রাত ৭টা বেজে ৪৫ মিনিট, দাদার সাথে রাস্তার মোড়ে কিসের অপেক্ষায় সময় কাটাচ্ছে শুভ! হঠাৎ করে রাস্তাথে আর্জনার পাশে দুইটা বেওয়ারিশ কুকুর দেখে একজনের প্রতি তার দৃষ্টি আটকে যায়। কুকুরটা তার কাছে অদ্ভুত সুন্দর লাগতে থাকে। ঠিক যেন তার হারিয়ে যাওয়া কেউ একজনের মত। অপলক দৃষ্টিতে অনেক ক্ষণ থাকিয়ে থাকতে থাকতে সেই কুকুরনীর প্রতি একটা মায়া জন্মে যায়। মনে মনে তাকে সে অন্য কেউ একজনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দরে নেয়।
কিছু কিছু মানুষের জীবনে অদ্ভুত ব্যপারগুলা প্রতিনিয়তই ঘটতে থাকে, তাই যদি মাঝেমধ্যে তারতম্য হয় সেটাই অম্বাভাবিক হয়ে দাড়ায়! যেমন দরেন সে চাইলেই আর লিখতে পারে না! যদিও সে এক্সকিউজ দিতে কখনও পছন্দ করে না কিন্তু তার কি-বোর্ড নষ্ঠ হতে হতে এখন প্রায় বিগড়ে গেছে, সজ্ঞানে দুইটা পেন ড্রাইব হারানোর পর এবার কলমের কালিও ফুরিয়ে গেছে। ইন্টারনেটের খরচ চালাতে গিয়ে নেশার টাকার ব্যবস্থা করাই কষ্টসাধ্য হয়ে ঠেকছে! ঐ দিকে আয়েশা সিদ্দিকা কান্দে শুভ করবে কি উপায়?
দপাস করে আছার খেয়ে পড়লো সে, সামনে থাকা মানুষটা ভাবছেন- ভাগ্য ভালো সিঁড়িতে পড়েনি, সেখানে পড়লে নির্ঘাত মৃত্যু হত। ঘটনার আকস্মিকতায় থতমত শুভ নিজেকে সামলিয়ে লিফটের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে কাজ শেষ করে সে আবার দাদার সাথে দেখা করে, দুজন এমসি কলেজ চলে যায়। সময়টা তখন ঠিক ইফতারির। মাত্র মাগরীবের আজান পড়ছে, শুভ সিগারেটে আগুন ধরিয়ে সারা দিনের খোদা নিবারণে মনোযোগ দেয়। অন্ধকারে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের নির্জন চত্বরটাতে দুজন বসে। হঠাৎ করে তাদের পাশে একটি কুকুর নিশ্চুপ এসে নিরালায় শোয়ে পড়ে। দাদা তামুক বানিয়ে শুভ-কে দিলে, তারা যখন শেষ পর্যায়ে তখন হঠাৎ করে কুকুরটা সজাগ হয়ে ওঠে। তাদের পাশেই অন্ধকারের দিকে ইঙ্গিত করে ভৌক্ষাতে থাকে- শুভ প্রথমে ভাবে হয়ত তামুকের ঘ্রাণে বেটা অস্থির হয়ে গেছে। কিন্তু না তার হাবভাব দেখে স্বয়ং দাদাও কিছুটা ভরকে গেছে! হঠাৎ করে শুভ সেই শীতল অনুভূতিটা পায়- অনেক পুরানো সেই নষ্ঠালজিক অনুভূতিটা তার অনেক পরিচিত, শীরদ্বারা দিয়ে আতঙ্কের স্রোত বয়ে যায়। দাদা তাড়া দিয়ে বলে, চল উঠ- এখান থেকে সরে পড়ি, কথাতে সায় দিয়ে শুভও ওঠে পরে। কুকুরটার জন্য তার মায়া হতে লাগে- আহা এটাতো সেই কুকুর মনে হয়! এখানে আসল কি করে? সে মুখ দিয়ে শিষ দিয়ে কুকুরকে হাত ঈশারায় ডাকলে সেটাও তার আহবানে তার কাছে ছোটে আসে কিন্তু আবার আরেক পাশে গিয়ে কিছুকে বাধা দেবার উদ্দেশ্যে বিষন করে ভৌক্ষাতে থাকে। যেন কোন এনটিটি আমাদের পাশেই আছে। শুভ আবার মায়া করে কুকুরকে ডাকে- দাদা তাকে বাধা দিয়ে জ্বলদি চলে আসতে বললে- সে টায় দাড়িয়ে কুকুরটাকে আবার ডাক দিলে সে প্রভু ভক্ত কুকুরের মতন তার কাছে ছুটে আসে। এবার তাদের সাথেই সে পথ চলা শুরু করে, সতর্কতার সাথে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে! মনে মনে শুভ ভাবে এত বন্ধুত্বভাবাপূর্ন কুকুর অনেক আগে তার একটি ছিল, সেটা কিবোর্ডের ঝামেলায় এখন আর লিখা যাবে না! শুভদের কৃতজ্ঞ রেখে এক সময় কুকুরটা আবার হারিয়ে যায় পাহাড়ি টিলার মাঝে।
এলাকাতে আসার পর দাদা বললেন তুই ব্যাপারটা খেয়াল করেছিস? কুকুরটার আচরণ আর হঠাৎ করে সেই পরিবেশের মুখোমুখি হওয়াটা বিষন অদ্ভুত বটে। শুভ শুধু উত্তর দেয় একটু আগে পাশের দোকানে চা খেতে সময় তার পকেটে পেন ড্রাইভ ছিল যেটা এখন গায়েব হয়ে গেছে!!!!
এসব অদ্ভুত ব্যাপারগুলার ব্যাখ্যা তার নিজের কাছেই নেই অন্য কাউকে বলবে কি? কেউ কি বিশ্বাস করবে এই সামান্য লেখাটা লিখতে তাকে কতটা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বা এটা তাকে মেমোরি কার্ডে করে কার্ড রিডার দিয়ে পোস্ট করতে হবে। কলমের কালি শেষ হয়েছে ব্যাপার না কিন্তু ঠিক এই সময়টাতেই তার মাথাতে গল্পের প্লট আসার ব্যাপারটা তার নিজের কাছেই বিষন অদ্ভুতুরে ঠেকছে!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৮