(মেয়েদের জন্য সতর্কতা মূলক পোস্ট) - বর্তমান সময়ে একটা বিষয় মাঝে মাঝেই লক্ষ করি আমি, আর এটা নিয়ে অনেক অগেই কিছু একটা লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু সম্প্রতি একটা অনলাইন পত্রিকার নিউজ পড়ার পরে না লিখে আর পারলাম না। সেটা হলো... কিছু কিছু টিনএজ মেয়েরা খুব সহজে তাদের জীবনটা নষ্ট করতে পারে। সামান্যতম একটা ভুলের কারণে পুরো জীবনটাই নষ্ট হয়ে যায়, এবং এর জন্য নিজের ভাগ্যের দোষ দেয়, কিন্তু নিজের কোন দোষ তাদের চোখে পড়ে না। মেয়েদের সেই কমন ভুলটা হচ্ছে, একটা খারাপ ছেলেকে চিনতে না পারা, অন্ধের মতো তাকে বিশ্বাস করা এবং ভালোবাসা, পরিবারের অমতেই তাকে বিয়ে করা বা তার সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া। আজকে তাই কিছু ভুল ভাংগানোর বৃথা চেষ্টা করবো আমার এই লেখায়...
প্রথমেই বলে নিই, জন্মগত ভাবে মেয়েরা অনেক চালাক হয়। তবে আমি অনেক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছু কিছু মেয়ে অত্যাধিক টাইপের বোকা হয়, যারা নিজের বোকামীর ফল সারাটা জীবনধরে ভোগ করে। আর এই বোকামীটা করে টিনএজ বয়সেই যখন ছেলেদের প্রতি ধীরে ধীরে একটা আকর্ষণ তৈরী হয়। সেই সময় কোন ছেলে যদি তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় তবে তবে সে কোন কিছু না ভেবেই তার প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায়। ছেলেটার সম্পর্কে কোন রকম কিছু না জেনেই মন দেওয়া নেওয়ার কাজটা সেরে ফেলে। এই একটা সিদ্ধান্তই তার জীবনটা নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। কারণ সে আর সেখানথেকে ফিরে আসতে পারে না। সেই ছেলেটা মেয়েটাকে নানা রকম কথা আর স্বপ্ন দেখিয়ে তার মনে একটা যায়গা তৈরীকরে। মেয়েটা ছেলেটাকে ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে শুরু করে, এতোটাই বিশ্বাস করে যে সে তার পরিবারের কাউকেও অতোটা বিশ্বাস কোনদিন করেনি। ছেলেটা তাকে আশ্বাস দিয়ে বলে তোমার বাড়িতে যদি আমাদের সম্পর্ক মেনে না নেয় তবে আমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো। মেয়েটা তার কথা শুনে হাফ ছেড়ে বাঁচে। আর এক পর্যায়ে গিয়ে তারা বাড়ির অমতে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। মাঝে মাঝে তো এমনও ঘটে যে, মেয়েরা তার অবিভাবক দের বাধ্য করে তার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য। এর জন্য অনেক নিচেও তারা নামতে পারে। এবং শেষ পর্যন্ত যেটা ঘটে সবার বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও সেই ছেলেকেই মেয়েটা বিয়ে করে। এই পর্যন্ত পড়লে মনে হতে পারে, এতে দোষের কি? মেয়েটা ছেলেটাকে ভালোবাসে, আবার সেই ছেলেটাও মেয়েটাকে ভালোবাসে। তারা বিয়ে করেছে এতে সমস্যা কোথায়? হ্যা যদি ছেলেটা বিয়ের প্রলভন দেখিয়ে বিয়ে না করতো তাহলে দোষের ছিল।
সমস্যা তো আছেই, আমি আমার এই লেখায় বিয়েটাই ঘটালাম, এবং বিয়ে করার পরেই কি ঘটনাগুলো ঘটে সেটাই দেখবো তবে, ছেলেটা যে মেয়েটাকে বিয়ে করবেই, বিয়ের আগেই তার ইচ্ছা পূরন করে মেয়েটাকে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেবেনা তার কোন গ্যারান্টি কি কেউ দিতে পারবে? এটা নিয়ে অরেকদিন লিখবো। তবে এখন যেটা বলছি সেটা হলো, টিনএজ মেয়ে মানেই আবেগ, আর এই আবেগের তাড়নায় করা ভুলগুলো শুধু সে নিজে ভোগ করে না, তার পরিবারের সবাই সেটা ভোগ করে। আর ছেলেরা তার সুযোগ নেয়। হ্যা... এবার আসি ছেলেদের নিয়ে কিছু বলতে। টিনএজ ছেলেদের নিয়ে বলতে গেলে তো অনেক কথায় বলতে হবে, তবে নিজেও একজন ছেলে তাই লজ্জা হচ্ছে, অল্প করেই বলি... টিনএজ বয়সের ছেলেদের নব্বই ভাগই ভ্যাগাবন্ড। ভ্যাগাবন্ড অর্থটা হয়তো সবাই জানে না। সারাদিন ফালতু আড্ডাবাজি, অহেতুক ঘোরাঘুরি। অযথা সময় নষ্ট করা। সন্ধ্যা কাটে পাড়ার টি-স্টল এ, এক কাপ চা, কয়েকটি সিগারেট আর তুমুল আড্ডাবাজিতে। রাস্তাঘাটে মেয়েদের টিজ করা, আর তাদের ফোন নাম্বার জোগাড় করে ডিস্টার্ব করা তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে একটা। এক কথায় এ সময় পথভ্রষ্ট থাকে তারা আর নিজেদের জেমসবন্ড মনে করে, কিন্তু আসলে তারাই হচ্ছে ভ্যাগাবন্ড। ছেলেদের একটু দেরীকরেই ম্যাচিউরিটি আসে আর তার আগে পর্যন্ত তাদের কুত্তার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো কাজে কর্মে কুকুরকেউ হার মানায় কেউ কেউ। একজন মানুষ তখনই ম্যাচিউড হয় যখন তার চিন্তার পরিপূর্ণতা আসে, বিবেকের পরিপক্কতা আসে। জীবনের সব সিদ্ধান্ত বুদ্ধির সাথে নিতে পারে। ছেলেদের টিনএজ বয়সটা পার হলেই যে ম্যাচিউরিটি আসে সেটা কিন্তু না। ম্যাচিউরিটি আসতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের খানিকটা বেশী সময় লাগে। যেহেতু এই নব্বইভাগ ভ্যাগাবন্ড ছেলেদের সংখ্যা দশভাগ ভালো ছেলের চেয়ে অনেক বেশী তাই মেয়েরা নব্বইভাগ সময়ই ভুল করে এইসব ছেলেদের কাছেই নিজেকে ধরা দেয়। উভয়েরই ম্যাচিউরিটি আসার আগেই বাড়ির অমতে বা জোর করে বিয়ে করে ঘর-সংসার শুরু করে দেয়। আর মনে মনে ভাবে, যাক আমার ভালোবাসা সফল হয়েছে, আমার সব স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, ওকে নিয়ে যা যা স্বপ্ন দেখেছিলাম তা সত্যি হয়েছে। ও আমাকে ঠকায়নি, আমার ভালোবাসার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে। মজা তো সেখান থেকেই শুরু। আর তার পরেই মেয়েরা বুঝতে পারে ভালোবাসার উল্টাপিঠে কি আছে।
ভালোবাসার উল্টাপিঠটা দেখার আগে পর্যন্ত তাদের ভুল ভাংগেনা। এমনকি তার পরেও না। কারণ মেয়েরা একটু বেশীই আবেগ প্রবণ হয়ে থাকে। এটা তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। আমার খারাপ লাগে তখন যখন এরকম ঘটনা কোথাও চোখেপড়ে, যে একটা অল্পবয়সী (১৭-১৮ বছরের) মেয়ে বিয়ের পরে তার স্বামীর কাছে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হয়ে চলেছে এবং এজন্য সে অন্যদের সাহায্য কামনা করছে। কখনওবা আইনের আশ্রয় নিচ্ছে, বা কখনও তার পরিবারের। আর ঘটনার গভীরে যখন যাই তখন দেখতে পাই, যে সেই স্বামীর সাথেই ১ বছর আগে পরিবারের অমতে বা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল। আর বিয়ের আগে তাদের আরো ৪ বছর রিলেশন ছিল। কিন্তু এখন ভালোবাসার আসল রুপটা পদে পদে সে দেখতে পাচ্ছে। আর সেখান থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে কি কোন লাভ আছে? জীবনের যা বারোটা বাজানোর সেটা তো বাজানো সারা! এখন আর ভুলটা ভেংগে কি হবে। নতুন করে জীবনটা শুরু হয়তো করতে পারবে, কিন্তু আগের মতো কি আর হবে? কাঁচটা জোড়া লাগবে ঠিকই কিন্তু দাগটাতো আর মুছবে না।
ঘটনা হচ্ছে কিছু কিছু মেয়েরা এরকম মারাত্বক ভুল করে কি করে যেটাতে তার জীবনের ক্যানভাসটাই চেঞ্জ হয়ে যায়? আর কেনই বা করে? করার পেছনে মোটিভটা কোথায়?
প্রথমেই জানতে হবে? সঠিক জীবন সংগী খোঁজার জন্য মেয়েদের ব্যবহৃত সিস্টেমটা কেমন? এরকম কোন সিস্টেমই আসলে তাদের নেই, যেটার মাধ্যমে কোন মেয়ে একটা ছেলেকে বেছে নেয়। তবে আমি মনে করি, কিছু মেয়ে এমন আছে যারা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ছেলেদের বেছে নেয়। যে ছেলে আগে তাকে প্রোপজ করবে, তাকে সাথে সাথেই হ্যা বলে দেবে অথবা কিছুদিন আগে পিছে ঘোরাবে তার পরে হ্যা বলবে। আর একদল মেয়ে এমন আছে, যে সব ছেলের সেন্স অব হিউমার বা রসাত্ববোধ বেশী সেসব ছেলেদের পছন্দ করে। এরকম কোন ছেলে যদি প্রপোজ করে বসে তবে সেটা এক্সেপ্ট হতে বেশী দেরী লাগবে না। কিছু কিছু মেয়ে এরকমও আছে, উগ্রো মনোভাব সম্পন্ন ছেলেদের পছন্দ করে। সব ক্ষেত্রেই মেয়েদের মাঝে ছেলেদের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট দেখে একটা ভালোলাগা তৈরী হয়, এবং তা থেকেই মেয়েরা কোন কিছু না ভেবেই সেই ছেলের সাথে সম্পর্ক তৈরী করে ফেলে। তার বান্ধবীদের কে দেখিয়ে দেয়, যে দেখ আমিও প্রেম করতে পারি, আমার পিছনেও ছেলেরা ঘোরে। এই অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে একটা মেয়ের তার প্রেমিককে বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে যেতে অনেক চড়ায় উৎরায় পার হতে হয়। কিন্তু শুধুমাত্র মোহে পড়ে কোন যোগ্যতাহীন ছেলেকে যখন বিয়ে করে একটা মেয়ে তখনই ধীরে ধীরে তার চোখের পর্দা উঠতে শুরু করে। এখানে যোগ্যতা বলতে একটা ছেলের এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন বা টাকা ইনকাম করার যোগ্যতা বোঝায়নি, ভালোবাসা পাওয়ার এবং ভালোবাসতে পারার যোগ্যতা বুুঝিয়েছি।
অামি ভালোবাসার অথবা প্রেম করে বিয়ে করার বিপক্ষে কখনই ছিলাম না এবং এখনও নেই। কিন্তু ভালোবেসে বিয়ে করে নির্যাতিত হওয়ার এবং পরবর্তিতে ভুলটা বুঝতে পারার বিপক্ষে। হ্যা, বিয়ের পরে ভুলটা বুঝতে পারলে চলবে না, বিয়ের আগেই সেটা বুঝতে হবে। আর যেসব মেয়েরা আমার মতোই প্রেম করে বিয়ে করার পক্ষে রয়েছে তাদের একটা জিনিস অবশ্যই জানা থাকতে হবে যে, প্রেমের বিয়ে একশটাতে ৯৯ টাই টেকে না অর্থাৎ সংসার ভেঙ্গে যায়। সেটা ১ বছর পরেও হতে পারে আবার দশ বছর পরেও... কিনবা ত্রিশ বছর পরে হলেও...। আর যে এক পার্সেন্ট মেয়েরা বিয়ে করে সুখি হয় তাদের সংখ্যা খুবই কম, এরকম সৌভাগ্যবান যে আপনি হবেন তার সম্ভাবনা এতোটাই কম যে সেটা খালিচোখে দেখা যাবেনা। কিন্তু মেয়েদের আর একটা কমন সমস্যা হলো তাদের লিপস্টিক লাল রং হলে মানাবে না গোলাপি হলে মানাবে এটাতে তারা কোন রিস্ক নিতে পারবে না, বার বার আয়নায় দেখবে... কিন্তু নিজের জীবন নিয়ে খুব সহজেই রিস্ক নিয়ে নেবে। রিস্কটা এরকম যে, তারা মনে করে আমি সেই একপার্সেন্ট এর মধ্যেই থাকবো। যে তার প্রেমিককে বিয়ে করে সারাজীবন সুখের সাগরে সাতার কাটবে। তাদের অবশ্য এতো সহজে ভুল ভাঙানো কারো পক্ষেই সম্ভব না, যতোদিন না উপর থেকে কোন হেদায়েত আসে। তবে মেয়েরা চাইলেই একটু সাবধানতা সব সময়ই অবলম্বন করতে পারে। সেটা হলো কোন ছেলেকে নিজের জীবনের সাথে জড়ানোর আগে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে পারে। আর অন্যতম একটা বিষয় হলো বিয়ের বয়স হওয়ার আগে পর্যন্ত কোনরকম বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহন না করা। একজন জীবন সংগী খুজে নেওয়ার জন্য যতোটা অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেটা একটা টিনএজ মেয়ের মধ্যে কখনই থাকে না। তারপরেও নিজের জীবন নিয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মারাত্বক ভুলের স্বীকার হয় তারা। সেক্ষেত্রে অবিভাবকেরা কখনও চায়না যে তাদের মেয়ের জীবনটা নষ্ট হোক। আর অবিভাবকদের অভিজ্ঞতা একটা টিনএজ মেয়ের থেকে অবশ্যই অনেক বেশী থাকে, কারণ তারা ওই বয়সটা পার করেই এসেছে। তাই, জীবন সংগী খোঁজার জন্য অবিভাবকদের সাহায্য নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। নিজের জীবনটা নিয়ে একটু সতর্ক না হলে পুরো জীবনটাই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এটা নিয়ে কোন ধরণের রিস্ক নেওয়া অবশ্যই বোকামীর একটা কাজ। আর একটি কথা, ছেলেদের চেনা অবশ্যই কঠিন একটা কাজ, কিন্তু অসম্ভব নয়। তাই লাইফ নিয়ে যে কোন ডিসিশন নেওয়ার আগে ভেবে চিন্তে নেওয়াটা জরুরী। নাহলে তার ফলটা সারাজীবন নিজেকেই ভোগ করা লাগবে।
সবশেষে এইরকম বালিকাদের উদ্দেশ্যে একটি কথায় বলা উচিৎ...
“বালিকা তোমার প্রেমের পদ্ম দিওনা এমন জনকে...
যে ফুলে ফুলে উড়ে মধু পান করে অবশেষে ভাঙ্গে মনকে”
ফেসবুকে আমিঃ Káñàk The-Bøss
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৩