তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি...
মর্নিং শিফট এ ক্লাস ছিল
স্কুলে যাওয়ার পথে প্রতিদিন একটা ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকতাম...............
রাস্তার একটু দুূরে একটি কাচা ল্যাট্রিন।
আর সেই ল্ল্যাট্রিনের ভেতর থেকে এক লোকের প্রতিদিন একই সরে খুক খুক খুক কাশির আর্তনাদ ...... কাশির সব্দ শুনে ওর চেহারাটা দেখতে ইচ্ছে হত, কিন্তু সে যে সহজে ল্যাট্রিন থেকে বের হওয়ার পাত্র না তা ঠিকই বুঝতাম।
মাঝে মাঝে মনে হত, ওই লোকটা হয়ত কাশতে কাশতে একদিন সেই বাথরুমেই মারা পড়বে। মায়া লাগত খুব।
একদিন সময়ের মারপ্যাঁচে দেখা হয়ে গেল সেই লোকের সাথে, হাতে একটা জ্বলন্ত সিগারেট, জীর্ণশীর্ণ একটা শরীর... চেপে যাওয়া মুখে সাদা কালো খোঁচা খোঁচা দাড়ি... ল্যাট্রিনের দিকে বদনা হাতে রওয়ানা হয়েছে...... ঠিক তার বিপরীতেই অবস্থিত নিজ গ্রিহ হতে...
লোকটা তখনও কাশতে কাশতে বাকা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যেই টান দিয়ে যাচ্ছে সিগারেটে...।
ক্ষণিকের জন্য মনে হল, লোকটা আসলে উম্মাদ। যে সিগারেটের কারনে তার জীবন হুমকিতে, খয়ে যাচ্ছে শরীর একটু একটু করে, সে সিগারেটকেই সে আকড়ে আছে সযত্নে। ভাবখানা এমন, জীবন জাহান্নামে জাক... সিগারেট থাকবেই।
আজ বহুদিন পর এই ঘটনা মনে করার পিছনে একটা কারণ আছে।
প্রায় মাস খানেকের হরতাল অবরোধে দেশ আজ অনেকটা অচল। প্রতিদিন দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা, সাথে শত শত যানবাহন আর পোড়া মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি তো আছেই।
কিন্তু হরতাল অবরোধের এই চাক্ষুষ ক্ষতি আজকের নতুন কিছু নয়, এ ক্ষতির দৈনিক সমীকরণটা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো জেনেছে প্রায় দেড় যুগের ও বেশি আগে থেকে। উপরে পোড়া ক্ষত আর আগুনের লেলিহান শিখা নিয়ে দেশটা যে আজ খুক খুক করে কাশতে কাশতে বাকা হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারো।
আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবখানাও আজ ওই লোকটির মত, দেশ চুলোয় যাক... আমাদের গদি থাকলেই চলবে, আর চলবে গদির জন্য আগুন দেয়া, বোমা মারা সহ সবকিছু...। কিন্তু কেউ একবারের জন্য ও বুঝতে চাইছেনা... এই দেশ টিকে থাকলেই কেবল গদি থাকবে, গদি থাকলেই বিএনপি থাকবে, আওয়ামীলীগ থাকবে, রাজনীতি থাকবে।
হায়রে!!! এই গর্দভ রাজনীতিবিদ গুলা নিয়া আমরা কি করিব????...!!!!