(ছবি- গুগুল থেকে)
তোমার নামের আদ্যাক্ষর আমি বয়ে বেড়াই দিনরাত
বুকের ক্যানভাসে;
যেন সেজদা-রত একাগ্র কোনো মুসুল্লি জায়নামাজে।
তোমার নামের আদ্যাক্ষর আমার বুকে দোদুল্যমান
মহামূল্য এক লকেট-
প্রতিবার বিম্বিত দেয়ালে সাঁটানো ইংলিশ দর্পণে
ড্রেসিং টেবিলের কারুময় আয়নায়
অথবা গ্যালারির দেয়ালে ঝোলানো শৈল্পিক কোনো চিত্রকর্ম;
যেন পাশ ফিরে দেখা বিমুগ্ধ প্রেয়সীর চোখে দয়িতের মুখ।
তোমার নামের আদ্যাক্ষর
যেন এতেকাফে বসা মসজিদ-বাসী কোনো প্রবীণ মোমিন
ইহকাল আর পরকালের টানাপোড়েনে কিংকির্তব্যবিমূঢ়;
সময় বহে যায় অক্ষমতার বোরাকে চড়ে
আমলনামার ডান-বাম দ্বিধাদ্বন্দ্বে নির্বাক, নিথর;
যেন গোরস্থানে একাকী গোরখোদক অনিশ্চিত প্রতীক্ষায় মুহ্যমান।
অথবা মধ্যরাতের নিঃসঙ্গ বাতিঘর যেন এক
তোমার নামের আদ্যাক্ষর; আমার বুকের উপত্যকায়
নিদ্রাহীন চোখে দেখে অপার অন্ধকারের
রাতজাগা নফি-এসবাতের ঐশী নুর; কখনো বা
কম্পমান নিদারুণ সুনামির আসন্ন ত্রাসে; যেখানে দিনরাত
ওত পেতে থাকে জমাট বেদনার কান্না ভরা অথৈ সাগর।
তোমার নামের আদ্যাক্ষর
বুকের কাছে সার্টের ফাঁকে কোনো জানালায় যেন সলাজ যুবতী
কৌতূহলে উঁকি দিতে ব্যাকুল বারংবার; নিলাজ-বেহায়া
অপবাদের ভয়ে কখনো সখনো লুকায় আড়ালে;
আর তখনই দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়ে যায় গাত্র দাহ,
তোমাকে তখন প্রবল কামনায় আরো নিবিড় করে পেতে চাই।
তোমার নামের আদ্যাক্ষর
মূল্যবান কাপড়ে লেগে থাকা প্রিয় পারফিউমের সুবাসের মতো
যাতে মিশে থাকে অনেক গোপন স্মৃতি; ন্যাপথালিনের ঘ্রাণ মাখা
জমাট পুরোনো কাপড়ের মিহিন ভালোবাসা; দূর থেকে ভেসে আসা
ভাটিয়ালীর মনকাড়া সুরের আবেশ অথবা দীর্ঘকাল পর সফল সঙ্গমে
রতি-ক্লান্ত বধূর ঠোঁটের ওপর জেগে থাকে যেমন সূক্ষ্ম ঘাম।
আমার বুকে লেপটানো তোমার নামের আদ্যাক্ষর
যেন স্বাধীন বাংলার মুখরিত প্রথম প্রহর; জাজ্বল্যমান শিখা অনির্বাণ;
হৃদয়ে প্রোথিত জাতির জনকের দৃপ্ত কণ্ঠস্বর।
---০০০---
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৭