শাহি বা জমিদারি আমলে রাজ্যের আমলা কামলারা চাটুকারিতার মাধ্যমেই নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতেন। তখনকার রাজা বাদশা বা শাসকশ্রেণী চাটুকারদের পছন্দ করতেন, প্রাধান্য দিতেন। জনসাধারণ চাটুকারিতাকে তখন তেমন বাকা চোখে দেখতো না। কেননা, তখনকার সমাজ, সভ্যতা চাটুকারিতাতে অভ্যস্ত ছিলো। সময়ের অগ্রগতিতে মানুষ চাটুকারিতার ফলাফল অনুধাবন করতে শিখেছে। মানুষ এখন চাটুকারিতাকে প্রচণ্ড অপছন্দ করে। ফলাফলঃ 'চাটুকার' শব্দটা পরিণত হয়েছে গালিতে। চাটুকারিতা করতে দেখলেই মানুষ সমালোচনা করে, গালি দেয়। তবুও আমাদের শাসকশ্রেণী এবং আমলাকামলারা এই চাটুকারিতার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না।
আমাদের শাসকশ্রেণী মিথ্যে প্রশংসা শুনতে চান। চাটুকার আমলা কামলারাও শাসকদের চাহিদানুযায়ী ভুয়া প্রশংসা করেন। কেননা তারা(রাস্ট্রের আমলা কামলা) জানেন নিজের অবস্থা ধরে রাখতে হলে বা সুবিধা পেতে হলে চাটুকারিতার কোন বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই চাটুকারিতার প্রাদুর্ভাব মারাত্মক আকারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শাসকদের সম্মানার্থে স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদবৃষ্টিতে রাস্তায় দাড় করিয়ে রাখা ত আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কমন সংস্কৃতি। আজ দেখলাম নতুন আরেক'টি অভূতপূর্ব পদ্ধতি। যোশরের এবিসিডি নামক একটা মাধ্যমিক স্কুলে কয়েকজন স্কুলছাত্রীর মাধ্যমে 'দেবদেবীদের পূঁজা' করার স্টাইলে বিশেষ অঙ্গভঙ্গিমায় মাথা নত করে কতিপয় চোর বাটপারদের ফুলের মালা প্রদর্শন পরিয়ে দেওয়া হলো। (বিশেষ পদ্ধতিতে গণ্যমান্যদের সম্মান প্রদর্শনের ভিডিওচিত্র দেখতে চাইলে ক্লিক করুন-
চাটুকার সরকার - চাটুকার আমলা কামলা - জনগনের ক্ষুদ্রাংশ চাটুকার এবং সুখী। পক্ষান্তরে বেশিরভাগই অসুখী, বঞ্চিত, নিপীড়িত। - এই চেইনে চলছে দেশ।
খুজ নিলে দেখা যাবে উল্লিখিত স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অধিকাংশ শিক্ষকই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে চাটুকারিতার মাধ্যমে চাকুরী পেয়েছে। তাদের টিকে থাকতে হলে বা সামনে এগুতে হলে চাটুকারিতা আবশ্যক।
ছবি: সংগ্রহীত
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৬