ট্রেন তার গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছে।
একজন লোক উনার আসনে বসলেন।
উনার সামনের সীটে এসে বসলেন আরেকজন।
প্রথম জন ২য় জনকে বললেন, ভাই আমার নাম কামরান।
২য় জন এবার হাত বাড়িয়ে বললেন, ভাই পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো। আমার নাম সালমান।
তা ভাই, আমি ঢাকা যাবো। আপনি?
আমিও ঢাকা যাবো ভাই।
ঢাকায় কোথায় থাকেন?
মোহাম্মদপুরে ভাই।
আরে ভাই, আমিও তো ঢাকা মোহাম্মদপুরে থাকি।
মোহাম্মদপুর কোথায়?
বাবর রোডের ওপর।
আরে ভাই ,আমিও তো থাকি বাবর রোডের ওপর।
বাবর রোডের কোথায়?
নূর মসজিদের পাশের পাঁচতলা বিল্ডিং এ।
কী বলেন, ভাই। আমিও তো ঐ মসজিদের পাশের পাঁচতলা বিল্ডিং এ থাকি।
তা আপনি কয় তলায় থাকেন ভাই?
আমিতো ভাই চার তলায় থাকি। আপনি?
আরে কী বলেন ভাই? আমিও তো চার তলায় থাকি।
সত্যি বলছেন ভাই? চার তলার কয় নাম্বার ফ্লাটে থাকেন?
আমার ফ্লাটতো ভাই ৪ক।
কী বলেন ভাই, আমিও তো ৪ক তেই থাকি। কী আশ্চর্য্য। আমরা দেখি একই রুমে থাকি।
এই ভদ্রলোক দুজনের এতক্ষণের আলাপ পাশের সীট থেকে খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন আরেকজন।তিনি এবার রেগে গিয়ে বলেন- এই মিয়ারা ফাজলামি করেন? দুজন শুধু একই জায়গায় না, একই রুমেই থাকেন। অথচ কেউ কাউকে চিনেন না। নাটকেরতো একটা সীমা থাকা দরকার।
রাগান্বিত ভদ্রলোকের কথা শুনে, দুজনের একজন বললেন- নারে ভাই। আসলেই দুজন দুজনেই চিনি। করার কিছুই নাইতো। তাই গপ সপ করে, খাজুইরা আলাপ করে টাইম পাস করছি। আর এটাকে ফাজলামি আর নাটক বলছেন ভাই। হাহাহাহাহা।
দেশের কত তাজা তাজা অপহরণ নাটক প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে, নাটকের কি আর শেষ আছে ভাই। অপহরণ নাটক, দরবেশবাবা নাটক, তিস্তার পানি নাটক, ভোটের নাটক,হেফাজতি হুজুরের ৩২ কোটি টাকা রেলওয়ে জমি বন্দোবস্তের নাটক, পদ্মা নাটক, শেয়ার নাটক, সোনালী ব্যাংক নাটক, কালো বিড়াল নাটক , দেশের হাজারো সমস্যা পাশ কাটিয়ে কে প্রথম কে ২য় ইত্যাদি বালখিল্য নাটক, নিজের পবিত্র জন্মভূমির কর্তৃত্ব নিয়ে অন্যদেশের রাক্ষস নেতার ফাজলামি নাটক। এগুলোর তুলনায় এসবতো কিছুই না ভাই।
তবে আসল কথা কি জানেন,
আমরা নাটক, ফাজলামি করলেও এই ট্রেণ কিন্তু গন্তব্যে ঠিকই পৌঁছাবে। কারণ ট্রেনচালক কোনো নটামি আর ফাজলামি করছেননা। সময় নষ্ট করে কোনো খাজুরে আলাপও করছেন না। , তবে দেশের চালকরা যদি মনে যা আসে তাই মুখ দিয়ে বের করে দেন ।ভাঁড়ামি, নটামি আর ফাজলামি করেন তবেই সমস্যা। তখন রাষ্ট্র নামক এ ট্রেন ৪৩ বছরে কেন তিন হাজার ৪৩ বছরেও হয়তোবা কোনো গন্তব্যে পৌঁছাবেনা।