somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন জাদুকর এবং আমার একটি ব্যাক্তিগত আফসোস

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ একজন জাদুকরের চলে যাওয়ার দিন। চার বছর আগে আজকের দিনেই তিনি শেষবারের মত মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন, দর্শক শ্রোতা আর পাঠকদের মোহাবিষ্ট রেখেই।
তিনি ছিলেন এমন একজন জাদুকর, যার পেছনে হ্যামিলনের বাঁশি ওয়ালার বাঁশির রহস্যময় সুরের আকর্ষনের মতই মোহগ্রস্থ হয়ে মানুষ ছুটে যেত।

ব্যাক্তিগতভাবে তাকে ঘিরে আমার কিছু আফসোস থাকবে চিরকাল। বরেণ্য ব্যাক্তিত্ব মোস্তফা জামান আব্বাসী যেমন তাকে অনুরোধ করেছিলেন, তার জাদুকরি কলম দিয়ে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জীবনী লেখার। নবীজীর চরিত্র গূণ আর তার কলমের জাদুময়তা মিলে কি অসাধারন একটা মাস্টারপিসই না তৈরী হোত !! বিশেষ করে আজকের এই দুঃসময়ে এই প্রজেক্ট টা হয়তো খুব কাজে দিত !! হয়তো তরুনদের মনের ভেতর অন্যরকম ভাবে একটা নাড়া দিতে পারতেন তিনি !

তিনি রাসূল সাঃ এর জীবনী লেখার কাজ শুরুও করে ছিলেন। কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। হয়তো সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মবিধায়ক আল্লাহ চাননি বলেই।

এর একটা কারন বলে আমার মনে হয়, হূমায়ূন আহমেদ জীবনী লেখার জন্য যে রেফারেন্স ব্যাবহার করছিলেন, তা হোল সীরাতে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সবচে আলোচিত এবং সমালোচিত লেখক - ইবনে ইসহাক। ইবনে ইসহাকের হাদীস এবং সীরাত গ্রন্থ পৃথিবীর অনেক ইসলামিক স্কলারদের কাছে অগ্রহণযোগ্য, কারন তার সনদ বা পরম্পরার দূর্বলতা। ইবনে ইসহাক এমন অনেক ঘটনা এবং হাদীস রাসুল সাঃ এর নামে উল্লেখ করেছেন যার স্বপক্ষে কোন শক্ত প্রমান বা সনদ নেই। যেমন, কাবা ঘরের ভেতর স্থাপিত যীশুর মা মেরীর সুন্দর একটা মূর্তি বা শিল্পকর্ম রাসূল সাঃ ভেঙ্গে ফেলতে নিষেধ করেছিলেন শুধু মাত্র শিল্পগূণের জন্য। যার জীবনের যুদ্ধই ছিল মূর্তিপুজার বিরুদ্ধে; তার নামে এমন একটি ঘটনা একেবারেই অগ্রহনযোগ্য।

এমন আরো অনেক কারনেই ইবনে ইসহাক এবং তার লেখার সঙ্কলনকারী ইবনে হিশামের রেফারেন্স বেশ বিতর্কিত। আর হুমায়ুন আহমেদ হয়তো নিজের অগোচরেই কিম্বা নিজের জানার ভুলের কারনে এই রেফারেন্স ব্যাবহার করেছিলেন, যা হয়ত উলটো বিতর্কই উসকে দিত।

তার এই মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি চাই, তাকে স্মরণ করতে গিয়ে কিম্বা তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এমন কিছু না করা হোক যা তার পরকালের জীবনে বোঝা হয়ে দাড়ায়।

মহান আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন, তাকে জান্নাতবাসী করুন - কোটি কোটি মানুষকে তার লেখনী দিয়ে আনন্দ দেয়ার বিনিময়ে, তার তৈরী করা শব্দ দিয়ে চোখের কোণে অশ্রু এনে দেয়ার বিনিময়ে, ঠোটের কোণে এক চিলতে হাসি এনে দেয়ার বিনিময়ে...


এ ট্রিবিউট টু হুমায়ুন আহমেদ -
স্যার, আমার প্রেমিকার ব্যাপারে আপনার সাথে একটু কথা ছিল...
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×