somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট পাওয়া যায় নীলক্ষেতে!

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট পাওয়া যায় নীলক্ষেতে!
***************************************************অস্ট্রেলিয়ায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন মো. জাহিদ হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেছেন বলে সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ডবুকে তার নামটিই খুঁজে পায়নি কর্তৃপক্ষ। মো. সোহান ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ইংল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। তিনি ২০০৫ সালে ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে অনার্স পাস করার কথা উল্লেখ করলেও তার নাম নেই রেকর্ডে। তবে তাদের প্রত্যেকের সার্টিফিকেট আছে। সে সার্টিফিকেট আসল নয়, নকল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এসব সার্টিফিকেটের বেশির ভাগই রাজধানীর নীলক্ষেতে প্রস্তুত। এছাড়া গুলিস্তান, বাংলাবাজার এলাকাতেও পাওয়া যায় সার্টিফিকেট। তবে রাজধানীর নীলক্ষেতে পাওয়া যায় সব ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এমনকি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটও পাওয়া যায় এখানে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অনুযায়ী সার্টিফিকেটের দাম নির্ভর করে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নীলক্ষেতে ভুয়া সার্টিফিকেট বাণিজ্য করছেন। কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় এ প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটই তৈরি হয় বেশি। এসব সার্টিফিকেট ভুয়া হলেও অনেক সময় এসব সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরিও করছেন কেউ কেউ। ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়েই একজন শিক্ষার্থী স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছেন নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটিতে। এক কথায় বলতে গেলে নীলক্ষেত তৈরি হয়েছে ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরির কারখানায়। মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযান চালালেও গোপনে চলে ব্যবসা। একজন সার্টিফিকেট ব্যবসায়ী জানান, আমাদের কাছে শিক্ষার্থীরা আসে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট তৈরির জন্য। কাজ নাহলে তো তারা আসতো না। তিনি বলেন, এখন মাঝে মধ্যেই পুলিশ অভিযান চালায়। তাই ব্যবসা করতে হয় অনেক গোপনে। সূত্র জানায়, সার্টিফিকেট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নকল সনদপত্র পাওয়াযায় নীলক্ষেতে। এজন্য দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে রাব্বিনামের এক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় একটি কোম্পানিতে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছিলেন। তিনি ঢাবির ফার্মেসি বিভাগ থেকে ১৯৮৫ সালে স্নাতক পাস করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে সার্টিফিকেটে। তার কাজ সন্তোষজনক না হওয়ায় সন্দেহ জাগে কর্তৃপক্ষের। কোম্পানিটি থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে চিঠি লেখা হয় ঢাবি কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কাগজপত্রে তার নাম পাওয়া যায়নি। তার সার্টিফিকেটটি ভুয়া উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডয়ায় চিঠি লিখেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। কবিরুল ইসলাম সূর্য ঢাবির পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন ভারতে। তিনি ১৯৮৫ সালে দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে অনার্স পাস করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন সার্টিফিকেটে। কিন্তু তার সার্টিফিকেট ইস্যু করেনি ঢাবি কর্তৃপক্ষ। মো. মইনুল হক আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি ১৯৮৩ সালে অনার্স ও ১৯৮৪ সালে মাস্টার্স পাস করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন নিয়োগপত্রে। তদন্ত করে দেখা যায় তার দু’টি সার্টিফিকেটই জাল। মো. ইয়াসিন করিম অস্ট্রেলিয়ার একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। প্রমাণ হিসেবে দেখান তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এমএসসি পাস করেছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে ঢাবি থেকে ওই শিক্ষার্থী পাস করেননি। তিনি যে সার্টিফিকেট ও রোল ব্যবহার করেছেন সবই ভুয়া প্রমাণিত হয়। মো. ফিরজুল আহসান ভুয়া বিএ ও এমএ ডিগ্রি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন নিবন্ধন অধিদপ্তরে। তিনি ১৯৮৫ সালে বিএ এবং ১৯৮৬ সালে এমএ পাস করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ওই নামের কোন শিক্ষার্থীর কাগজপত্র পাওয়া যায়নি ঢাবিতে। ইসরাইল হাওলাদার সিঙ্গাপুর চলে গেছেন ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে। তিনি দীর্ঘদিন সেখানে চাকরিও করেছেন। তার সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে তিনি ১৯৮২ সালে সায়েন্সেস গ্রুপ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। কিন্তু তার সার্টিফিকেটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়।একেএম মহসীন সরকারি জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তার কাগজপত্র ঢাবিতে পাঠালে ভুয়া প্রমাণিত হয়। হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্স থেকে স্বপন কুমার রায় নামের একজনের সার্টিফিকেট পাঠানো হয় ঢাবিতে। তিনি ১৯৮৭ সালে বিজ্ঞান শাখা থেকে পাস করেছেন বলে সার্টিফিকেটে উল্লেখ আছে। তার সার্টিফিকেটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়। শহীদুল রহমান নামের একজন ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করেছিলেন। তার সার্টিফিকেটে লেখা ছিল তিনি ১৯৮৭ সালে ঢাবির বিজ্ঞান শাখা থেকে স্নাতক পাস করেছেন। তবে ঢাবির নথিপত্রে ওই নামে সার্টিফিকেটই ইস্যু করা হয়নি। কৌশলের দিক দিয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে আছেন মো. রেজাউল করিম খান। নিজের কোন সার্টিফিকেট নেই। অন্যের সার্টিফিকেট দিয়েই তিনি সিটি কলেজের পদার্থ বিভাগের প্রধানেরদায়িত্ব পালন করেছেন বেশ কয়েক বছর। অন্যের সার্টিফিকেট দিয়ে ৮ বছর ধরে সিটি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছেন তিনি। সমপ্রতি একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক বলেন, একটিলিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।প্রকৃত রেজাউল করিম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৯৬ সালে অনার্স এবং ১৯৯৭ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিকমিশনে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর প্রকৃত রেজাউল করিমের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে শিক্ষক বনে যান নকল রেজাউল করিম। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুতকরা হয় সিটি কলেজ থেকে। তদন্ত করে দেখা যায় অনেকেই জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন ।
সুত্র :মানবজমিন
অতি সম্প্রতি ৩১ তম বিসিএস-এ প্রশাসন ক্যাডারে ৬২ তম হওয়া কাজী আরিফ বিল্লাহ তার অ্যাপিয়ারড সার্টিফিকেটের আগাম তারিখ দেয়া সংক্রান্ত জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে দন্ডিত হয়েছেন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন তার ক্যাডার পদের সুপারিশ বাতিল করেছে এবং ভবিষ্যতে কমিশন কর্তৃক অনুষ্ঠিতব্য সকল নিয়োগ (ক্যাডার ও নন-ক্যাডার)- এর জন্য তাকে অযোগ্য করা হয়েছে ।
তাই আসুন দুর্নীতিকে না বলি, নিজের উপর বিশ্বাস রাখি।


এ সম্পর্কিত আমার কিছু পোস্ট :
১। দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিতাজ্য (প্রসঙ্গ ৩১-তম BCS )
২। কর্মফল অবশ্যই ভোগ করতে হবে ; আজ নয়তো ►►►► কাল
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:৪৮
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×