somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিং ক্রিং… চিঠি এসেছে.. চিঠি….

২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধলেশ্বরীর বাঁক
২১/১১/২০১৪ইং
প্রিয়তমেষু!
পত্রের শুরুতে আমার আঁচল পূর্ণ আশীষ নিও। জানিনা কেমন আছো, প্রার্থণা করি, আজীবন ভাল থাকো। সব নারী তার নর ভাল থাকুক, এই প্রার্থণাই করে। তারপরও কেন যে সারা জীবন অতিবাহিত করেও বোঝাতে পারেনা, সে কত ভালবাসে তার নরকে। তুমি বুঝবে এমনটা এখন আর আমি আশা করিনা। তবুও কিছু কথা আজ লিখতে বড় বেশি ইচ্ছে করছে। সময় হলে একটু মন দিয়ে চিঠি পড়ে নিও। যদিও আমি জানি যে, তোমার সময় অনেক মুল্যবান। তবু চিঠিটি পড়লে এই হতভাগী তার দায় মুক্ত হবে, তাই এ অনুরোধ করছি।
প্রিয়তম! একদিন আমি তোমার জীবনে এসেছিলাম, কত প্রাণবন্ত আর উদ্যম ছিল প্রাণ। আদম (আঃ) এবং হাওয়া (আঃ) এর মত একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য জীবন নামক অচেনা এক দ্বীপে। তুমিও চেয়েছিলে আমি জানি। আমরা তৈরি করতে চেয়েছিলাম নর-নারীর শশ্বত এক প্রেমের বলয়। হ্যা, বলয়ও তৈরি করতে পেরেছিলাম। তবু ভেঙ্গে গেল কেন বলয়? কারন,কোন জাগতিক মোহ আর স্বার্থ বলয়কে আর বাঁচিয়ে রাখতে পারেনা। তুমি হয়ত বলবে, পৃথিবী এমনই গিভ এ্যান্ড টেক এর নিয়ম মেনে চলে। কিন্তু আমি তো গতানুগতিক কোন কিছু চাইনি, চেয়েছিলাম তুমি আমি আর ব্যতিক্রম কিছু। আমি তোমাকে আমার চেতনা বোঝাতে চেয়েছিলাম। সবাই যখন কি পেল আর কি পেলনা তার হিসাব মেলাবে রোজ। আমরা তখন মানুষের জন্য কিছু একটা ভাল কাজ করব। বেলা শেষে সুর্যাস্তের রক্তিম আলোয় নিজেদের স্বপ্ন পূরণ হবে । নতুন ভোরের আলোয় নতুন বিশ্ব দেখার
প্রত্যাশায় জেগে উঠব কাকভোরে। কত্ত মজা হবে। না হয়নি, কষ্টে অর্জনের সে বলয় ভেঙ্গে গেছে এতটা পাষান না হলেও পারতে, সব ভেঙ্গে চুরমার করে চলে না গেলেও পারতে। একজন প্রেয়সীর এর থেকে খুব বেশি চাওয়ার কিছু নেই। অবশ্য আমি সেই সব প্রেয়সীর কথা বলছি, যারা যাকে তাকে যখন তখন তার ভালবাসার নীল পদ্মগুলি দিয়ে বেড়ায়না। সে প্রেয়সীর কথা বলছি, যে প্রেয়সীকে মানুষ তার সৌভাগ্য গুণে পায়। এই কথার মানে এটাও নয় যে, আমি তোমাকে পিছু ডাকছি। আমি বিশ্বাস করি, “যে যাবে সে যাবেই চলে, আসবে কে সে সময়ই বলে।”
প্রিয়নর! তোমাকে কোন ছোট চিন্তুা স্পর্শ করুক এ আমি চাইনি। তুমি হবে বিশাল চিন্তার, মনের, কর্ম এর মানুষ। তুমি আমার হাত ধরে অসীমের শূণ্যতায় পাড়ি দিতে সাহস করবে। আমরা আমাদের উপর আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করব এই দুনিয়ার জীবনে, আখিরাতেও একসাথে থাকব এমনটাই ভেবেছিলাম । মানুষ এ পৃথিবীতে বেশি খাওয়া, বেশি পরা, বেশি ভোগের জন্য আসেনি। এসেছে অনেক বড় দায়িত্ব নিয়ে। পৃথিবীতে একা একা বেশি খেয়ে, পরে কেউ ভাল নেই। অল্প কিছুকে ভাগাভাগি করে নেওয়ার মধ্যেই মানুষের আনন্দ লুকানো থাকে। এর থেকে বেশি কিছু লাগেনা সুখী হতে। জানোতো, স্বার্থপরতা আর হীনমন্যতায় ভোগে তারাই যারা আনন্দহীন আর অসুখী মানুষ । আর তাই সব প্র্রেয়সীর মতো আমিও তোমাকে কোন অসুখী নয় সুখী করতে চেয়েছিলাম।
প্রিয় প্রেয়ান! তুমি আমার আলো আধারী ছায়াখানি দেখে দূরে চলে গেলে। শীতের সকালের নরম রোদেলা মন তুমি চিনলেনা। আমি তোমার মতো করে নিজেকে সাজালে তুমি হয়তো খুব খুশি হতে, কিন্তু জীবন এর মানে পাল্টে এর অন্য মানে হতো। লোকেরা সাধারণত বিয়ের পরে মেয়েদের জীবনকে পুতুলের জীবন মনে করে। কিন্তু এটাতো ঠিক না। একজন নারী তো পুরুষের মতোই মানুষ, পুরুষের জীবনের মতো তারও জীবনের প্রবাহ রয়েছে। তারও আছে স্বপ্ন দেখার আর তা বাস্তবায়নের অধিকার। নারী শুধু পরিশ্রম করে অন্যদের জীবনের প্রবাহকে বাঁচিয়ে রাখবে, তার জীবনকে তুচ্ছ করে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। তুমি অন্তত তোমার প্রেয়সীকে সহযোগীতা করতে পারতে। আমার প্রত্যাশাতো এতোটুকুই ছিল, তুমি তা ভাল করে জানো। পৃথিবীর সব মায়াবতী প্রেয়সী তার প্রেয়ানকে মায়া করে, আগলে রাখে, ভালবাসে। এটা তার দূর্বলতা নয়, পবিত্র শক্তি। একে অবজ্ঞা করা খুব অন্যায়। মানুষ বেশি টাকার লোভ করে, প্রেয়সী করে নিঃস্বার্থ ভালবাসা পাওয়ার লোভ। যা সে খুব কম সময়ই পায়। অথচ পাওয়াটাই তার অধিকার আর প্রাপ্য মূল্যায়ন হতে পারত। লোকেরা জানেনা একজন নারী তার হৃদয় নিঃসৃত ভালবাসার বিনিময়ে পায় কন্টকময় পথ। আর নিরব আর্তচিৎকারে আঁধার রাত্রি মৃত্যুপুরী হয় রোজ। নাহ! কেউ জানেনা। আমি জানি এ চিঠি পড়ে তুমি এমন কিছু করবেনা, যা আমি তোমার কাছে প্রত্যাশা করি। সবাই শুধু মুখোশ এঁটে থাকে। আমি মুখোশ ছাড়া তোমাকে একটু দেখাতে চাই পৃথিবীকে কালের স্বাক্ষী করে। আর সবাইকে বলতে চাই, যদি কখনও কিছু চাও তবে চাইবে, সৃষ্টিকর্তার কাছে, মানুষ দিতে পারেনা কিছু। মানুষ ফিরিয়ে দেয়। সৃষ্টিকর্তা ফিরিয়ে দেন না।
প্রিয়তম! ভাল থেকো। আমি ছাড়া যেমন ভাল তোমার থাকতে ভাল লাগে।
ইতি-
তারাবতী
এক টুকরো মানবী
১৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×