কথাটা শুনতে ভাল শোনায়, কিন্তু বাস্তব তার উল্টা। সকল ব্লগ মূলত ভাই ভাই নয়। দুঃখজনক ভাবে ব্লগীয় উম্মাহ নামে কোন বৃত্তের অস্তিত্বও নেই, যার বাউন্ডারির ভেতরে 'সব ব্লগই সমান' স্লোগান নিয়ে ব্লগেরা বেঁচে থাকবে।
ব্লগের ভেতর খুব স্পষ্টভাবেই জাতপাত বিদ্যমান। ভাল ব্লগ বা খারাপ ব্লগ বলছি না। লেখার মানের উপর নির্ভর করে যে বিভাজন, সেটা হবেই, ভালো মানুষ বা খারাপ মানুষের মতন। আমি বলছি উঁচু জাতের ব্লগ, আর নীচু জাতের ব্লগের কথা, আশরাফ আর আতরাফ ব্লগ।
বাংলাদেশী ব্লগারদের কথা যদি ধরি, তাহলে সবচেয়ে উঁচু জাতের ব্লগার হলেন তারা যারা ইংলিশে ব্লগান। আন্তর্জাতিকতার বিবেচনা করলে অবশ্য ঠিকই আছে, সবচেয়ে বেশি ব্লগারদের কাছে পৌঁছবার জন্যে ইংলিশই ভালো। সুতরাং ইংরেজি ব্লগারদের জাত উঁচু হয়ে যাওয়াটায় কারো কোন হাত নেই। বাংলা ব্লগাররা তাই দূর থেকে ঈর্ষান্বিত চোখে তাদের দিকে তাকানো ছাড়া বেশি কিছু করতে পারবেন না।
জাত-পাত আছে বাংলা ব্লগগুলোর মধ্যেও।
এ ক্ষেত্রে উঁচু জাত হচ্ছে- যারা খানিকটা গম্ভীর বিষয়ে লিখেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি - এইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে। অপেক্ষাকৃত মাঝারি জাতে পড়েন টেকনিক্যাল বিষয়ে ব্লগিং করেন যারা, মানে ভাইটিদের যারা আইটি শেখানোর অপচেষ্টা চালান। আর একেবারে নীচু জাতে পড়েন সেইসব ব্লগাররা, যারা ওয়েবলগ লিখেন। বুঝাতে পারলাম? মানে কি খাইলাম কি করলাম, অথবা আজকের আকাশ কেবলই কর্দমাক্ত, এই সব হাবিজাবি মনের কথা লিখেন যারা।
কবিতা বা গল্প লেখকরা আদৌ কোন জাতে পড়েন কি না, সেই বিষয়ে আমার বিস্তর সন্দেহ আছে!
এই জাত্যাভিমান চিরস্থায়ী কি না সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ, তবে উত্তর আপাতত 'হ্যা'। আমাদের সামাজিক মানসিকতাটুকু আমরা পকেটে লুকিয়ে ব্লগে আসি না, তাই এখানেও সেই একই রকম দৃষ্টিভঙ্গী আসাটাই 'স্বাভাবিক'।
এই জাত-বিজাতের ভাল মন্দ বলেও সুস্পষ্ট কোন আউটপুট আসলে নেই। এটা কেবলই আমাদের মনে হওয়া, উঁচু জাতের ব্লগাররা এইসব ভেবে মানসিক আনন্দ লাভ করতে পারেন, আর নীচু জাতের ব্লগাররা এটা টের পেয়ে 'কী আসে যায়' টাইপ একটা ভাব মেরে সময় কাটিয়ে দিতে পারেন।
কারো লাভ বা ক্ষতি বৃদ্ধি তাতে হচ্ছে বলে মনে হয় না।
সুতরাং বহু প্রাচীণ কাল পূর্বে কবি যদিও বলেছিলেন, নহে আশরাফ আছে শুধু যার বংশ পরিচয়, বেচারা কবি জানতেন না, মানবসমাজ তো বটেই, এমনকি ব্লগসমাজেও তার এই কবিতা খুব বেশি পাত্তা পাবে না। জাত-পাতের ব্যবধান সেখানেও সগর্বে রয়ে যাবে!
------------
ডিসক্লেইমারঃ
১। এতক্ষণ যা কিছু হাবি জাবি বললাম, বলাই বাহুল্য এটা আমার মনের কথা নয়। সম্প্রতি ব্লগ বিষয়ক নানা জ্ঞানী ব্যক্তিদের আলোচনা-সমালোচনা পড়ে আমার এইরূপ ধারণা হলো, তাই মনে হলো এই বিষয়ে ভুল-ভাল বকে পোষ্টের সংখ্যা আরো একটা বাড়াই।
২। এই পোষ্টের নামের জন্যে চোর-এর প্রোফাইলের কাছে শতভাগ ঋণী, তার কাছে তাই অসীম কৃতজ্ঞতা!
আলোচিত ব্লগ
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন