somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প থেকে শিখি ।

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয় গল্পটা আবার বলি, বারবার বলা যেতে এমন গল্প। কাহিনীটা, বলে রাখা ভালো, তলস্তয়েরও খুব প্রিয় গল্প ছিল, সেটা বোঝা যাবে পুনরুজ্জীবন নামের তার জীবনের শেষ উপন্যাসটার শুরুতে এর শিক্ষাটুকু উদ্ধৃত করা থেকে।

পয়গম্বর ঈসা একদিন বসে আছেন পাহাড়ের ওপর একটা গাছের নিচে। তাকে জ্বালাতন করার জন্য ফরিসীরা এক বেশ্যাকে নিয়ে হাজির। ফরিসীরা তাকে বললেন, ওহে মরিয়মের পুত্র, তুমি না মুসার শরিয়ত কার্যকর করতে চাও! এবার সেই শরিয়ত মোতাবেক এই বেশ্যার বিচার কর।

মুসার শরিয়তে ব্যাভিচারীর শাস্তি পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড।

ঈসা নবী মাথা তুললেন না। মাটিতে আঁকিবুকি করতে থাকলেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর ফরিসীরা আবার তাকে বলল, কি হে, চুপ মেরে আছো যে! বিচার করো! খুব তো আমাদের জ্বালাও, আমরা কেন মুসার শরিয়তের গাফিলতি দেখেও না দেখার ভান করি, এবার তোমার কাছেই আমরা বিচারের ভার ছেড়ে দিলাম। দ্রুত বিচার চাই।

ঈসা মাটি থেকে মুখ না তুলেই বললেন, ঠিক, ওর মৃত্যুদণ্ডই পাওনা। তোমাদের মাঝে যে সবচেয়ে' বেশি নিষ্পাপ, সেই প্রথম পাথরটা ছোড়ো।
ফরিসীরা অনেকক্ষণ নীরব হয়ে বসে থেকে এক একে চলে গেল। সেই বেশ্যানারী একাকী রয়ে গেল পয়গম্বর ঈসার সাথে।

হজরত ঈসা আরও অনেকক্ষণ পর মাথা তুলে তাকে বললেন, ওরা কেউ কি তোমাকে পাথর ছুড়ে মারার মত নিষ্পাপ নিজেকে মনে করেনি?
না, প্রভু।
আমিও তো নিজেকে ততটা যোগ্য মনে করি না।
প্রভু!

...

বুঝতেই পারছেন, দুটো বার্তা আছে গল্পটাতে। একটা বার্তার বিস্তার আছে তলস্তয়ের মহাকাব্যিক উপন্যাসটাতেই: ওহে ক্ষমতাবান, এত আয়োজন করে যাদের বিচার করছো, সেই অপরাধীদের তুমি শাস্তি দেয়ার কতখানি এখ্‌তিয়ার রাখো! তুমি নিজেই কি এদের অপরাধী বানানোয় ভূমিকা রাখোনি?

আরেকটা বার্তা, ফরিশীদের রাগ পয়গম্বরের ওপর, মুসার শরিয়ত না মানার জন্য হযরত ঈসা কেন বিদ্রুপ করতেন মহাজনী কারবারী আর ক্ষমতাবানদের। ঈসা জানিয়ে দিলেন, ধর্মের করুণাটুকু ছুড়ে ফেলে তারা শুধু সমারোহে পালন করছিল অনুষ্ঠানটুকু, আর উদযাপন করছিল শাস্তির আয়োজনগুলো। ঈসা তাই বাইতুল মোকাদ্দাসে ঢুকে সুদী কারবারীদের গদি উলটে ফেলেছিলেন, কারণ তারা সাধারণ মানুষকে লুণ্ঠন করে, মুসা নবীর শরিয়তের এটাই সত্যিকারের লঙ্ঘন। কিন্তু একই সাথে ওই নারীর প্রতি পয়গম্বর ঈসা দেখিয়েছিলেন অগাধ করুণা। এমনি এমনি তাকে শূলবিদ্ধ হতে হয়নি। নিঃসহায়ের প্রতি ভালবাসা আর ক্ষমতাবানের প্রতি বিদ্রুপ, উভয় গুনেই তাকে সহ্য করা মুশকিল ছিল তাদের পক্ষে।

চলছে তো নতুন জাহেলী রাজত্ব।
ঈসা নবীর বাণী মন দিয়ে শুনুন: এই মানবশত্রুদের হাত থেকে সবই কেড়ে নিতে হবে, ফিরিয়ে দিতে হবে সাধারণের হাতে। কেড়ে নিতে হবে তাদের ডাকাতির কারবারের গদি। কাঁটার মুকুট পড়বার ঝুঁকি নিয়েও।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×