মুশফিক রহিম চমৎকার কোরআন তেলওয়াত করতে পারেন সেটা সবাই জানে। হালে শুভও পরিপূর্ন ইসলামে প্রবেশের চেষ্ট্রা করছেন। রিয়াদ-রাকিবুল-ইমরুলরা আগে থেকে নামাজ পড়তেন। মাঝে মাঝে পড়তেন বাকিরা। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর কছে শোচনীয় পরাজয় এবং কঠোর সমালোচনায় বেকায়দায় পড়া বাংলাদেশ দলের পাশে দাড়ানোর মত কেউ ছিলোনা। হতাশ হয়ে পড়েন সবাই। এরপর চলে আসে সবাই চট্টগ্রাম। অবস্থার পরিবর্তনে মানসিকতার পরিবর্তন হবে সেটাতো হয়নি উল্টো সমালোচনার ঝড় বাড়তে থাকে সাকিবের একটি বক্তব্যের পরে। যাহোক ঠিক এ সময় সাকিবের পাশে দাড়ান তারই মা। মাগুড়া থেকে মা ফোন করে সাকিবকে বলেন যাতে সে অতীতের সব কষ্ট ভুলে গিয়ে আল্লাহর কাছে ভবিষ্যতের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন। মায়ের আদরের সাকিব মায়ের কথা রেখে সেদিন থেকে দলের অন্যদেরকে নিয়ে জামায়াতে নামাজ পড়া শুরু করেন। প্র্যাকটিস থেকে ফিরে হোটেলে প্রায় সবাই একসাথে নামাজ পড়তেন। এভাবে দলের মাঝে একটি ঐক্যের ভাব আসে। মহান প্রভুর সান্নিধ্যে অনেকের মাঝে হতাশার ভাব কাটতে শুরু করে। সাকিব তার অন্যতম। আর বাকিটাতো ইতিহাস। দল শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হারালো। ইমরুল-মুশফিকরা মাঠেই সিজদায় অবনত হয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে যেটা টিভিতে অনেকে দেখেছেন। মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাওয়া সেই ম্যাচটি বাঁচিয়ে তোলার পর ড্রেসিংরুমেও এশার নামাজের পর দু'রাকাত নফল নামাজ আদায় করে পুরো দল। এমন একটা জয়ের পর সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ ক্রিকেটাররা। কারণ তারা সবাই বিশ্বাস করেন, ১৬৯ রানে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর শফিউল আর মাহমুদুল্লাহ মিলে যে ৫৮ রান করলেন তা ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলে অনেক সময়ই হয় না।
জেতার স্বপ্নপূরণতো হয়ে গেছে। তার জন্য শরীরে-মনে ধকল গেছে অনেক। কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ দলের কালকের দিনটা ছিল বিশ্রামের। বিশ্রাম নিয়েছেন তাঁরা, কিন্তু এই সাফল্যের জন্য স্রষ্টাকে ধন্যবাদও যে জানাতে হয়। তাই কাল প্রায় সারাদিনই কাটিয়েছেন নামাজ আর ইবাদতে। ঘুরতে যাওয়ার শিডিউলও বাদ দিয়েছেন এই কারনে।
গতকাল আমরা যখন পেনিনসুলায় যায় তখন সাকিবদের পরিবর্তনের এই রহস্য জানান দলের এক স্টাফ নাম প্রকাশ না করার শর্তে। তবে আমরা তার কথার অনেকটা সত্যতা পায় জোহরের নামাজের সময় সবাইকে একসাথে অন্য মুসুল্লীদের সাথে হোটেলে নামাজ পড়তে দেখে।
আসলে বিপদে পড়লে আমরা যখন কারো কাছে সাহায্য-সহযোগীতা আর আশ্রয় পাইনা ঠিক তখনই আমাদের কাছে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে প্রভুর সান্নিধ্য ধরা দেয়। নামাজ যে কত বড় মেডিটেশন সেটা যারা নামাজ পড়েন কেবল তারাই জানেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৯:০৪