somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাদের সঙ্গে বিবাহ চিরতরে হারাম তাদের সঙ্গে দেখাশোনা বৈধ

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তোমাদের জন্য (বিবাহ করা) নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের মাতা, কন্যা, বোন, ফুফু, খালা, ভ্রাতৃকন্যা, ভগিনীকন্যা, দুঙ্মাতা, দুগ্ধভগ্নি, শাশুড়ি ও তোমাদের সংগত হওয়া স্ত্রীদের পূর্ব স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত কন্যা, যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে রয়েছে। তবে যদি তাদের সঙ্গে সহবাস না করে থাকো, তাহলে এ বিবাহে তোমাদের কোনো গোনাহ নেই। আরো তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের নিজ পুত্রবধূ ও দুই ভগ্নিকে একত্রে (বিবাহ) করা। (ইসলাম আসার) আগে যা হয়ে গেছে, তা তো অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা : আন নিসা, আয়াত : ২৩)

তাফসির : আলোচ্য পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আয়াতে যাদের সঙ্গে বিবাহ হারাম বা নিষিদ্ধ, এমন নারীদের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। শ্রেষ্ঠতম কোরআন ব্যাখ্যাতা হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) বলেছেন, স্ববংশজাত হওয়ার কারণে সাতজন মহিলাকে বিবাহ করা হারাম করা হয়েছে। আর সাতজনকে হারাম করা হয়েছে বৈবাহিক (বা অন্য) সূত্রে। সুতরাং এখানে সর্বমোট ১৪ জন নারীর বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে, যাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম বা অবৈধ। তারা হলো : মাতা, কন্যা, বোন, ফুফু, খালা, ভ্রাতৃকন্যা, ভগিনীকন্যা, দুঙ্মাতা, দুগ্ধভগ্নি, শাশুড়ি, স্ত্রীর পূর্ব স্বামী কর্তৃক গর্ভজাত কন্যা, পুত্রবধূ, দুই বোনকে একসঙ্গে বিবাহ করা, অন্যের বৈধ স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম।

বংশগত সম্পর্কের কারণে যাদের বিবাহ করা হারাম : প্রথমত, আপন জননীদের বিয়ে করা হারাম। এখানে 'জননীদের' শব্দের ব্যাপকতায় দাদি, নানি সবার ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য। দ্বিতীয়ত, স্বীয় ঔরসজাত কন্যাকে বিয়ে করা হারাম। অনুরূপভাবে পৌত্রী, প্রপৌত্রী, দৌহিত্রী, প্রদৌহিত্রী তাদের সবাইকে বিয়ে করা হারাম। তৃতীয়ত, সহোদরা ভগ্নিকে বিয়ে করা হারাম। এমনইভাবে বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী ভগ্নিকেও বিয়ে করা হারাম।

চতুর্থত, পিতার সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী বোনকে (ফুফুকে) বিয়ে করা হারাম।

পঞ্চমত, আপন জননীর সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী বোনকে (খালা) বিবাহ করা হারাম।

ষষ্ঠত, ভ্রাতুষ্পুত্রীর সঙ্গেও বিয়ে হারাম, আপন হোক, বৈমাত্রীয় হোক।

সপ্তমত, বোনের কন্যা, অর্থাৎ ভাগ্নিকে বিয়ে করা হারাম। চাই সে বোন সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী যেকোনো ধরনের বোনই হোক না কেন, তাদের কন্যাদের বিবাহ করা ভাইয়ের জন্য বৈধ নয়।

স্তন্যপানজনিত কারণে যাদের বিবাহ করা যাবে না : পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে যে দুঙ্মাতা ও দুগ্ধবোনকে বিবাহ করা হারাম। এর বিশদ বিবরণ এই যে দুধপানের নির্দিষ্ট সময়কালে (দুই বছর) কোনো বালক কিংবা বালিকা কোনো স্ত্রীলোকের দুধ পান করলে সে তাদের মা এবং তার স্বামী তাদের পিতা হয়ে যায়। এ ছাড়া সে স্ত্রীলোকের আপন পুত্র-কন্যা তাদের ভাইবোন হয়ে যায়। অনুরূপ সে স্ত্রীলোকের বোন তাদের খালা হয়ে যায় এবং সে স্ত্রীলোকের ভাশুর ও দেবররা তাদের কাকা হয়ে যায়। তার স্বামীর বোনরা শিশুদের ফুফু হয়ে যায়। তাদের সবার সঙ্গে বৈবাহিক অবৈধতা স্থাপিত হয়। বংশগত সম্পর্কের কারণে পরস্পর যেসব বিবাহ হারাম হয়, দুধপানের সম্পর্কের কারণেও সেসব সম্পর্কীয়দের সঙ্গে বিবাহ অবৈধ হয়ে যায়।

বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে যাদের বিবাহ করা অবৈধ : প্রথমত, স্ত্রীদের মাতারা (শাশুড়ি) স্বামীর জন্য হারাম। শব্দের ব্যাপকতায় স্ত্রীদের নানি, দাদি সবার জন্য এ বিধান প্রযোজ্য।

দ্বিতীয়ত, নিজ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহের পর সহবাস করার শর্তে ওই স্ত্রীর অন্য স্বামীর ঔরসজাত কন্যাকে বিবাহ করা হারাম।

তৃতীয়ত, পুত্রবধূকে বিয়ে করা হারাম। পুত্র শব্দের ব্যাপকতার কারণে পৌত্র ও দৌহিত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা যাবে না।

চতুর্থত, দুই বোনকে বিবাহের মাধ্যমে একত্র করা অবৈধ, সহোদর বোন হোক কিংবা বৈমাত্রেয়ী বা বৈপিত্রেয়ী হোক, বংশের দিক থেকে হোক বা দুধের দিক থেকে হোক- এ বিধান সবার জন্য প্রযোজ্য। তবে এক বোনের চূড়ান্ত তালাক ও ইদ্দত পালনের পর কিংবা মৃত্যু হলে অন্য বোনকে বিবাহ করা জায়েজ।
[তাফসিরে মা'আরেফুল কোরআন ও ইবনে কাছির অবলম্বনে]
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×