ইত্যাদিতে একটি কৌতুক দেখেছিলাম অনেকদিন আগে। কৌতুকটি ছিল এমন, "এক রোগী একদিন ডাক্তারের নিকট গেলে ডাক্তার তাকে জিজ্ঞেস করল কি সমস্যা?? সমস্ত শরীরে ব্যাথা বলে রোগী তার শাহাদাৎ আঙ্গুল দিয়ে দেহের অনেক জায়গায় টিপ দিয়ে বলছে ইস!! কি ব্যাথা!! এই দেখেন স্যার এখানেও কি ব্যাথা!!। ডাক্তার চিন্তায় পড়ে গেল কারন লোকটি যেখানে টিপ দেয় সেখানেই ব্যাথা। অনেক পরে ডাক্তার বুঝতে পারল যে তার ব্যাথা আসলে সমস্ত শরীরে নয়, সে যে আঙ্গুলটি দিয়ে টিপ দিচ্ছে সেই আঙ্গটিতেই ব্যাথা।"
আরও একটি গল্প বলি, "একদিন এক ব্যক্তি যেখানে যায় সেখানেই মানুষের মলের গন্ধ পায়, সেটা যত পরিষ্কারই হোক না কেন? বাড়িতে নিজের রূমে, টিভিতে কোন অনুষ্ঠানে, বাজারে, রাস্তায় এমনকি তার গাড়িতেও। এখন সে খুব চিন্তায় পড়ে গেল এমন হওয়ার কারন কি?? তখন সেই ব্যক্তি একটি প্রোগ্রামে গিয়ে তার সমস্যার কথাটি একজনকে জানালো। ২য় ব্যক্তি অনেক চিন্তা করে দেখল যেখানে কেউ এমন গন্ধ পায়না সেখানে ১ম ব্যক্তিটি পাওয়ার কারন কি?? ২য় ব্যক্তিটি তখন ভালো করে ১ম ব্যক্তিটির মুখের দিকে তাকালে দেখতে পেল তার নাকের মধ্যে একটু লেগে আছে। তখন ১ম ব্যক্তিটি আসল কারন বুঝতে পেল। তার মনে পড়ে গেল যে মল ত্যাগের কাজ সেরে ভালভাবে হাত না পরিষ্কার করে নাকে হাত দিয়েছিল।"
অর্থাৎ নিজের নাকে মল লাগার বিষয়টি গোপন থাকার কারনে সকল পরিষ্কার জায়গায় সে মলের উপস্থিতি টের পায়।।
আপনারা ভাবছেন কি কারনে এমন গল্প বললাম??
এর কারন হল আমি যখন থেকে রাজনীতি একটু একটু বুঝতে শিখি এবং শাহরিয়ার কবির, ড. আনোয়ার হোসেন এবং ড. জাফর ইকবালদেরকে চিনতে পেরেছি তখন থেকে একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখলাম যে তারা বিশেষ করে শাহরিয়ার কবিরের মত লোকের একটা মুদ্রা দোষ হয়ে দাড়িয়েছে যে দেশে রাতের অন্ধকারে অথবা লোকচক্ষুর আড়ালে অথবা প্রমাণ ছাড়া কোন অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলেই সেখানে জামায়াত-শিবির জড়িত আছে বলে তার মনে হয়। এখন সেটা জামায়াত -শিবির এর ক্ষমতার আওতার বাহিরে হোক অথবা ভিতরে।
এই যে সেদিন তিনি সময় টিভির টকশোতে বলল অভিজিতের বাবাকে তিনি নাকি বলেছেন মুক্তমনা ব্লক সরকার বন্ধ করতে যাবে কেন এটা জামায়াত-শিবির করেছে।
ক্লিক করুন
এছাড়াও থাবা বাবা/রাজিব মরার সময়েও তারা বলেছে এটা জামায়াত শিবিরের কাজ কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে এল অন্যকিছু। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শফিউল ইসলাম হত্যা হল তদন্তের পূর্বে সবজান্তার মত বলে ফেললেন এটা জামায়াত-শিবিরের কাজ অথচ তদন্তে কি হল যুবদলের নেতার বউরে হেনস্তা করায় প্রতিশোধ নিতে মেরে ফেলা হয়েছে।
এবারও অভিজিৎ মারা গেল যে রাতে সে রাতেই শিক্ষক আনোয়ার হোসেন কি বললেন এটা জামায়াত-শিবির জঙ্গীদের কাজ। এমন আরো অনেক ঘটনা আছে যা হাতে নাতে ধরা পড়ার কারনে জামায়াত-শিবির বলে প্রচার হতো তদন্তে বেরিয়ে আসত অন্য কিছু।
আমার বিশ্বাস যদি মিল্কি হত্যার সিসি ফুটেজ না থাকতো, নজরুলদের অপহরনে কেউ না দেখত অথবা ফেনী হত্যাকান্ডের কোন ফুটেজ না থাকতো তাহলে এগুলোও শাহরিয়ারদের ভাষায় জামায়াত-শিবিররাই দায়ি হতো।
আমি দেখেছি যে কোন টকশোতে যেকোন বিষয়ে আলোচনার সময় যদি শাহরিয়ার কবিরকে অতিথি করা হয় সেখানে সে জামায়াত-শিবিরকে জড়াবেই।
"এ ঘটনার সাথে জামায়াত-শিবির দায়ি" কথাটা যেন তার একটা মুখস্ত বুলি হয়ে দাড়িয়েছে। আমার বিশ্বাস দেশের যে কোন সমস্যা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করুন দেখবেন তিনি একথাই বলবে। তাকে যদি প্রশ্ন করা হয় দেশে এত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারন কি তাতেও মুরগী কবির এ কথাই বলবে।
তিনি কথায় কথায় বলেন যারা জামায়াত-শিবির করে তারা রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, দেশদ্রোহী, সন্ত্রাসী ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে তার এসব বলার কারন হচ্ছে যে, নিজেই একজন রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ছিল এবং বর্তমানে দেশের অনেক অস্বাভাবিক ঘটনার একজন উস্কানীদাতা তা থেকে বাঁচার জন্যই এই পদ্ধতি।
অর্থাৎ তিনি ভাবেন যত বেশি জামায়াত-শিবির বিরোধী কথা বলা যাবে তত বেশী দেশ প্রেমীক প্রমানিত হবে, মানুষ ভুলে যাবে তার কু-কর্মের কাহিনী।
কোন তথ্য-প্রমান ও তদন্ত ছাড়াই তাদের এমন মন্তব্যের কারনেই কিন্তু মূল আসামীরা সব সময় ছাড়া পেয়ে যায়। আসলে তারা চায় না যে অপরাধীরা শাস্তি পাক। তাদের আসল উদ্দেশ্য হল দেশে যত ইসলামী শক্তি আছে তারা ধ্বংস হোক আর অপরাধীরা দেশে অবাধ বিচরন করুক।।
বাঙ্গালীতো আর ততো বোকা না!!!!
মোদ্দা কথা হচ্ছে এই শাহরিয়ার কবিররা হচ্ছে ব্যাথা যুক্ত আঙ্গুল অথবা দূর্গন্ধযুক্ত ময়লার মতো। এরা দেশে জনগণরে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। ভাইয়ে ভাইয়ে আজ দন্দ্ব লাগিয়ে দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত এসব অন্ধ একচোখা ব্যক্তিগণ কোন তদন্ত ছাড়াই ঢালাওভাবে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে ততদিন পর্যন্ত সমাজ বা দেশের মানুষদের এই বিভক্তি কমবে বলে আমার মনে হয় না!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫