে রিকসা চালক ভাইকে বলি। প্রথমেই সেখানে জনতা লাইব্রেরির খোজ করি কিন্তু অদ্ভুতভাবে সেখানে একটি ফাস্টফুডের দোকান দেখতে পাই। বস্তুত জনতা লাইব্রেরী সিলেটের জনপ্রিয় একটা পাঠাগার ছিলো, ছোটকাল থেকেই এইখান থেকে বই কিনতে যেতাম। বিশেষ করে সিলেট শহরে এটাই একমাত্র লাইব্রেরী ছিলো সেসময় যেখানে ভালো মানের সব দরনের বই পাওয়া যেতো। আরো বিশেষ করে বলতে গেলে লাইব্রেরীর মালিক বুড়ো বয়েসি আঙ্কেলের ব্যবহার আর ছোটবেলা থেকে আমার প্রতি তার স্নেহ যার দরুন বইয়ের প্রতি আলাদা একটা টান বোধ করতাম। তারপর জিন্দাবাজার রাজা ম্যানসন অনেক লাইব্রেরী গড়ে ওঠে বিশাল আয়তনে। ফলশ্রুতিতে বইয়ের অপ্রতুলতা শহরে অনেকটা কেটেছে। যাইহোক জনতা লাইব্রেরীর জন্য আমার লেখার উদ্দেশ্য এই স্বল্প পরিসরে নেই তবে সিলেটের ইতিহাসে এই জনতা লাইব্রেরীর অবদান পুরাতন পাঠকরা অবশ্যই স্বীকার করবেন। যাইহোক জনতা লাইব্রেরী বন্ধ দেখে পাশেই রাস্তার উল্টোদিকের দোকানে বই কিনতে যাই। প্রথমেই রহস্য প্রত্রিকার ডিসেম্বর মাসের একটা কপি নিয়ে ভিতরে ডু মারি অন্য ধরনের কিছু প্রাপ্তির আশায়।হাতেপরে প্যাকেটে মোড়ানো একটি ঈদসংখ্যা ম্যাগাজিনের উপর। খোভই মনমুগ্ধকর প্রচ্ছদে বইয়ের ভিতর না দেখে দাম দেখি ২০০ টাকা। দোকানিকে অনুরুধ করি দাম কমাবার জন্য, তিনি লাভের হিসাব কম তাই দাম কমাতে অস্বীকৃত হলে আরেকটি ঈদ সংখ্যা যুগভেরি ২০১৫ নিয়ে নিই যার দাম ছিলো ১০০ টাকা। যুগভেরি ঈদসংখ্যাটি অসাধারন বিশেষত সিলেটের ইতিহাস ও অন্যান্য বিশেষ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে করা ফিচারগুলা যেমন রবিন্দ্রনাত,লালন সাই ও অন্যান্য। বইয়ের পৃষ্টা ও প্রচ্ছদ আসলেই সুন্দর ও মনমোগ্ধকর। সাথে গল্প ও উপন্যাস।
সেজন্যই নিশ্চয় হাতের ছোয়া সেই ম্যাগাজিনের প্রতি লোভটা বাড়তে থাকে সত্যি বলতে কি বইয়ের সাইজ ও প্রচ্ছদ অসাধারন ছিল।তাই পড়ের দিনই আবার বের হই বইটি সংগ্রহের জন্য অবশ্যই পকেটে দুইশ টাকার নোট নিয়ে। যাইহোক লাইব্রেরী থেকে কিনা হয় বহুল প্রতিক্ষিত ইত্তেফাক ঈদ সংখ্যা ২০১৫। বইটি সন্ধার পর কিনে প্যাকেটে মোড়ানো অবস্হাতেই বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা মেরে রাত্রে ঘড়ে এসে বইটির মোড়ক খোলি। প্রথমে পলিথিনের প্যাকটা খোলে সূচিতেই চোখ রেখে আমি যারপড়নাই খোশি। কত উপন্যাস ! আর গল্প ! বারে বাহ !!! এত সুন্দর বই যার কাছে দুশো টাকা কোন ব্যাপারই না। বিশেষ করে ভিতরের উপন্যাস ও গল্পের তালিকা যেন এই শীতকালে এই বইটা বিধাতার পাঠানো উপহার আরো বিশেষ করে বলতে হয় পাথাতে পড়ারচিহ্ন রাখার জন্য খোভ সুন্দর করে একটি কার্ডও দিছে। আসলেই উপহার দেওয়ার জন্য আরো দুই একটা কপি কিনতেই হবে। আমার লেখাটি যারা পড়ছেন লাইব্রেরীতে গেলে একটি বার অন্তত বইটার সূচিপ্রত্র দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে। সিলেটি পাঠকদের জন্য যুগভেরি ঈদ সংখ্যাটাও গুরুত্বপুর্ন।
জীবনে আমার সখ খোব কম। হিসেব করে দেখছি দুইটা।একটা ছিলো একস্টিক আরেকটা নিজের ঘড়ে পারিবারিক পাঠাগার। সেজন্য একটা সুন্দর বুকসেল্ফ কিনতে হবে। আম্মকে বলেছি আশা করি সেল্ফটা কিনতে পারবো তদুপরি বই কিনার নেশাটা আবার অনেক দিন পর পেয়েছে তবে প্রত্যেক শীতেই আমার বই পড়াটা অবশ্যাম্ভি। ইন্টারনেট থেকে অনেক বই পিডিএফ আকারে নামিয়ে রাখছি পরে পড়ার জন্য।একটা ফোল্ডারে পাঠাগার নাম দিয়ে।তবে ই-বুক পড়ার থেকে সত্যিকারের বই পড়ার মজা ও তফাৎ সম্পুর্ন ভিন্ন।তবে টাকার অভাব পোসাতে ই-বুক আসলেই কাজের কাজি। তাই না ?
( পাদঠিকা-অনেক ভাইদের দেখছি আমাকে বিষনভাবে উপদেশ দিতে যে আরো বেশি করে পড়ে তারপর লিখতে কিন্তু আমি নিজেকে লেখক ভাবি না আর আমার লেখাও যে পড়তে হবে এমন কোন কারনও আমি খোজে পাই না। আমি লিখার জন্য লিখি, বাংলাতে বানান ভুল করাটা সত্যি আমার জন্য লজ্জার বিষয়। আমার লিখার উদ্দেশ্য বলতে পারেন মাত্র আত্নতৃপ্তি)
Here with a loaf of bread
beneath the bough
A flask oI wine, a book of
verse and thou,
Beside me singing in the wilderness
And wilderness is paradise enow.
রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত-যৌবনা-যদি তেমন বই হয়। তাই বোধ করি খৈয়াম তাঁর বেহেশতের সরন্জামের ফিরিস্তি বানাতে গিয়ে কেতাবের কথা ভুলেন নি। এই কথাটি সৈয়দ মোজতবা আলির। বই নিয়ে আরেকটি প্রচলিত জানা কথা আছে যে, বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।
বইয়ের সাথে শীতকাল কাটুক লেপতুসকে গাঁ মোরে এই প্রত্যাশায় - আল্লাহ সহায়।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×