somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাউবয়

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১.
সারাদিন খুব খাটুনি গেছে তপন রায়হানের। পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তিনি। তবে আজকের ব্যস্ততা অন্য কারণে। উপজাতি শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান নিয়ে কাজ করে এমন একটি আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে জেলা শহর থেকে প্রায় সত্তর কিলোমিটার দূরে যেতে হয়েছিল। এলাকাটি খুব দূর্গম। উঁচু-নিচু পাহাড় আর রাবার বাগানে পরিবেষ্টিত। খাসিয়া ও মনিপুরী শিশুদের শিক্ষার উপকরণ বিতরণ ও তাদের নিজস্ব বর্ণমালার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের গুরুত্ব বিষয়ক সেমিনার ছিল সারাদিন। সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রীর সাথে দু'জন 'ইউনিসেফ' প্রতিনিধি, তিনজন 'কেয়ার' প্রতিনিধি ছিলেন। সাথে তিনি সহ আরো পাঁচজন বাংলাদেশী, যারা চাইল্ড সাইকোলজি ও শিশু অধিকার নিয়ে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করেন।

একজন ইউনিসেফ প্রতিনিধি তার বক্তৃতায় বলেন, 'শিশুদের দাবি-দাওয়া মেটানো শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয় এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব ব্যাপক। যেসব দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে তারা শিশুদের পেছনে উল্লেখযোগ্য অর্থ ব্যয় করেছে। প্রকৃতপক্ষে, শিশুদের জন্য বিনিয়োগ না করার ফলে যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি, তা শিশুদের অধিকার পূরণ করার ব্যয়ের চেয়েও অনেক অনেক গুণ বেশি। শিশুদের ভোটাধিকার না থাকায় তারা এমন মানুষদের উপর নির্ভর করে যারা তাদের অধিকারকে সম্মান করা, সংরক্ষণ করা ও তা পূরণ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই মানুষগুলো হলেন- সকল পর্যায়ের নেতা, সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর, সরকারি চাকুরিজীবী, জেলা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের ধর্মীয় নেতা, বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সমাজকর্মী, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী ও অন্য অনেকে। শিশুরা তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না। কিন্তু তারা তাদের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিনিধিদের উপর নির্ভর করে। সংসদ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা আইন ও নীতি প্রণয়ন করেন এবং এসব আইন ও নীতিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেয়া এবং তারা যে জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের পক্ষে তদারকি করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া শিশুরা; বিচারক, পুলিশ কর্মকর্তা, শিক্ষক, সমাজকর্মী, ধর্মীয় নেতা, স্বাস্থ্য ও গণমাধ্যম পেশাজীবি এমন ব্যক্তিবর্গের উপর নির্ভর করে যারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ।'

ফেরার পথে কথাগুলো বারবার মনের কোণে উঁকিঝুঁকি দিয়েছে তপন রায়হানের। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশু অধিকার নিশ্চিত করা না হলে একটি দেশ, একটি পৃথিবী ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দেশের উপজাতি শিশুরা সম্ভবত সবচেয়ে বেশি অধিকার বঞ্চিত। খাসিয়া ও মনিপুরী শিশুদের দুর্দশা আর অসহায়ত্ব নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাস হতো না। দেশ-বিদেশে বহুবার শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করলেও দেশের উপজাতি শিশুদের নিয়ে কখনো কাজ করা হয়নি তপন রায়হানের। ভাবতেই অপরাধবোধ জাগলো। আগামী দিনগুলোতে নিজ উদ্যোগে কাজ করবেন বলে মনে মনে অঙ্গীকার করলেন।

সারাদিনের ব্যস্ততায় ইন্টারনেট ঘাটা হয়নি তপন রায়হানের। গুগল, ইউটিউব, হোয়াটসআপ আর ফেইসবুক হলো এ যুগের অক্সিজেন। বিশেষ করে ফেইসবুকের নিউজফিড ফিচারটি তার খুব পছন্দের। ফেইসবুকে পৃথিবীর নামকরা সব সংবাদ মাধ্যম ফলো করেন তপন রায়হান, যাতে এক সাথে বিশ্বটা হাতের মুঠোয় চলে আসে। সুবিধা হলো এক বসাতে অল্প সময়ে দুনিয়ার সব গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পাওয়া যায়। এছাড়া দেশের প্রধান টিভি ও পত্রিকার সংবাদ তো আছেই। আজ বাসায় এসেই তাড়াহুড়ো করে হাত মুখ ধোয়ে ট্যাবে ওয়াইফাই অন করে ফেইসবুকের নটিফিকেশনগুলো দেখে আগ্রহ নিয়ে নিউজফিডে মনযোগ দিলেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের শিরোনাম; বন্ধুকধারী এক সহপাঠীর গুলিতে সান ফ্রান্সিসকোতে ২৯ জন নিহত, আহত আরো শতাধিক। বিবিসির শিরোনাম; জোটের বিমান হামলায় সিরিয়ায় ১৬টি শিশু সহ ৫৩ জনের মৃত্যু (আহত/নিহত শিশুদের ছবি সহ)। আরব নিউজের শিরোনাম; সৌদি আরবে এ বছর ১৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর। ম্যানিলা বুলেটিনের রিপোর্ট; প্রেসিডেন্ট রুদরিগ দূতের্তের ড্রাগ ওয়ারের ক্রসফায়ারে এ পর্যন্ত ২৩ হাজার জনের মৃত্যু। জাপান টুডের শিরোনাম; উত্তর কোরিয়া আমেরিকার মূল ভূখন্ডে আঘাত হানতে সক্ষম তিনটি মিজাইল ক্ষেপনাস্ত্রের সফল পরিক্ষা চালিয়েছে চীন ঘেষা সীমান্ত থেকে। ব্রাজিলের রিও টাইমসের খবর; প্রতিবছর গড়ে ছয় হাজার একর আমাজান জঙ্গল উজাড় হচ্ছে। নাইজেরিয়ার দ্যা পাঞ্চের শিরোনাম; উত্তরাঞ্চলীয় চাঁদ ঘেষা সীমান্তে বোকো হারামের আক্রমণে তিনটি গ্রাম লন্ডভন্ড।ো নিহত ৩৪৫ জন। ২১৪ জন কিশোরী অপহৃত।

মঙ্গল গ্রহের 'দ্যা রেড প্লানেট'-এর শিরোনাম; গত সপ্তাহে 'নাসা' থেকে পাঠানো অন্তত তিনটি স্যাটেলাইট মঙ্গলে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টাকালে জব্দ করা হয়ছে। বিস্তারিত খবরে বলা হয়, এগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর অতি উৎসাহী কিছু আবিষ্কারককে সতর্ক সংকেত পাঠানো হয়েছে। কেবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৃথিবীর আনবিক বোমার কারিগরেরা বেশি বাড়াবাড়ি করে মঙ্গলে বসতি স্থাপন করার চেষ্টা করলে 'এম-আরপি' মিসাইল ছুড়ে সেকেন্ডের মধ্যেই পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। কোন দ্বিতীয় সুযোগ অন্তত, মঙ্গলে নেই।

ঘুমের ঘোরে সংবাদটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল তপন রায়হানের। পৃথিবী ধ্বংস হলে তিনি যেমন থাকবেন না, স্যাটেলাইট প্রকৌশলী, নিরপরাধ শিশুরাও কেউ বাঁচবে না। আতঙ্কে মনের উচ্ছাসটা চুপসে গেলো। যে উৎসাহ নিয়ে ফেইসবুকে ঢুঁকেছিলেন নিমিষে তা ধপ করে নিভে গেল। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেছে। খুণ খারাপি, বোমার আঘাতে শিশুদের মৃত্যু, ক্রস ফায়ার এবং মানুষের ফাঁসি কার্যকরের সংবাদ মেনে নিতে কষ্ট হয় তার। মানুষের বুদ্ধির সাথে বিবেকটা যদি শাণিত হতো তাহলে পৃথিবীটা কিছুটা হলেও মানবিক হতো।

ছোট্ট একটি সংবাদে চোখ আটকে গেল; স্থানীয় একটি পত্রিকার শিরোনাম, 'বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যা।' খবরের বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মোটর সাইকেল পার্কিং নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়; বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু না শেষ হয়নি, মধ্যরাতে এক পক্ষের লোকজন অপর পক্ষের একজনকে বাসার সামনে থেকে ধরে এনে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত নির্জন একটি বাড়িতে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে, পুলিশ সন্দেহভাজনদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

ছবিসহ রিপোর্ট। অনলাইন পত্রিকা হওয়ায় ঘন্টাখানেক আগের ঘটনার সর্বশেষ আপডেট আছে। হঠাৎ ছেলেটির নিথর মুখটির দিকে চোখ পড়তে শক খেলেন তপন রায়হান। ছেলেটিকে তো চেনা চেনা মনে হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে ছবিটি তোলা হয়েছে এজন্য মুখ কিছুটা ঝাঁপসা। 'সমীর রায়' নয়তো? চেহারায় কোথায় যেন একটা মিল আছে! নাহ, পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলেন; সমীর খুন হবে কেন? এমন অমায়িক, দায়িত্ব সচেতন আর আদর্শবান ছেলে খুনি কিংবা খুন হতে পারে না।

দ্রুত ঘটনার আরো বিস্তারিত বিবরণ পড়ে বুঝতে আর বাকি রইল না খুন হওয়া এই ছেলেটি সমীর রায়। তপন রায়হানের খুব পরিচিত। অতি আদরের একজন। বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়তার কোন সম্পর্ক নেই তাতে কী? আত্মার সম্পর্ক হতে এগুলোর বাইরেও ঘনিষ্ঠতা হয়। নিজের অজান্তে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন তপন রায়হান। চেষ্টা করেও চাঁপাকান্নার বাঁধভাঙা আওয়াজ রুখা সম্ভব হয়নি।

'কি হয়েছে তোমার? এভাবে কাঁদছো কেন? কোন দুঃসংবাদ? শরীর খারাপ? কথা বলছো না কেন?'

পাশের রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এসে মিসেস শ্রাবণী সেন এক নাগাড়ে স্বামীকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করলেন। উৎকণ্ঠিত হয়ে অপলক দৃষ্টিতে স্বামী প্রতি চেয়ে রইলেন। বিবাহিত জীবনের গত নয় বছরে এই প্রথম স্বামীকে এভাবে কাঁদতে দেখলেন তিনি। অবাক তো হওয়াই কথা।

'আরে, কিছুই হয়নি। একটি সিনেমার শেষ দৃশ্য দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম।' - চোখ মুছে দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টায় বউকে অভয় দিলেন তপন রায়হান।

শোনো, কাহিনীটা একজন খুনিকে কেন্দ্র করে। ছোটবেলায় একটি দুর্ঘটনার সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফুটপাতেই জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে। একটা সময় অল্পদিনে বড়লোক হওয়ার নেশায় পেশাদার খুনি চক্রের সাথে মিশে। গত এক দশকে অন্তত ৩৩টি খুন করেছে। কাহিনীর শেষ অংশে দেখা যায়, একটি পরিবারের সবাইকে খুন করতে সে বড় অঙ্কের একটি কনট্রাক পায়। রাতের অন্ধকারে পরিবারের ছয়জনকে খুন করে ফেরার সময় একজন মহিলার গলায় একটি শিশুর ছবি সংবলিত ছোট্ট কার্ড দেখতে পায়, সাথে শিশুটার নাম। একই ছবি খুনিটা অনেকদিন থেকে নিজের ওয়ালেটে বহন করছে নিজের মা আর ভাই-বোনদের ফিরে পেতে। কিন্তু পায়নি। ভালো করে মৃত মহিলার কপালের ঠিক মাঝখানে একটি দাগ দেখে আৎকে উঠে। দাগটি তার খুব পরিচিত! সাথে সাথে 'মা' বলে গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে উঠলে তার হার্ট আর চোখ ফেঁটে চৌচির হয়ে যায়। খুনিটার মৃত্যু হয় সাথে সাথেই।


২.
সমীর রায়ের সাথে পরিচয় খুব আগের নয়। আনুমানিক দেড় বছর হবে। একদিন বড় রাস্তার মোড়ে পাড়ার মুদি দোকান থেকে বের হতেই সমীর প্রণাম করে জিজ্ঞেস করেছিল, 'দাদা কেমন আছেন?' শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন তপন রায়হান। ছেলেটিকে আগে কোনদিন দেখেছেন বলে মনে করতে পারলেন না। আর নিজের ছাত্র হলে তো দাদা ডাকার কথা নয়। একটু ভাবনায় পড়লেও সেদিন ভদ্রতার খাতিরে উত্তর দিয়েছিলেন, 'হ্যা, ভাল আছি ভাই, আপনি কেমন আছেন?' অনেকটা এরকম, কাউকে না চিনলেও কখনো কখনো চিনতে পেরেছি বা মানুষটি পরিচিত এমন ভাব দেখাতে হয়। তপন রায়হান সেদিন তাই করেছিলেন।

মুখে হালকা দাঁড়ি, ফর্সা ও গোলগাল চেহারা সমীর রায়ের। বয়স বড়জোর চব্বিশ-পঁচিশ হবে। বেশ হাঁসি-খুশি ও চটপটে। প্রায়ই সন্ধ্যা গলির মুখে দেখা হতো, চোখাচোখি হলে কুশল বিনিময় হতো। প্রথমদিকে এটুকুই। একদিন বিকেলে গলির মোড়ে সিএনজি স্টপেজের উল্টো দিকে একটু আড়ালে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছিল সমীর, হঠাৎ তপন রায়হানের আগমন। লজ্জায় সিগারেট হাত থেকে ফেলে দিয়ে এমন ভাব করছিল যেন এই জন্মে সিগারেটর নাম পর্যন্ত কখনো শুনেনি। ফর্সা মুখটি ফ্যাকাশে হয়ে চুপসে গিয়েছিল। আমতা আমতা করে কুশল বিনিময় করে কোনমতে সামনে থেকে কেটে পড়েছিল। বিষয়টি আড় চোখে লক্ষ্য করলেও কিছুই চোখে পড়েনি এমন ভান করে চলে আসতে হয়েছিল তপন রায়হানকে।

এমন ভদ্র ছেলে এ যুগে আছে? ভাবতে অবাক লাগলো তপন রায়হানের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে তিনি প্রকাশ্যে সিগারেট/গাঞ্জা টানতে ক্যাম্পাসে দেখেছেন। কেউ কেউ তো সরাসরি নিজের ছাত্র। ভাবখানা এমন, তুমি স্যার হও আর পিওন হও বাপু ক্যাম্পাসটা আমাদের। এটা ক্লাসরুম নয়। ২৪ ঘন্টা তোমাকে চিনতে হবে কেন? ক্লাসরুমের বাইরে তুমি ক্যাডা? নিজের বাপের পয়সায় ধূয়া ওড়াই। তাতে তুমি নিষেধ করার কেডা?

'সমীর রায়' নামটি জেনেছিলেন প্রথম পরিচয়ের মাসখানেক পর। একদিন পাড়ার চায়ের দোকানে তপন রায়হান বসে আছেন, হঠাৎ কোথা থেকে এসে সমীর ঢুঁকলো। কিন্তু তপন রায়হানকে দেখে বসতে চায়নি, বিনয়ের সাথে কুশল বিনিময় করে কেটে পড়তে চাইলো। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অনেকটা জোর করে পাশে বসিয়ে আরেক কাপ চায়ের অর্ডার দিলেন তপন রায়হান।

-- অনেক দিনের পরিচয় আমাদের। কিন্তু কুশল বিনিময় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ আলাপচারিতা, তাই না?
চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলছিলেন তপন রায়হান। সাথে যোগ করলেন, একটু সময় নিয়ে ভাব বিনিময় করবো সে সুযোগ পাই না একদম।
-- ঠিকই বলছেন, দাদা।
-- আপনি তো এখনো পড়াশুনা করছেন, নাকি চাকরিজীবী?
-- দাদা, আমি পাস কোর্সে বিএ পাশ করে আর পড়াশুনা করিনি। এখন একটি প্রাইভেট কোম্পানীতি বিক্রয় প্রতিনিধির কাজ করি। আমাকে 'তুমি' সম্বোধন করলে খুশি হবো, দাদা।
-- ভালো, খুশি হলাম জেনে। তুমি তো স্থানীয়, তাই না? পরিবারে আর কে কে আছেন?
-- আমার বাসা এখানেই। বাবা 'প্রবীর রায়' সমাজকর্মী ছিলেন। যুবক বয়সে বাম রাজনীতির প্রতি আগ্রহ থাকলেও '৭১ এর পর কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি সম্পৃক্ততা ছিল না। বাবা মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধ করেছেন ১১ নম্বর সেক্টরে । এখন পরিবারে মা, ছোট দুই ভাই আর আমি। বড় দিদিমণির বিয়ে হয়ে গেছে দু'বছর হলো। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা।
-- তুমি, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান?
-- বাবা ছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। অনেক কষ্ট সহ্য করে ১৯৯৯ সালে তিনি মারা গেছেন। জীবদ্দশায় কখনো সরকার থেকে কোন সুবিধা নেননি। বাবার নিষেধ ছিল কোনদিন তাঁর নাম ভাঙ্গিয়ে রাষ্ট্রের কাছ থেকে যেন কোন বাড়তি সুযোগ-সুবিধা না নেই। বাবা মুক্তিযুদ্ধের কোন সনদ সংগ্রহ করেননি। আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই সনদ সংগ্রহ করতে চাপাচাপি করলেও বাবা রাজী হননি। মৃত্যু পর্যন্ত নীতিতে অটল ছিলেন। আমার একমাত্র কাকা 'অধীর রায়'-কে একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনী বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আজ অবধি তাঁর কোন খবর নেই। কলেজ শিক্ষক কাকার কথা বাবা প্রায়ই বলতেন। বাবার বিশ্বাস ছিল কাকা একদিন ঠিকই ফিরে আসবেন।
-- এমন বাবা-কাকার জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা, তাঁরা আমাদের ঋণী করে গেছেন। পথের দিশা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা দিশা পেয়েও বাঁকা পথে হাঁটছি।
-- বাবা-কাকাদের যৌথ পরিবার ছিল। দাদা ছিলেন অত্র এলাকার জমিদার। পরিবারের নাম, যশ সবই ছিল। একটি দানশীল ও পরোপকারী পরিবার হিসাবে এলাকায় পরিচিতি ছিল তাদের। এই শহরের বিখ্যাত 'হরিসংকর কলেজ' দাদার হাতে গড়া। এখানে যত বাড়ি-ঘর দেখতে পাচ্ছেন তা ৭১ পরবর্তী সময়ে তৈরী। বাবা যুদ্ধ থেকে ফিরে দেখেন বাড়ি-ঘর সব লুট হয়ে গেছে। পরিবারের বাকি সবাই জীবন বাঁচাতে ভারতে চলে গিয়েছিলেন। আদরের একমাত্র ছোট ভাইয়ের কোন খোঁজ খবর নেই, লোক মুখে শুনেছেন হানাদার বাহিনী তাকে আটক করে নিয়ে গিয়েছিল। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পরিবারের বেশিরভাগ সম্পত্তি বেদখল হয়ে যায়। বাবা পঙ্গু হয়ে ফিরেছিলেন। একা একা চলাফেরা করতে পারতেন না। পারিবারিক বিষয়-সম্পত্তি রক্ষা করতে অনেক দৌড়ঝাপ করেও কোন লাভ হয়নি। সরকারের তরফ থেকে কোনদিন কেউ বাবার খোঁজ নিতে আসেনি। এজন্য অভিমানে সব সময় নিজেকে আড়াল করে রাখতেন। বাসা থেকে তেমন একটা বের হতেন না।
-- শুনে খুব কষ্ট পেলাম। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না।
-- যুদ্ধে বাবা সব হারিয়েছেন। এজন্য তাঁর কোন আফসোস নেই। স্বাধীন দেশে মরতে পারবেন এটাই ছিল বাবার তৃপ্তি। তবে ভেতরে ভেতরে আক্ষেপও কম ছিল না। যখন আমাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি শেয়ার করতেন তখন গর্বে তাঁর মুখটি উজ্জল হয়ে উঠতো। তিনি দেশকে ভীষণ ভালবাসতেন। অনেক আশাবাদী ছিলেন দেশকে নিয়ে। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতেন প্রতিনিয়ত।
-- আক্ষেপ? কী এমন অভিমান ছিলো যা মৃত্যু পর্যন্ত বয়ে বেড়িয়েছেন?
-- দাদা, সঠিক বলতে পারবো না। তবে অনেক বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করতেন, দেশকে নিয়ে নিজের কল্পনার ফানুস ওড়াতেন। বাবা দেখতে চেয়েছিলেন সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা থাকবে। কাকা সহ যুদ্ধের সময় যাদেরকে মিলিটারি ধরে নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু পরে আর ফিরে আসেননি তাদেরও একটি তালিকা হবে। যারা দেশান্তরী হয়েছেন তাদের ভিটা মাটি সরকার নিজ দায়িত্বে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেবে এবং তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হবে। কিন্তু এগুলো কোন সরকার করেনি, করবে সে নিশ্চয়তা দিয়ে কেউ উদ্যোগ নেয়নি। একটু থেমে চোখ মুছে সমীর রায় আবার বলতে লাগলো-
-- বাবা প্রায়ই আক্ষেপ করে বলতেন, 'এখন দেশে অনেক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাদের কোন অবদান নেই। আমাদের পাড়ায়ও অনেকে আছে যারা যুদ্ধের সময় লুটপাট করেছে, দখলদারী করেছে, পাকিস্তানিদের হয়ে গোয়েন্দাগিরি করেছে, মানুষ খুন করেছে, পাকিদের কাছে মা-বোনদের জোর করে পাঠিয়ে বেইজ্জত করেছে। অথচ, তাদের কেউ কেউ এখন মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী। আমি এসব ভূয়াদের তালিকায় নিজেকে দেখতে চাই না। এদের গলার জোর এখন আমাদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধুর চেতনা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এদের আখের গুছানোর প্রধান হাতিয়ার। এরা সতর্কতার সাথে নিজেদের পকেট ভরছে আর সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে সুকৌশলে।'

সমীরের চোখ দু'টি পানিতে টলমল করছে। প্রাণপনে চেষ্টা করছে কান্না লুকানোর। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করেন তপন রায়হান। আরো দুই কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে জানতে চাইলেন-
-- চাকরির পাশাপাশি আর কী করা হয়?
-- চা বাগানের শিশুদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে কাজ করি আমি। প্রতি শুক্র ও শনিবার বিকালে দু'ঘন্টা তাদেরকে সময় দেই। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাতা, কলম ও বই নিজের টাকায় কিনি। জানেন দাদা, কাজটি আমায় খুব তৃপ্তি দেয়। যখন খুব হাপিয়ে উঠি তখন বাবার কথাগুলো স্বরণ করি। বাগান শ্রমিকদের যে ভালোবাসা পাই তা অন্য কিছুর বিনিময়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাথেও জড়িত আমি।

তাড়া থাকায় সেদিন কথা আর এগোয়নি। এরপর থেকে নিয়মিত দেখা হতো, আলাপ জমতো। সাথে চা শিঙাড়া পুরি তো আছেই। বাবার না বলা কথাগুলো শেয়ার করতো সমীর। এতে এক ধরণের প্রশান্তি পেত। মনে হতো বাবা তার অব্যক্ত কথাগুলো ছেলের মুখ দিয়ে বলে শান্তির ছোঁয়া পেতে চেষ্টা করছেন। সমীর নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর দেশ নিয়ে অপার সম্ভাবনার কথা বলতো।বাবার মতো দেশকে নিয়ে সেও খুব আশাবাদী ছিল।


৩.
রান্নার কাজ শেষ করে ফিরে স্ত্রী শ্রাবনী সেন হতবাক, স্বামী তখনো গভীর ভাবনায় মুখটা নিচু করে বসে আছেন। রিমোট নিয়ে টিভি ছেড়ে 'বউ শাশুড়ির যুদ্ধ' সিরিয়ালে মনযোগ দিতেই তপন রায়হান তাকে থামালেন।
-- শুনো, শ্রাবনী। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে আরো পড়াশোনা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছুটি মঞ্জুর করলে এ বছরই যেতে চাই। দেরী করা যাবে না। যত তাড়াতাড়ি পারি যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
-- কী বলছো এসব? মাথা ঠিক আছে তোমার? দু'বছর আগেই তো সুইডেন থেকে চাইল্ড সাইকোলজির উপরে পিএইচডি করে আসলে। আবার কিসের পড়াশুনা? সারা জীবন গবেষণা করেই শেষ করে দেবে? ভাবলাম, জাপান থেকে ফিরে আমাকে পর্যাপ্ত সময় দেবে; কিন্তু না, তোমার ব্যস্ততা দিনকে দিন বাড়ছেই। পড়তে পড়তে, পড়াতে পড়াতে তুমি অচিরেই পাগল হবে, বলে রাখলাম।
-- এবার পিএইচডি করবো পূর্ণবয়স্ক মানুষদের সাইকোলজির উপর। মানুষ বড় হয়ে কেন খুনি হয়? কেন বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে হত্যা করে? কেন যুদ্ধ বাঁধায়? কেন মরনাস্ত্র বানায়? কেন অন্যের সম্পদ দখল করে? কেন কোন কিছু না করেই সব কৃতিত্ব নিজের করে নিতে চায় ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো নিয়েই এখন গবেষণার সময় এসেছে।
-- তোমার মতিগতি বুঝা মুশকিল। যখন তখন কঠিন পাগলামী মাথায় উঁকি দেয়। এই বয়সে এগুলো নিয়ে গবেষণা, দুনিয়ায় আর কিছু নেই?
-- পড়াশুনার কোন বয়স নেই। আর এতো বছর ধরে যা পড়েছি এখন মনে হচ্ছে তা ভুল ছিল। সত্যি বলছি ভুল ছিল। চাইল্ড সাইকোলজি না পড়ে চাইল্ডদের মানসিক বিকাশ ঘটানোর দায়িত্ব যাদের কাঁধে তাদের সাইকোলজি নিয়ে আগে গবেষণা করা উচিৎ। একটা অসুস্থ মস্তিষ্ক কখনো একটি শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়ক হতে পারে না। আমি খুনিদের সাইকোলজি বাদ দিয়ে খুন হওয়া মানুষদের সাইকোলজি নিয়ে খামখা পড়াশুনা করেছি। ভুলটি সংশোধন করতে চাই।

শ্রাবনী হা করে স্বামীর মুখের দিকে অপলকে চেয়ে রইলেন; তপন রাহানের মুখটি একদম আমেরিকান হিংস্র কালো ভাল্লুকের মতো লাগছে, আর চোখ দু'টি ঘুটঘুটে অন্ধকারে বসে থাকা কালো বেড়ালের উজ্জ্বল আর তীক্ষ্ণ চোখের দৃষ্টিকেও যেন হার মানায়। স্বামীর এমন অগ্নিমূর্তি চেহারা কখনো দেখা হয়নি তার।

মনে মনে বললেন, 'পাগল-টাগল হয়ে গেল নাকি?'

'যা করার পরে করিও। আগামী কাল কোর্টের তারিখ, মনে আছে তোমার? আমার পাশাপাশি এডভোকেট সালমা সুলতানাও কোর্টে মুভ করবেন। বাবার খুনিদের এবার ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানোর সময়। এতোটা বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে ন্যায় বিচারের আশায়। আমি শতভাগ আশাবাদী। কাল ইউনিভার্সিটি থেকে ছুটি নিয়ে আমার সাথে তুমিও কোর্টে যাবে। মনে থাকে যেন।'



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:১১
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×