somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব হোটেলে হাত দিয়ে খাই- হোক সেটা সোনারগাঁও, হোক সেটা চাঁনখারপুল

১৪ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দামী রেস্টুরেন্টগুলোতে খেতে গিয়ে বুঝেছি শুধু টেবিলে বসে গেলেই খাওয়া হয়ে যায় না। ডাইনিং টেবিলের কিছু নিয়ম আছে সেগুলো প্র্যাকটিস করা উচিত; হোক তা দেশে অথবা বিদেশে। সেরকম কিছু ভদ্রতার তালিকা দেয়ার চেষ্টা করলাম...


বসুম ক্যাম্নে?
আপনি যদি হোস্ট হোন তবে টেবিলে বসবার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে অন্য সবাই নিজেদের আসন গ্রহণ করেছেন। আয়োজনটা ঘরোয়া হলে সবার সুবিধার্থে আপনি চেয়ারও এগিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু ব্যবসায় মিটিং হলে তা করার দরকার নেই। প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বেই চেয়ার গ্রহণ করবেন।

চেয়ারে বসার পর নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার মোবাইল, চাবির রিং, ওয়ালেট, বা হ্যাণ্ডব্যাগ এর কোন কিছুই টেবিলের উপরে রাখা নেই। মোবাইল ফোন অবশ্যিই বন্ধ করে রাখুন, নতুবা সাইলেন্ট। খাবার টেবিলে অনেকের সাথে বসে ফোনে কথা বলার অর্থই হচ্ছে আপনি আপনার সামনে বসা লোকগুলোর চাইতে ফোনের লোকদের গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। সুতরাং হ্যাঁ-একটু পরই কল দিচ্ছি...বা আমি এখন ব্যস্ত, কথা বলতে পারছি না...এরকম ছোট্ট কথোপকথনও বর্জনীয়।

চেষ্টা করুন এক টেবিলে আসন গ্রহণ করা সবার সাথেই আই কণ্টাক্ট রাখতে। শুধু পাশের জনের সাথে আলাপে মশগুল হয়ে যাবেন না। আড্ডার নিয়ন্ত্রণ না নিতে পারুন, অন্তত সবার কথাই মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন।

সবার ব্যাপার জানি না; কিন্তু আমি কিন্তু প্রথম কয়েকবার ন্যাপকিন নিয়ে বড় বিপদে পড়েছিলাম। এত বড় ন্যাপকিন কোথায় রাখবো? এটা দিয়ে কী-ই বা করবো? সুতরাং এ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলি...চেয়ারে বসার সাথে সাথেই ন্যাপকিনটা ভাঁজ করে কোলের উপর রাখতে হবে। একটা ব্যাপার এখানে মনে রাখতে হবে যে ডাইনিং এ যে ন্যাপকিনটা দেয়া হয় তার প্রধান ব্যবহার ঠোঁটে বা মুখের কোণে জমে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কার করতে, অন্য কোন কাজে নয়। সুতরাং সে-ই ন্যাপকিন দিয়ে কেউ প্লেট,চামচ বা ছুরি মুছবেন না, চেয়ার ঝাড়ার চেষ্টা করবেন না।






চামচ আর ছুরি-কোনটা দিয়ে কী করি?
আমরা সোজা বাঙাল। হাত দিয়ে মনের সুখে ডাল-ভাত খেয়ে অভ্যস্ত। চামচ দিয়ে খেয়ে আমাদের পেট ভরে ঠিকই-কিন্তু ক্ষুধা মেটে না। সাধারণ নিয়ম হচ্ছে স্যুপ স্পুন ধরতে হবে ডানহাতে। ফর্ক ধরতে হবে বামহাতে আর ছুরি ডান হাতে। বামহাতে ছুরি দিয়ে খাবার চেপে ধরে ডানহাতে খাবার কেটে ছুরিটা রেখে দিতে হবে প্লেটের উপর। এরপর বামহাতে কাটা খাবার আস্তে আস্তে মুখে দিতে হবে। যা কাটা হয়েছিল তা শেষ হয়ে গেলে আবার ডানহাতে ছুরি উঠবে, বাম হাতে চামচ তো আছেই।

Silent Service Code:
আয়েশ করে খেতে বসেছেন, সামনে বিরাট আয়োজন। কিন্তু খাবার মাঝামাঝি এসেই আপনার ডাক পড়লো প্রাকৃতিক প্রয়োজনে। কাজ সারতে গেলেন, ফিরে এসে দেখলেন ওয়েটার আপনার টেবিল ইতোমধ্যে পরিষ্কার করে বসে আছে। মেজাজটা স্বভাবতই খিঁচড়ে যাবার কথা। অথবা খাবার শেষ করে বসে আছেন, ওয়েটারের নাগাল পাচ্ছেন না যে বলবেন এই ব্যাটা টেবিল পরিষ্কার কর। এই দুই ঝামেলা এড়াতেই এই সাইলেন্ট সার্ভিস কোড।

চিৎকার চেঁচামেঁচি না করে খুব সহজভাবে আপনি ওয়েটারকে জানিয়ে দিতে পারেন যে তাকে আপনার প্রয়োজন। যদি কোন প্রয়োজনে আপনার খাবার মাঝখানে কোথাও যাবার প্রয়োজন হয় ছুরির ধারালো দিকটা প্লেটের দিকে এবং ফর্কটা উল্টিয়ে ছুরি আর চামচ ৩০ ডিগ্রী কোণে আপনার ডানপাশে প্লেটের উপর রাখুন। আপনি না থাকলেও ওয়েটার বুঝতে পারবে আপনার খাওয়া এখনো শেষ হয় নি; আর যদি একই ভাবে রেখে আপনি চুপচাপ অপেক্ষা করতে থাকুন তখন ওয়েটার বুঝে নেবে যে আপনার কিছু প্রয়োজন, সে স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই এগিয়ে আসবে।

আবার যদি আপনি ফর্কটা সোজা করে ছুরির সাথে সমান্তরালে আপনার ডানদিকে প্লেটের উপর রাখেন (প্লেটটাকে একটা ঘড়ি মনে করলে ১০.২০ বাজলে ঘড়ির কাটা যেমন থাকে সেরকম কোণ করে) ওয়েটার বুঝে নেবে আপনার খাওয়া শেষ, সে টেবিল পরিষ্কারে এগিয়ে আসবে।


আজকে আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। আরও কিছু আরেকদিন কমু নে...খাওয়ার কথা কইতে কইতে ক্ষিদা লেগে গেছে
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১১ ভোর ৪:৩৫
৩২টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×