কাল মিঠুনরা যখন এল তখন আমি বাথরুম থেকে চান করে বেরুচ্ছি। ওই সন্ধ্যে ৮ টার সময় চান করতে দেখে মিঠুন প্রশ্ন করল
- কোথায় গিয়েছিলিস?
- কাটোয়া
- দেখা করতে ? (মজা করে )
- হ্যাঁ (আমিও দ্বিগুণ মজা করে)
- সেই আলিশা সুলতানার সাথে? (সুরোজিত তিনগুন মজা করে)
- হু (আমি কিঞ্চিৎ সিরিয়াস হয়ে, অনেক দিন চেপে রেখেছি এবার মজার ছলেই যদি কথাটা বেরিয়ে যায়, যাক)
- সাবধান, ও মেয়ে থাকলে জ্বলে যাবি (আসলে সুরজিত সদ্য ওর জীবনের প্রথম ব্রেক আপ টা কাটিয়ে উঠেছে, রেশমির সাথে ওর একটা রিলেশন ছিল, এখন আর নেই, রেশমির একশগন্ডা ফলোয়ার ছিল, তাই ফলোয়ার অলা মেয়ে দের থেকে ও দশ হাত দূরে থাকে)
- আর তাছাড়া এতদিন যখন আর প্রেম করিসনি তখন আর মরণ কালে হরি নাম গেয়ে লাভ নেই, একটা মালদার শ্বশুর দেখে বিয়ে করে ফেল কাছে পিঠে কোথাও। (মিঠুন এইরকমই, সব সময় লাভ লোকসানের ধান্দায় আছে)
কি বলব বুঝতে পারলাম না। চুপ করে রইলাম।
-আরে ও তো কিছুই বলছে না, তারমানে কী কী সত্যি সত্যিই গিয়েছিলিস নাকি?সুরোজিত আবার খুচিয়ে বলল।
যাচ্চলে এরা কী পুরো ব্যাপারটা ইয়ার্কি হিসাবে নিল নাকি?
ও নিয়ে আর কথা বাড়ালাম না ওদের কাছে।
বিয়েটা ওদের কাছে একাটা প্রয়োজনীয়তা । মিঠুন বনদীপার সাথে প্রেম করছে আজ তিন বছরের বেশি। এখানে ওর প্রেমটা যতটা না মানসিক কারনে তারচেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজনীয়তার কারনে। প্রথমত, মিঠুন বাংলাদেশ থেকে এসে এখানে আছে, তাই এদেশীয় কারোকে বিয়ে করতে পারলে শিকড় গেঁড়ে বসা সহজ হবে। দ্বিতীয়ত, সামান্য একটা প্রাইমারি স্কুলে মাস্টারি করে এখনকার দিনে ঠিক ঠাক আয়েশে সংসার টানা নাকি সম্ভব নয়, তাই আর এক জন প্রাইমারি ইস্কুলের দিদিমনির মাইনে জুটে গেলে ক্ষতি কী?
এবার সুরজিতের কথা ধরা যাক, ও একটু আদর্শবাদী, রেশমি মুসলমান জেনেও ও রিলেশনে এগিয়েছিল, রেশমির সামনে পিছনে বয়ফ্রেন্ডের(ও অবশ্য দাবি করে শুধু ফ্রেন্ড) ছড়াছড়ি জেনেও ও রেশমির সাথে ছিল, রেশমি ও অবশ্য প্রাইমারি ইস্কুলে চাকরি করে, তবে এই ব্যাপারটা ওকে রেশমির দিকে টেনেছিল কিনা বলতে পারি না, যাইহোক রেশমি সাথে ওর রিলেশন এখন ইতঃ গজ।হিন্দু মুসলমানের প্রেম প্রণয় ওই সিনামতেই লাগে ভালো, বাস্তবে এসে করে দেখ, পিছন ফাটা শুরু হবে।
প্রেম করে বা না করে তাহলে ওরা বোধায় এটাই বুঝেছে যে এই সব প্রেম ফ্রেম সব মোস্ট ফালতু, যে প্রেম খওয়াও যায় না গায়েও মাখা যায় না, সেই প্রেম নামেই প্রেম কাজে নয়। বাস্তবের ভঙ্গা চোরা পথে হাটতে হাটতে ওই মাখো মাখো প্রেম মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। কাজেই ওদের কাছে উপদেশ চেয়ে লাভ নেই। ওরা পত্রপাঠ নাকচ করে দেবে।অবশ্য ওদের মতামতে আমার কিছু আসে যায় না।
আমাকে শুধু ভাবতে হবে আমার মায়ের কথা আর আমার আব্বার কথা।একা ছেলে হয়ে যত সাধ আহ্লাদ সব আমাকে দিয়ে মিটিয়ে নেবে এতে আর আশ্চর্য কী? আমার নিজেকে নিয়ে আমার খুব একটা চাপ নেই। পৃথিবীর 75% সুস্থ মনের মেয়েদের সাথে আমি ঠিক মানিয়ে নিয়ে ভালো ভাবে থাকতে পারব বলে মনে হয়। আর ভালো ভাবে না পারি, খারাপ ভাবে তো পারবইরে ভাই