নাস্তিক এবং আস্তিক দ্বন্দ্বটি বাংলার প্রবাহমান বিবাদগুলোর অন্যতম একটি। দিনদিন এই বিবাদে প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আশংকা প্রকটভাবে বাড়ছে। তাই এই বিবাদ নিরসনে আমাদের সবাইকে ভাবতে হচ্ছে। আর এই ভাবনা থেকে স্বল্প পরিসরে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
লক্ষ করলে দেখবেন, এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির পেছনে আমাদের ধর্ম প্রীতির চাইতে ধর্মভীরুতা এবং প্রগতিশীলতার চাইতে নিজেকে প্রগতিশীল প্রমাণের মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াই বেশি সক্রিয়। তা না হলে আমরা (ধার্মিকরা) ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে এবং প্রগতিশীলরা প্রগতির ধর্ম মেনে শান্তভাবে নিজেদের দায়িত্ব বা করণীয় ঠিক করতাম। এখানে "প্রগতির ধর্ম" বলতে উন্নতির ধারা/নিয়মের কথা বলছি।
আমাদের অনেকেরই ধারনা 'ধর্ম ও প্রগতি' অনেকটা 'তেল ও জল'এর মতো। আমি এই ধারনার বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় না গিয়ে সরাসরি বলবো, ধর্ম ও প্রগতিকে মুখামুখি দাড় না করিয়ে বরং রেললাইনের মতো সমান্তরালে চলতে দেওয়া উচিত। কারণ, বিশ্বাস আর যুক্তির সমন্বয়ই শান্তি। তাছাড়া, সবাইকে বিজ্ঞানী হতে হবে এমন তো কোনো যুক্তি নেই। যেহেতু, ধর্ম স্বতন্ত্রভাবে বিজ্ঞানের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে না। সেহেতু খামখা কেন আমরা তাকে বিজ্ঞানের বিপক্ষে দাড় করাবো? (যারা জেনে বুঝে ধর্মকে বিজ্ঞানে বা বিজ্ঞানকে ধর্মে বিপক্ষে দাড় করাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য ধর্মপ্রীতি, ধর্মভয় বা প্রগতি নয়; ভিন্ন কিছু। আর এই ভিন্ন উদ্দেশ্যটাকে খুঁজে বের করাটাই আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।)
মহান আল্লাহতালা বলেন-
‘আর আমি এতে তাদের উপর অবধারিত করেছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চোখের বিনিময়ে চোখ, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান ও দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং জখমের বিনিময়ে সমপরিমাণ জখম। অতঃপর যে তা ক্ষমা করে দেবে, তার জন্য তা কাফ্ফারা হবে। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তার মাধ্যমে যারা ফয়সালা করবে না, তারাই যালিম।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৪৫}
ধর্ম রক্ষার নামে যারা অমানবিক কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা যে ভুলপথে তা বুঝতে এই আয়াতই যথেষ্ট। একজন মুসলিম হিসেবে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি- ইসলাম কখনো অন্যায়, অবিচার বা অমানবিক কর্মকাণ্ড সাপোর্ট করে না। নবী করিম (সঃ) এর সময়কার সবকটি যুদ্ধের ইতিহাসই তার প্রমাণ। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে জানার এবং বুঝবার তৌফিক দান করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪২