somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনটি রাজদরবারি রূপকথা

০৯ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গল্প ১ঃ
স্লামালেকুম স্যার
আরে আসমা যে এসো এসো ( স্যারের নযর আসমার সংগীনির উপর আটকে......)
স্যার কেমন আছেন?
এজ ইউজু্য়াল ফিট এন্ড ফ্রেশ, তা তোমার পাশেরজনকে তো চিনলাম না
স্যার ও আমাদের ভার্সিটিতেই পড়ে, নতূন এসেছে ফার্স্ট ইয়ার,পাবলিক এ্যাড
বাহ চমৎকার, হোয়াটস ইউর নেম ইয়ং লেডি?
অধরা
নাইস নেম, কোথায় থাকো?
স্যার ও এখনো হলে সিট পায়নি, দেশের বাড়ীর এক পরিচিত আপুর রুমে ডাবলিং করছে।বেচারী পড়েছে মহা বিপদে।একেতো ঢাকায় কোনো রিলেটিভস্‌ নেই তার উপর এখনো কোনো টিউশনি পায়নি।আমার সাথে ডাইনিং এ পরিচয়।বললাম আপনার কথা,স্যার নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।এক্কেবারে সাথে করেই নি্য়ে আসলাম।
খুব ভালো করেছ,
( দৃষ্টি তার.......বরাবর নিবদ্ধ
''নিগাহে সিনেসে উঠকার যায়ে কাহা
হোঁয়াতো কুদরত কি দৌলত কি গাড্ডি হ্যায়''

দৃষ্টি বক্ষ বিনে যাবে কোথা
কুদরতী ধণভান্ডার আছে যেথা
)
ডোন্ট অরি অধরা তোমাকে একটা ফ্লাট এর ব্যবস্থা করে দেব দু'একদিনের মধ্যেই।তোমার সেলফোন আছে?
স্যারের শ্যেন দৃষ্টিতে বিব্রত লাজুক কন্ঠে, না স্যার
নো প্রবলেম, আসমা, দেখতো আমার পিসি ডেস্ক এ কয়েকটা নতূন সেট আছে।সিমেন্স সি৮ টা ওকে দিয়ে দাও।আমার কথা বলে হাওলাদারের(বিশ্বস্ত ডান হাত,সম্ভাব্য ভবিষ্যত এম পি এবং আরো অনেক কিছু) কাছ থেকে একটা নতূন সিম নিয়ে যেও
(দেশে সদ্য গ্রামীঁণের আগমন, সুলভ সিম যুগের সূচনা, জয়তূ গ্রামীণ)
কাল বিকালে আমার বারিধারার ফ্লাটে পার্টি মিটিং আছে,দেরী করোনা,ওকেও নিয়ে এসো
নতূন সেট হাতে বিস্ময়ে হতবাক অধরার কেনো যেনো মনে হয়েছিলো সেদিন শেষ কথাটা বলার সময় স্যার আসমার দিকে চেয়ে চোখ টিপেছিলেন.........আর আসমাও মাথা নেড়ে কিছু একটা ইশারা করেছিল।

মধূতে চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে স্মৃতিচারণ শেষে অধরার কনক্লডিং রিমার্কস্‌ ''তয় যাই কস দোস্ত, চাচায় কইলাম সুপার হ্যান্ডসাম,ভেরি মেন্‌লি''
বুকে সূক্ষ জ্বালা অনুভব করলাম, কোথাও হাহাকারও করে উঠেছিলো বৈকি



গল্প ২্‌ঃ
স্লামালেকুম নেত্রী
কি রে, তগো খবর কি আকাইম্যা কুইরার দল?
মাথা চুলকে কাচুমাচু হয়ে, ভালোনা নেত্রী, হেরা আমগো ক্যাম্পাসে ঢুকবার দেয়না, ডিবি হারাক্ষন সিভিলে হলের সামনে পাহারা দেয়,পুলাপান সব হল ছাইরা গেছেগা,লগেরটিও বেশীদিন থাকবো বইল্লা মনে হয়না
ক্যান?
নেতারা সব চামেচিকনে আছে,ফোন দিলে ধরেনা,বাড়িত গেলে ক্য় নাই,যাগরেও পাই টেকা চাইলে দেয়না,এমনে কি আর হল চালান যায়?আর কতো উপাশ থাকুম?হুনতাছি দু'একদিনের ভিতরে রেই্‌ড্‌ দিব,উত্তর পাড়ার হলডি যহন তহন এ্যাটাক করবার পারে,হল মনে অয় ধইরা রাখবার পারুমনা বেশিদিন
ছাগলের মতন কতা কবিনা,মেনা মেনা কতা আমার সামনে কইছনা,কিছু কইরা আইয়া কবি নেত্রী করছি,ক্যা ডেইলি রাইতে ফুটাইবার পারসনা?আগুন দে,আগুন জ্বালাইয়া দে,ভার্সিটিরবাসে বোম মার,বহিরাগত টোকাইডি কৈ?সবডিরে খবর দে,আমার কথা ক,ক্যাম্পাস বন্ধ কইরা দে,টেকা লাগলে টেকা ল,কিছু কইরা আইয়া হের পরে চেহারা দেহাবি,তার আগেনা,যা অহন
(মাথায় হাত বুলিয়ে অশ্রু সজল কন্ঠে, সাবধানে থাকিস,তরা ছাড়া আমার আর কেডা আছে ক,বাকিডি সব বেইমানের দল.......ম্যাজিক টাচ্‌ ইনডিড........নেত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করে শহীদ হবার বাসনায় প্রস্থান)

বলতে বলতে দু'চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো বন্ধুর,জেলগেটে দেখা করতে এসে তাকে শান্তনা দেবার ভাষা খুজে পেলামনা।



গল্প ৩ঃ
গুড ইভিনিং নেত্রী
হুম,এতদিন কোথায় ছিলে (রাগত কন্ঠে)?
ঘাড় চুলকে,বাড়িতে ছিলাম,মায়ের অসুখ
হুংকার দিয়ে, মিথ্যে বলোনা,আমি তোমাদের সব খবরই রাখি,তোমরা পুরো বল্টু গ্রুপই বিট্রে করেছো,তোমরা সরকারি দলের ছেলেদের সাথে লিঁয়াজো করে চলো,ভিতরের সব খবর ফাঁস করে দাও,তোমাদের সবকটাকে আমার চেনা আছে,আমি যখন জেলে ছিলাম তখনো তোমরা বিট্রে করেছিলে,শুধুমাত্র তোমাদের ভাইয়ার অনুরোধে তোমাদের কমিটিতে রেখেছি,অথচ পল্টুর ছেলেদের কমিটিতে রাখলে আজকে পার্টির এ অবস্থা হতোনা।(একনাগারে এতক্ষন কথা বলে তিনি কিছুটা হাঁপিয়ে গেলেন)
আসলে কি করবো নেত্রী,কেউ কোনো ডিশিসান দিতে পারছেনা,নেতারা সব ভিতরে,যারা বাইরে তারাও ধরি মাছ না ছুঁই পানি,আপনার সাথে দেখা করতে চাইলেও অমুকদের(নেত্রীর ছায়াবলয়)জন্যে পারিনা,এদিকে সমাবেশে অমুকদের(ভিন্ন আরেকটি সংগঠন)মাতব্বরি কেউ পছন্দ করছেনা।আপনিই বলুন এখন আমরা কি করবো?
ভাইয়ার সাথে এই নাম্বারে যোগাযোগ করো।সে যা নির্দেশ দেয় ঠিক সেভাবে কাজ করো।যা যা দরকার সময় মতন পেয়ে যাবে।আমি আর কোনো অজুহাত শূনতে চাইনা।যাও,অল দ্য বেস্ট।মনে রেখো আমাদের নেতা সারাটা জীবন দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন,দেশকে ভালোবেসেছেন,দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন।আজ দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা কেউই বসে থাকতে পারিনা,স্বৈরাচারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।ভালো থেকো, সাবধানে থেকো।
(আবারো সেই ম্যাজিক টাচ্‌ এবং শহীদি বাসনায় প্রস্থান)

তারপর দীর্ঘ সময় দেশে অন্ধকার অস্থিরতা অনিশ্চয়তা
আবারো জেলগেটে একি দৃশ্যের পুনঃমঞ্চায়ন,অশ্রু আর নির্বাক শান্তনা

এ কোনো নানী-দাদীর মুখে শুনা ঘুমপাড়ানিয়া রূপকথা নয়,
তিন বন্ধুর(ছাত্রনেতা/নেত্রী) মুখে শুনা গপ্পোও হতে পারে আবার চাপাও হতে পারে(সে সম্ভাবনাই বেশী, নেতা নেত্রীর কথার উপর পুরো ভরসা নেই বাপু)।
তবে যদি সত্যি হয়!!! কি সাংঘাতিক!!! শিউরে উঠার মতন নয় কি?
যাই হোক মতামত কিংবা গালগপ্পের জন্য আমার ঐ তিন বন্ধুই দায়ী।আর উল্লেখিত নাম সব অবশ্যই কাল্পনিক।

নটে গাছটি মুড়লো
আমার কথা ফুরলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৭
১৮টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×